খুলনা | বুধবার | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৭ পৌষ ১৪৩২

মার্কিন সংস্থার হুঁশিয়ারি

২০২৬ সালে ফের যুদ্ধে জড়াতে পারে ভারত-পাকিস্তান

খবর প্রতিবেদন |
০৩:০১ পি.এম | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫


‘সন্ত্রাসী কার্যকলাপ’ বৃদ্ধির কারণে ২০২৬ সালে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী- ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আবারও সশস্ত্র সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংকট্যাংক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স (সিএফআর)।

গত রোববার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির বিশেষজ্ঞদের ওপর করা এক জরিপভিত্তিক প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক উত্তেজনা ও সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে এই মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়েছে।

জরিপে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ‘উচ্চমাত্রার সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ ভারত–পাকিস্তান সম্পর্ককে আবারও সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কঙ্গো, গাজা উপত্যকা ও ইউক্রেনসহ বিভিন্ন অঞ্চলের চলমান সংঘাত অবসানের চেষ্টা করেছে। একই সঙ্গে ভারত–পাকিস্তান এবং কম্বোডিয়া–থাইল্যান্ডের মধ্যকার উত্তেজনাও প্রশমনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বল্প সময়ের একটি সামরিক মুখোমুখি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার এক মাস পর তিন দিনের ওই সংঘাত ঘটে। ৬ মে রাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ পরিচালনা করে পাকিস্তানের ভেতরে কথিত সন্ত্রাসী শিবির লক্ষ্য করে হামলা চালায়। ভারতের দাবি, ওই অভিযানে ১০০ জনের বেশি জঙ্গি ও ৯টি সন্ত্রাসী শিবির ধ্বংস করা হয়।

পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত ভারতের সামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনী ও সরকারের দাবি ৭ মে বিমান যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সাতটি ভারতীয় বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছিল, যার মধ্যে রয়েছে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি সু–৩০ ও অন্যটি মিগ–২৯ যুদ্ধবিমান ছিল। ভারত প্রথম দিকে এ বিষয়ে চুপ ছিলো। তবে সম্প্রতি ভারতের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তারা বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি অনুযায়ী, ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব সংঘাত কমানোর উদ্যোগ নেয়। ১০ মে ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনের সঙ্গে তার পাকিস্তানি সমকক্ষের যোগাযোগের পর নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) জুড়ে গোলাগুলি ও সামরিক তৎপরতা বন্ধে উভয় পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছে।

তবে পাকিস্তান ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি- তার হস্তক্ষেপেই যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই দেশ। তবে ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করে আসছে ভারত।

সিএফআর-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলতি বছর পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যেও সীমান্ত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অক্টোবরের শুরুতে কাবুলে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) প্রধান নুর ওয়ালি মেহসুদকে লক্ষ্য করে পাকিস্তান বিমান হামলা চালায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর জবাবে আফগানিস্তানের কঠোর প্রতিক্রিয়ার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

এই প্রেক্ষাপটে সিএফআর সতর্ক করে বলেছে, আফগানিস্তান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে জঙ্গি হামলা আবার বাড়লে ২০২৬ সালে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যেও ‘মাঝারি মাত্রার’ সশস্ত্র সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে, যা পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি

্রিন্ট

আরও সংবদ