খুলনা | রবিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৭ পৌষ ১৪৩২

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে আগুন দেওয়া ব্যক্তিদের কিছু শনাক্ত : ধর্ম উপদেষ্টা

খবর প্রতিবেদন |
০৩:২৯ পি.এম | ২১ ডিসেম্বর ২০২৫


দৈনিক প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারে যারা আগুন দিয়েছে তাদের কিছু ছবি-পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ময়মনসিংহ জেলার ভালুকায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী একজন পোশাক শ্রমিককে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ তুলে দলবদ্ধ হয়ে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমি ধর্ম উপদেষ্টা হিসেবে এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি এবং এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়, গর্হিত কাজ। আমরা কোনোক্রমে আইন হাতে নিতে দেব না। আইন হাতে নেওয়াটা একটা রাষ্ট্রের সুষ্ঠু পরিচালনার ক্ষেত্রে বড়ো বাধা এবং আমি আজ সকালেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে একটা মেসেজ পাঠিয়েছি এবং অ্যাডভাইজার গ্রুপেও কপি দিয়েছি যে, আমরা মব জাস্টিস অ্যালাউ করবো ন। যে বা যারা এই মানুষটাকে পিটিয়ে মেরেছে এবং আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে তাদেরকে অভিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছি।

আপনি মব জাস্টিসের কথা বলছিলেন। ১৫ মাসেও আপনারা এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি? এরই মধ্যে দুটি পত্রিকা প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে স্যার।আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে দুঃখ প্রকাশ করতে দেখেছি। তাহলে মবটা আসলে কোথায় বন্ধ- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। কথা হচ্ছে যে, সব স্থাপনায় আগেভাগে পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করা এটা তো একটা কঠিন কাজ। কখন কোন দিকে হামলা হয় এটা অনেক সময় আমরা জানতে পারি না। এজন্য আমরা সবসময় এটাকে নিরুৎসাহিত করি।

উপদেষ্টা বলেন, প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারে যারা আগুন দিয়েছে আমি গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকে জানতে পেরেছি, তাদের কিছু ছবি, তাদের কিছু পরিচয় আমরা এরইমধ্যে শনাক্ত করেছি। তাদেরকেও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা ব্যবস্থা করেছি।

ছায়ানটে হামলা হয়েছে। শিবিরের কেউ কেউ বলেছে যে এই ধরনের প্রতিষ্ঠান থাকা উচিত না। তারা একটু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল। এই ধরনের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মেসেজগুলো আসে, আপনারা সত্যি কন্ট্রোল করতে পারছেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, কে কি বলল সেটা তো আমাদের এখতিয়ার নয়। তবে কথা হচ্ছে যে, আমরা যেহেতু সরকারে আছি, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান চলমান, সরকার অনুমোদিত এরকম কোনো প্রতিষ্ঠানে কেউ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেবে অথবা মানুষ পুড়ে হত্যা করবে, এটা কোনোদিন আমাদের কাছে কাম্য নয়। আমরা এটাকে অন্যায়, গর্হিত কাজ বলে বিবেচনা করি এবং এদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা এখন সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে। কিছু ঘটনা যে ঘটছে না এমন নয়, তবে আমরা যতটুকু এই পর্যন্ত এসেছি আমরা আশাবাদী নির্বাচন যথাসময়ে হবে সুষ্ঠু অবাধ ইনক্লুসিভ এবং স্বতঃস্ফূর্ততার মাধ্যমে আমরা নির্বাচন করতে পারবো। এই পরিবেশ এখনো বহাল আছে।

প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানটসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে একই রাতে হামলা। এখানে কি গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল কিনা-এ প্রশ্নের জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এটা গোয়েন্দা ব্যর্থতা সরাসরি এভাবে আমার বলাটা উচিত নয়।

যেহেতু আপনি উপদেষ্টা পরিষদে আছেন এবং জিনিসগুলো আলোচনা করছেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। তাছাড়া একসঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠানে হামলা হবে, এটা আগেভাগে তো জানা মুশকিল। যেমন কালকে আমার কাছে একটা রিপোর্ট আসলো গোয়েন্দা থেকে কাজী নজরুল ইসলামের মাজারের পাশে যখন হাদিকে দাফন করা হবে পাশে চারুকলা ইনস্টিটিউট আছে। আমরা মুহূর্তের মধ্যে জানিয়ে দিয়েছি গোয়েন্দাদেরকে রিপোর্ট আছে। আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে ওখানে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি।

একই সময় যে ঘটনাগুলো ঘটলো। খুব অল্প সময় না। ময়মনসিংহে যে ঘটনা ঘটল সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে। তাকে মারলো তাকে পোড়ালো এবং তাকে পেটালো প্রকাশ্যে। ছায়ানটে হলো, প্রথম আলোতে হলো ও ডেইলি স্টারে হলো। সাধারণ মানুষের ধারণা সরকারের মদদে আসলে ঘটছে। কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোথায় থাকে, কেন এই সময় আসতে পারে না। আপনি কি বলবেন? জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকারতো স্থিতিশীলতা চায়। এখন যদি মব বারে বারে হয় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যদি অবনতি ঘটে, এটা নিঃসন্দেহে গভর্নমেন্টের ব্যর্থতা বলে চিহ্নিত হবে। গভর্নমেন্ট করতে যাবে কেন? গর্ভমেন্ট তো প্রিভেন্ট করতে চায়। গর্ভমেন্ট আইনশৃঙ্খলাকে উন্নত করতে চায় এবং নির্বাচনের যে পরিবেশটা আছে এটা যাতে আরো সুষ্ঠু হয়। গর্ভমেন্ট তো এ ব্যাপারে সক্রিয়। সরকারি মদতে হবে এ কথাটা তো সঠিক নয়।

বিদেশ থেকেও উস্কানি দেওয়া হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, এখন বাইরে থেকে যদি কেউ কোনো মন্তব্য করে এটা তো বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। এটা তো মেটা (ফেসবুক) এবং ইউটিউব কর্তৃপক্ষ আছে। এটা তো সরাসরি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। বাংলাদেশের গভর্নমেন্টের উপর নেই। এখন ওপেন প্লাটফর্ম। মনে করেন বাংলাদেশ থেকেও তো অনেক আমারে প্রতিদিন গালি দেয়।

্রিন্ট

আরও সংবদ