খুলনা | শনিবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১২ পৌষ ১৪৩২

নানা জটিলতা ও হাইকমিশন বন্ধ

বেনাপোল বন্দর দিয়ে যাত্রী যাতায়াত কমেছে ৮০ শতাংশ

বেনাপোল প্রতিনিধি |
০১:১৮ এ.এম | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫


ভারত ভ্রমণে নানা জটিলতা ও হাইকমিশন অফিস বন্ধের কারনে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পাসপোর্টধারীদের যাতায়াত প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে। গত তিনদিনে মাত্র ৫২১২ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করেছেন, যা আগের তুলনায় প্রায় ৮০ শতাংশ কম।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশন অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়া, ভিসা জটিলতা ও ভারত সরকার নতুন নিয়মে অনলাইন ‘আগমন ফরম’ বাধ্যতামূলক করায় ভ্রমণকারীদের জন্য ইন্ডিয়ান ভিসা অনলাইন অ্যারাইভেল ওয়েবসাইটে আগমন ফরম পূরণ বাধ্যতামূলক করেছে। যাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে এই ফরম পূরণ করে প্রিন্ট করে কপি সঙ্গে রাখতে হবে।
তবে যাত্রীদের অভিযোগ ওয়েবসাইটের সার্ভার সচল না থাকায় আবেদন করতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এর আগে যাত্রীদের ভারতের ইমিগ্রেশন গিয়ে এরাইভার ফর্ম হাতে লিখে পূরণ করতে হতো। এখন অনলাইনে তা বাধ্যতামূলক করেছে সেদেশের সরকার। 
এদিকে ভিসা ফি ও খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। বর্তমানে একজন যাত্রীকে ভারতীয় দূতাবাসে ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দেওয়ার সময় ১,৫০০ টাকা ভিসা ফি বাবদ এবং ভিসা পাওয়ার পর ভ্রমনকর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের ১,০৫৭ টাকা ভ্রমণ ফি ও পোর্ট চার্জ দিতে হচ্ছে। এটি গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। ফলে চিকিৎসা, ব্যবসা বা শিক্ষার উদ্দেশ্যে যাতায়াতকারীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। 
এদিকে ভিসার জন্য পাসপোর্ট হাইকমিশনে জমা দিলে ৯৫ শতাংশ যাত্রীকে ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সেখানে প্রতি যাত্রীর ১৫০০ টাকা করে গচ্চা যাচ্ছে। এভাবে ভিসা না দিয়ে সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ভিসা অফিস। 
ভিসা জটিলতায় ভ্রমণ কমছে গত বছর ৫ আগস্ট থেকে। ভারত সরকার রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণ দেখিয়ে ট্যুরিস্ট, বিজনেস ও স্টুডেন্ট ভিসা বন্ধ রাখে। শুধু মেডিকেল ভিসা চালু থাকলেও শর্তসাপেক্ষে ৫ শতাংশ রোগীকে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। অনেক সময় ভিসা না পেয়ে অধিকাংশ রোগী দালালের মাধ্যমে জমা দিলে কিছু কিছু ভিসা মিললেও সেখানে ৮-১০ হাজার টাকা গুণতে হচ্ছে। যে ডাক্তারের এ্যাপয়েন্টমেন্ট দেখিয়ে ভিসা নেওয়া হয়েছে, তার কাছেই চিকিৎসা করতে হবে। এই শর্ত লঙ্ঘন করলে ফেরার পথে যাত্রীদের আটকে দিচ্ছে ভারতীয় ইমিগ্রেশন।
বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা গেছে আগে প্রতিদিন যেখানে ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করতো সেখানে এখন ২০ শতাংশে নেমে এসেছে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার সময় ফরিদপুরের পাসপোর্ট যাত্রী শ্যামল বলেন, তিন তিনবার ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিয়েও ভিসা পাইনি। চতুর্থবার দালালের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভিসা পেয়েছি। এছাড়াও ভিসা অফিসে লেগেছে ১৫০০ টাকা। ভ্রমণ কর দিতে হচ্ছে ১০৬০ টাকা। এতো টাকা খরচা করার পর ডাক্তার দেখানো টাকাই থাকছে না। 
বেনাপোল স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এস এম শাখাওয়াত হোসেন জানান, “গত তিনদিনে মোট ৫ হাজার ২১২ জন যাত্রী যাতায়াত করেছে। এর মধ্যে বুধবার ভারতে গেছে ৮৭০ জন, ফিরেছে ৮৫২ জন, বৃহস্পতিবার গেছে ৯৭৯ জন, ফিরেছে ৮৫১ জন। শুক্রবার গেছে ৮৬৪ জন, ফিরেছে ৭৯৬ জন। তিনি আরও বলেন, “ভিসা বন্ধ, ভিসা প্রদানে জটিলতা ও নতুন নিয়মের কারণে পাসপোর্টধারীদের যাতায়াত অনেকাংশে কমে এসেছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ