খুলনা | রবিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৬ পৌষ ১৪৩২

দুর্বৃত্তায়ন-মবের প্রমাণ পায়নি পুলিশ

মধ্যরাতে বিএনপি নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৭ এ.এম | ২১ ডিসেম্বর ২০২৫


ল²ীপুর সদরে এক বিএনপি নেতার ঘরে তালা লাগিয়ে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ঘুমন্ত অবস্থায় তার এক শিশু কন্যার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই বিএনপি নেতার নাম বেলাল হোসেন। তিনি ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপি’র সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। মৃত শিশু কন্যার নাম আয়েশা বেগম (৭)। এছাড়া বেলালসহ তার দুই মেয়ে স্মৃতি আক্তার (১৭) ও বিথি আক্তার (১৪) দগ্ধ হয়। বেলাল সদর হাসপাতালে এবং তার দুই মেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। 
এদিকে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের বসতঘরে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দুর্বৃত্তায়ন ও মবের অস্তিত্বের বিষয়ে কোনো বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষ্য-প্রমাণ পায়নি পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের মাধ্যমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। স্বাক্ষর ছাড়াই পুলিশের এই কর্মকর্তা মিডিয়া সেলে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেন। 
সেখানে উল্লেখ করা হয়, আগুনের ঘটনায় বেলাল বা তার পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে কিছু ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয় যে, কতিপয় দুর্বৃত্ত সংঘবদ্ধ হয়ে মব সৃষ্টি করে ঘরের দরজায় তালা দিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাস্থলে কোনো দুর্বৃত্তকারী কিংবা কোনো মবের অস্তিত্বের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাও আগুনের উৎস বা আগুন লাগা বা লাগানোর কারণ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে কোনো তথ্য দিতে পারেন নাই। 
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এতে বলা হয়, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার কোনো সাংবাদিকের কাছে এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য বা সাক্ষ্য-প্রমাণ থাকলে থানা পুলিশের কাছে সরবরাহ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। বর্তমানে আগুন লাগা বা লাগানোর বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে কোনো দুর্বৃত্ত কর্তৃক ঘরের দরজায় তালা দিয়ে আগুন লাগানোর তথ্যাদি পাওয়া গেলে উক্ত বিষয়ে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিস্তারিত জানানো হবে।
ঘটনার বিষয়ে বেলাল হোসেনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কে বা কারা সামনের দরজায় তালা দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে। 
বেলালের মা প্রত্যক্ষদর্শী হাজেরা বেগমের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, হাজেরা অন্য একটি ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। তখন হঠাৎ করে কিছু একটা ফেটে যাওয়ার শব্দ শুনে বের হয়ে দেখেন বেলালের থাকার ঘর আগুন লেগে পুড়ছে। পরে উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় তার নাতনি স্মৃতি আক্তার ও বিথি আক্তারকে উদ্ধার করতে পারলেও ছোট নাতনি আয়েশা আক্তারকে উদ্ধার করতে পারেনি। তবে সেখানে তিনি কোনো দুর্বৃত্তকারী কিংবা মব সৃষ্টিকারী কারো উপস্থিতি বা পালিয়ে যেতে দেখেননি। বেলালের ভাতিজা প্রত্যক্ষদর্শী মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুও একই বক্তব্য দেন। 
ল²ীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনের অফিসার রণজিত কুমার সাহা বলেন, আমাদের কমলনগর উপজেলা ইউনিট আগুন নিভিয়েছেন। দরজায় তালা ও পেট্রোল লাগিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। তবে আমরা এখনো নিশ্চিত নয়। ঘটনাটি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, ঘটনাটি তদন্ত চলছে। এখনো মামলা হয়নি। অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আরও তিনজন অগ্নিদগ্ধ হন। তবে আগুনের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এটি কি পরিকল্পিত, নাকি নাশকতা, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে বা আগুন লেগেছে তা উদ্ঘাটনে আমরা কাজ করছি।

্রিন্ট

আরও সংবদ