খুলনা | শনিবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১২ পৌষ ১৪৩২

‘১০ হাজার টাকার বিনিময়ে নির্বাচন অফিসে আগুন’

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৯ এ.এম | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫


ল²ীপুরে নির্বাচন কার্যালয়ে আগুনের ঘটনায় মোঃ রুবেল নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রয়াত এক মন্ত্রীর এপিএস পরিচয় দেওয়া শিমুল চক্রবর্তী ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাঁকে দিয়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আতঙ্ক তৈরি ও নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে ঘটনাটি ঘটানো হয়। শুক্রবার ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ আবু তারেক এ তথ্য জানান।
গ্রেফতার রুবেল লক্ষ্মীপুর পৌরসভার দক্ষিণ মজুপুর এলাকার বাসিন্দা ও সদর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হাকিমের ভাই। এ ছাড়া তিনি বিদ্যুৎ অফিসের সাবেক গাড়িচালক। তাঁর ভাই ছাত্রলীগ করায় তিন মাস আগে তাঁকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। চাকরিকালে সাবেক মন্ত্রীর এপিএস শিমুলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে এসপি মোঃ আবু তারেক জানান, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর জনগণের মাঝে আতঙ্ক তৈরি ও নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে সাবেক মন্ত্রীর এপিএস শিমুল ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে রুবেলকে আগুন লাগানোর প্রস্তাব দেন। এতে রুবেল রাজি হন।
১১ ডিসেম্বর শিমুল রুবেলের বিকাশে ২ হাজার টাকা পাঠান। ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় হোটেল থেকে এক লিটার পানির বোতল কিনে এবং পানি ফেলে দিয়ে খালি বোতলটি নিয়ে স্টেডিয়ামের সামনে বেলালের দোকান থেকে পেট্রল নেন রুবেল। পরে গভীর রাতে মাস্ক পরে নির্বাচন কার্যালয়ে ঢুকে নিচতলার উত্তর পাশে স্টোররুমে জানালা খোলা পেয়ে পেট্রল ঢেলে রুবেল আগুন লাগিয়ে দেন। বোতলটি নির্বাচন অফিসের বাউন্ডারি প্রাচীরের ওপর দিয়ে ফেলে দেন। আগুন লাগাতে গিয়ে তাঁর ডান পাশে কানের নিচে ও দাড়ির কিছু অংশ পুড়ে যায়। এরপর হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে রুবেল আগুন লাগানোর দৃশ্যের ছবি তুলে (সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়) দৌড়ে গেট টপকে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এসপি আরও জানান, অফিসে সিসি ক্যামেরা রয়েছে-বিষয়টি বুঝতে পেরে তাঁকে যাতে কেউ না চিনতে পারে, সে জন্য বাসায় আসার পর তাঁর পরিহিত জামাকাপড় আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। ওই দিন বিকেলেই শিমুল বিকাশে তাঁকে বাকি ৮ হাজার টাকা পাঠান।
আসামিকে গ্রেফতারের পরে তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এবং দেখানোমতে নির্বাচন ভবনের বাউন্ডারি প্রাচীরের উত্তর পাশের নিচু জমি থেকে পেট্রল নিয়ে আসা পানির (জীবন) বোতলটি উদ্ধার করা হয়।
এসপি আবু তারেক জানান, রুবেলের ব্যবহৃত স্মার্টফোন জব্দ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর মোবাইল ফোন থেকে ঘটনার সময় তাঁর তোলা আগুন ধরানোর স্থিরচিত্র পাওয়া যায়।
রুবেলের মোবাইল ফোনের কথোপকথন পর্যালোচনা করে এবং তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে জেলা খাদ্যগুদাম ও এলজিইডি অফিসে আগুন লাগানোর পরিকল্পনার বিষয়টিও জানা যায়।
যে দুটি বিকাশ নম্বর থেকে রুবেলকে টাকা পাঠানো হয়েছে, তাঁদেরও শনাক্ত করা হয়েছে। নির্দেশদাতা ও অন্য সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে বলে জানা এসপি।

্রিন্ট

আরও সংবদ