খুলনা | সোমবার | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ পৌষ ১৪৩২

আইন-শৃঙ্খলার ক্রমাবনতি কঠোর পদক্ষেপ নিন

|
১২:০২ এ.এম | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫


আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার পারদ ক্রমেই চড়ছে। খুন, সন্ত্রাস, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। অন্যদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত নিকটবর্তী হচ্ছে, রাজনৈতিক সংঘাত, সংঘর্ষ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তত বাড়ছে।
নির্বাচনের প্রার্থী-সমর্থকরাও উদ্বিগ্ন। উদ্বেগ আছে প্রশাসনেও। অনেকে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ও গানম্যান পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা ক্রমেই নির্বাচন সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে বেশি জড়িয়ে যাবেন।
ফলে মাঠ পর্যায়ে কিছুটা শূন্যতা তৈরি হতে পারে এবং অপরাধীরা সেই সুযোগে অপরাধের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এখনই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নিলে সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। জানা যায় যাঁদের কাছে বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে, তাঁদের অস্ত্রও জমা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’ ও ‘চূড়ান্ত সংসদ সদস্য প্রার্থীদের’ জন্য আগ্নেয়াস্ত্রের নতুন লাইসেন্স দেওয়ার বিশেষ সুযোগ রাখা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। অস্ত্র জমা নেওয়ার বিষয়ে আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিস্তারিত নির্দেশনাসহ প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। মন্ত্রণালয় সূত্রে আরো জানা গেছে, এ পর্যন্ত অন্তত ১৫-১৬ জন রাজনীতিবিদ এবং ২০ জনের বেশি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা অস্ত্রের লাইসেন্স বা গানম্যান চেয়ে আবেদন করেছেন।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) মাসিক অপরাধমূলক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে ২৩০ জনের বেশি ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এতে ৮০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। হতাহতের মধ্যে রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতেও দেশব্যাপী অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধির একটি বড় কারণ, গত বছর ৫ আগস্টের আগে ও পরে লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলির একটি বড় অংশ উদ্ধার করতে না পারা। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সীমান্তপথে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক আসছে। গত শুক্রবারও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্ত থেকে ২৬টি শক্তিশালী ইলেকট্রিক ডেটোনেটর উদ্ধার করেছে বিজিবি। শক্তিশালী বোমা তৈরিতে এগুলো ব্যবহার করা হতে পারত। শুক্রবার ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি মাদ্রাসায় বিস্ফোরণে চারজন আহত হয়েছে। পুলিশ সেখান থেকে বিস্ফোরকও উদ্ধার করেছে।
আমরা মনে করি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে হলে এখন থেকেই আইন-শৃঙ্খলা উন্নয়নে ব্যাপক তৎপরতা চালাতে হবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্রের অনুপ্রবেশ কঠোরভাবে ঠেকাতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তগুলোতে নজরদারি আরো জোরদার করতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ