খুলনা | রবিবার | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৪ পৌষ ১৪৩২

টেলিগ্রাফের রিপোর্ট

ভারতে বাড়তে থাকা অসহিষ্ণুতা নিয়ে মুফতি পরিবারের উদ্বেগ

খবর প্রতিবেদন |
০১:৫১ এ.এম | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫


জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির মেয়ে ইলতিজা মুফতি শুক্রবার মন্তব্য করেছেন যে, ভারত এখন যেন ‘লিঞ্চিস্তান’-এ পরিণত হয়েছে। তার দাবি, দেশে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে এবং বাংলাদেশে লিঞ্চিংয়ের সমালোচনা যারা করছেন, ভারতে এমন ঘটনা ঘটলেও তারা নীরব থাকছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টেলিগ্রাফ। উলে­খ্য, ইংরেজি শব্দ লিঞ্চিং অর্থ পিটিয়ে হত্যা করা। ইলতিজা ‘এক্স’-এ একটি পোস্টে ভারতকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘না ইন্ডিয়া, না ভারত, না হিন্দুস্তান-তোমার নাম লিঞ্চিস্তান।’
তিনি ওই পোস্টে ওড়িশায় ১৯ বছর বয়সি বাঙালি মুসলিম অভিবাসী শ্রমিক জুয়েল শেখের লিঞ্চিং সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনও শেয়ার করেন। তাকে ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল বলে তার দাবি। 
ইলতিজার মা ও পিডিপি প্রধান, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও দেশের বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন। তার অভিযোগ, ভারতের বিচার ব্যবস্থা গভীর ভাবে রাজনীতিকরণে নিমজ্জিত। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সা¤প্রতিক জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ হাইকোর্টের রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন। 
মেহবুবা বলেন, আমরা বহুদিন ধরেই বলে আসছি, দেশে অসহিষ্ণুতা বেড়েছে। লিঞ্চিং হচ্ছে। বাংলাদেশে যা হচ্ছে, তা আমাদের কষ্ট দেয়। কিন্তু যারা সেগুলোর সমালোচনা করছেন, নিজেদের সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও মুখ খোলেন না। 
তিনি জানান, ৭২ ঘণ্টায় হিমাচল, উত্তরাখণ্ড ও হরিয়ানায় কাশ্মিরি শাল ব্যবসায়ীদের হয়রানির তিনটি ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, দক্ষিণপন্থী কর্মীরা তাদের জোর করে নির্দিষ্ট স্লোগান দিতে বাধ্য করছেন। স্লোগান দিতে অস্বীকার করলে মারধর করছেন।
হাইকোর্টে তার পিআইএল (জনস্বার্থ মামলা) খারিজ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের বিচারব্যবস্থার বড় অংশ রাজনৈতিক প্রভাবিত। সেই আবেদনে তিনি দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটক কাশ্মিরি হাজতিদের জম্মু-কাশ্মীরে ফিরিয়ে নেয়ার দাবি করেছিলেন। কিন্তু আদালত তার আবেদনের সমালোচনা করে বলেন, এটি নাকি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। মেহবুবা বলেন, আমার চরিত্র নিয়ে মন্তব্য করা বিচার ব্যবস্থার কাজ নয়। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রশ্ন তোলা আমার অধিকার।
প্রধান বিচারপতি অরুণ পালি­ ও বিচারপতি রাজনেশ ওসওয়ালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মন্তব্য করেন যে, তার আবেদন অপ্রমাণিত ও রাজনৈতিকভাবে অনুপ্রাণিত এবং আইনগত মানদণ্ড পূরণ করতে ব্যর্থ। রায়ে আরও বলা হয়, মেহবুবা মুফতি নাকি এই মামলা দায়ের করেছেন ‘রাজনৈতিক সুবিধা নেয়া এবং নির্দিষ্ট একটি জনগোষ্ঠীর পক্ষের ন্যায়যোদ্ধা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরার’ উদ্দেশ্যে।
রায় প্রসঙ্গে হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, প্রতিটি সাধারণ মানুষ যখন পিআইএল করতে পারে, তখন একজন রাজনীতিবিদ কেন পারবে না? তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, রাজনীতিবিদরাই তো মাঠের মানুষের সঙ্গে যুক্ত। আমি জানি গরিব পরিবারগুলো কত কষ্টে থাকে। নিজেদের আত্মীয়দের দেখা করতেও পারে না, বাইরের রাজ্যের জেলে থাকা অবস্থায় তারা কীভাবে নিজেদের মামলা লড়বে?

্রিন্ট

আরও সংবদ