খুলনা | বুধবার | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৯ পৌষ ১৪৩২

বাংলাদেশ ইস্যুতে সতর্কতা

১৯৭১ সালের যুদ্ধে অংশ নেয়া ভারতীয় সেনা ব্যাটালিয়নকে ত্রিপুরায় মোতায়েন

খবর প্রতিবেদন |
০১:৩৮ এ.এম | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫


বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ঘিরে উদ্বেগের মধ্যেই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যে মোতায়েন করা হয়েছে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে অংশ নেয়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ব্যাটালিয়নকে। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা একথা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তার বক্তব্যে সীমান্ত পরিস্থিতি, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং বাংলাদেশে সা¤প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ভারতের উদ্বেগের নানা দিক উঠে এসেছে।
সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস বলছে, বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অংশ নেয়া একটি সেনা ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিজেপির লিগ্যাল সেলের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সা¤প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং তার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে মাঠপর্যায়ের বাস্তব চিত্র নিয়মিতভাবে দিলি­তে পাঠানো হচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি জানান, যে ব্যাটালিয়নটি একাত্তরের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল এবং মুক্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল, সেটিই এখন ত্রিপুরায় অবস্থান করছে।
১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মাউন্টেন ডিভিশনগুলো বিশেষ করে ২০তম মাউন্টেন ডিভিশন এবং ৮ম, ৬ষ্ঠ ও ৪র্থ মাউন্টেন ডিভিশনের বিভিন্ন ইউনিট — তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে তথা বর্তমান বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
মানিক সাহা বলেন, অনেকেই বলছেন আন্তর্জাতিক সীমান্তে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি নেই। কিন্তু আধুনিক যুগে যুদ্ধের জন্য সরাসরি শারীরিক উপস্থিতি সব সময় প্রয়োজন হয় না। ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, একটি ক্লিকের মাধ্যমেই শত্র“কে ধ্বংস করা সম্ভব, যা সা¤প্রতিক সময়ে দেখা গেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে অস্থিরতা উসকে দেয়ার পেছনে পাকিস্তানের ভূমিকা রয়েছে।
মানিক সাহার দাবি, শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করার পর বাংলাদেশে মৌলবাদীরা সক্রিয় হয়ে উঠবে- এটা প্রত্যাশিতই ছিল। তার ভাষ্য অনুযায়ী, হাজার হাজার মৌলবাদী, অপরাধী ও চোর বাংলাদেশি কারাগার থেকে বেরিয়ে আসে। তিনি আরও বলেন, মুহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়াও ভারতের উত্থানের বিরোধী শক্তিগুলোর একটি পূর্বপরিকল্পিত পদক্ষেপ।
শেষে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশ নিরাপদ হাতে রয়েছে, এতে তারা সন্তুষ্ট।
এদিকে বাংলাদেশে সা¤প্রতিক রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সতর্কতা জোরদার করেছে ভারত। এরই অংশ হিসেবে ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় সরেজমিন নিরাপত্তা প্রস্তুতি পর্যালোচনা করেছেন ভারতীয় সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র শীর্ষ কর্মকর্তারা। গত শুক্রবার ভারতীয় সেনাবাহিনী, আসাম রাইফেলস ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ত্রিপুরার দক্ষিণ জেলার আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় সরেজমিন নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন।
কর্মকর্তারা বেলোনিয়া মহকুমার অন্তর্ভুক্ত সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো পরিদর্শন করে সংবেদনশীল এই সীমান্তে মাঠপর্যায়ের প্রস্তুতি মূল্যায়ন করেন। ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রায় ৮৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে এবং এই সীমান্তের বড় অংশ এখনও কাঁটাতারবিহীন অবস্থায় রয়েছে। ভারতের সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড জানায়, ইস্টার্ন কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং-ইন-চিফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর সি তিওয়ারি ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেলোনিয়ার একটি সীমান্ত ফাঁড়ি পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি সীমান্তে চলমান অপারেশনাল প্রস্তুতির অবস্থা সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেন।
পরিদর্শনকালে লেফটেন্যান্ট জেনারেল তিওয়ারি সম্মুখ সারিতে দায়িত্ব পালনরত সেনাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার পর্যালোচনা করেন। তিনি ভারতীয় সেনা, আসাম রাইফেলস ও বিএসএফ সদস্যদের পেশাদারিত্ব ও প্রস্তুতির উচ্চ মান বজায় রাখার জন্য প্রশংসা করেন।

্রিন্ট

আরও সংবদ