খুলনা | মঙ্গলবার | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ পৌষ ১৪৩২

আগামী নির্বাচন হোক অবাধ, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর

|
১২:৩১ এ.এম | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫


ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একেবারেই দোরগোড়ায়। দেড় মাসেরও কম সময় বাকি। অথচ এখনো দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। দিন দিন তা আরো খারাপ হচ্ছে। অন্যান্য অপরাধ যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে রাজনৈতিক সহিংসতা। মব সন্ত্রাস, টার্গেটেড কিলিং, গণমাধ্যম, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, মাজার, বাউল শিল্পীদের ওপর বর্বরোচিত হামলা হচ্ছে। নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী, রাজনৈতিক নেতা, নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, এমনকি দলীয় কর্মী-সমর্থকরাও নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কাগ্রস্ত। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদেরও।
এসব কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে সেভাবে নির্বাচনী আমেজ নেই। নির্বাচনে যে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ থাকে, তা-ও কম দেখা যাচ্ছে।
নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা যখন চরমে উঠছিল, সে সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে নির্বাচনের পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে। সারা দেশে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর মধ্যে একটা জাগরণ তৈরি হয়েছে।
সাধারণ মানুষ আবার নির্বাচন নিয়ে সরব হতে শুরু করেছে। এই স্বতঃস্ফূর্ততা ধরে রাখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন ও অন্তর্বর্তী    সরকারের। দেশে বিরাজ করা ভীতির পরিবেশ দূর করে উৎসবের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু সেই লক্ষে উদ্যোগের অভাব অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তা ছাড়া এবারের নির্বাচন অতীতের জাতীয় নির্বাচনগুলো থেকে ভিন্ন।
এবার একই সঙ্গে গণভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যেসব প্রশ্নে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, সেসব বিষয়ে সাধারণ মানুষের স্পষ্ট জ্ঞান বা সচেতনতার অভাব রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণার তাগিদ দিয়ে আসছিলেন। সেসব বিষয়েও উদ্যোগ অত্যন্ত সীমিত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা মনে করেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে রাজনীতি ও নির্বাচনের মাঠে অনুকূল পরিবেশ ফিরে এলেও এখনো তাঁর সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। সামনে যেহেতু ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তাই নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁঁকির কথা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। তাই সাধারণভাবে চলাচল করলেও নিজের নিরাপত্তার কথা তাঁকে ভাবতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘তারেক রহমানের বক্তব্য ইতিবাচক। তিনি সবাইকে নিয়ে চলতে চান। তিনি তরুণদের কথা বলেছেন। আগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি তাঁর পরিকল্পনার কথা বলেছেন। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের বক্তব্যেও তিনি তাঁর প্ল্যানের কথা বলেছেন।’ বিএনপি নেতারা বলছেন, তারেক রহমান দেশে আসার পর বিএনপির প্রতি মানুষের আস্থা আরো বেড়েছে। সবাই তাঁকে আগামী প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই ভাবছেন। এর পরও তিনি কিন্তু সাংগঠনিকভাবে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। এত দিন যে অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ ছিল, তারেক রহমান দেশে ফেরার পর তা অনেকটাই দূর হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও গত শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক এ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে হওয়া নিয়ে যে সংশয় ছিল, তা দূর হয়েছে। ১২ ফেব্র“য়ারি নির্ধারিত নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে সমালোচকদের যত সংশয় ছিল, তা মুছে দিয়েছে গত বৃস্পতিবারের ঘটনা (তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন)।’
আমরা চাই, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে দ্রুত কঠোরতম পদক্ষেপ নেওয়া হোক। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হোক। আগামী নির্বাচন হোক অবাধ, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ