খুলনা | শনিবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১২ পৌষ ১৪৩২

জনসমুদ্রে তারেক রহমান : মানুষ অধিকার ফিরে পেতে চায়

|
১২:২৬ এ.এম | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫


লাখো কোটি মানুষের চোখ বিমানবন্দরের দিকে। শুধু চর্মচক্ষু নয়, মনশ্চক্ষুও নির্নিমেষ তাকিয়ে আছে। কখন আসবেন নেতা! কখন শেষ হবে অপেক্ষার প্রহর! অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। নেতাকে বহনকারী বিমান নেমে এলো মাটিতে। সিঁড়ি বেয়ে নেতা নামলেন জন্মভূমিতে। টিভির পর্দায় দৃশ্যমান হলো নেতার অবতরণ। আবেগতাড়িত নেতা প্রিয় মাতৃভূমির প্রিয় মৃত্তিকার স্পর্শ নিলেন। নেতার চোখ বেয়ে নেমে এলো আনন্দাশ্র“।
উচ্ছ¡াসে ভেসে গেল কোটি মানুষের হৃদয়। বিমানবন্দর থেকে ৩০০ ফুট সড়কের অনুষ্ঠান মঞ্চ। সর্বত্র লোকে লোকারণ্য। আক্ষরিক অর্থেই এক জনসমুদ্র। পুরো ঢাকাই যেন থমকে গিয়েছিল নেতার আগমনে।
২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ‘ওয়ান-ইলেভেন’ খ্যাত তত্ত¡াবধায়ক সরকার নির্মম নির্যাতনের পর তারেক রহমানকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছিল। আজ ২০২৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর তিনি ফিরছেন। মাঝখানে কেটে গেছে ১৭ বছর তিন মাস ১৪ দিন।
দীর্ঘ নির্বাসিত জীবন সে এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। প্রতি মুহূর্তে কষ্ট মোচড় দিয়েছে বুকের ভেতর। নির্মম নির্যাতনে অসুস্থতার কারণে এই দীর্ঘ সময়ে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের কারণে এ সময়ে প্রিয় ছোট ভাইকে হারিয়েছেন। মাকে দেখেছেন কারাবন্দি হতে, হাসপাতালে অসুস্থ মায়ের শয্যাপাশে আসতেও তাঁকে পাড়ি দিতে হয়েছে জটিলতার নানা চড়াই-উতরাই। দেখেছেন হাজার হাজার নেতাকর্মীর গুম-খুন ও হামলা-মামলার করুণ দৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃশ্যপট। আর প্রতি মুহূর্তে সহ্য করেছেন জন্মভূমিতে ফিরতে না পারার অসহ্য যন্ত্রণা, হৃদয়ের অসহায় আর্তনাদ। অবশেষে শেষ হলো তাঁর সেই দীর্ঘ প্রতীক্ষা। বীরের বেশে বুক ফুলি দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা তারেক রহমান।
বিকেল ৪টার পর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অবশেষে মঞ্চে উঠলেন। আনন্দের ফল্গুধারা বয়ে গেল অপেক্ষমাণ লাখো কোটি জনতার হৃদয়ে। শুধু সমাবেশস্থলে নয়, সারা দেশে টিভি সেট বা মোবাইলের পর্দায় নেতার হাসিমুখ দৃশ্যমান হলো। হাত তুলে অভিবাদন জানালেন প্রিয় নেতা তারেক রহমান। প্রিয় মুখটিকে দেখতে পেয়ে মানুষ ভুলে গেল পথের কষ্ট। ভুলে গেল ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার কষ্ট। হদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় নেতাকে বরণ করা দেশের মানুষ। দেড় দশকেরও বেশি সময়ের অপেক্ষার অবসান হলো তাদের।
শুরুতেই তিনি সমাবেশে আগত জনমানুষের ঢলকে ‘প্রিয় বাংলাদেশ’ বলে ভাষণ শুরু করেন। তারেক রহমান বলেন, একাত্তরে এ দেশের মানুষ যেমন স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, ২০২৪ সালে তেমনি সর্বস্তরের মানুষ এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছিল। আজ বাংলাদেশের মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেতে চায়। তারা তাদের গণতন্ত্রের অধিকার ফিরে পেতে চায়। তিনি বলেন, এ দেশে পাহাড়ের, সমতলের, মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই আছে। আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই, যে বাংলাদেশে একজন নারী, পুরুষ, শিশু যে-ই হোক না কেন, ঘর থেকে বের হলে যেন নিরাপদে ফিরতে পারে।
মার্টিন লুথারের আই হ্যাভ আ ড্রিমের উক্তি উলে­খ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আই হ্যাভ আ প্ল্যান।’ দেশকে গড়ে তুলতে পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, প্রত্যেক মানুষের সহযোগিতা তাঁর প্রয়োজন। তাহলে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলেন তিনি। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে তিনি ছুটে যান রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে থাকা অসুস্থ মায়ের কাছে। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা মায়ের সঙ্গে ছেলের মিলনের দৃশ্যটি ছিল অত্যন্ত আবেগপূর্ণ। সেই দৃশ্য দেখে সেখানে থাকা চিকিৎসকসহ সবার চোখ অশ্র“সজল হয়ে ওঠে।
দেশের লাখো কোটি মানুষের হৃদয়ের প্রত্যাশা একটাই জনমানুষের নেতা তারেক রহমান জাতিকে পথ দেখাবেন, দেশকে নিয়ে যাবেন নতুন উচ্চতায়। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে লাখো কোটি মানুষের প্রার্থনা, জননেতা তারেক রহমানকে যেন সেই তৌফিক দান করা হয়। আমরা তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ