খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

করোনায় নাভিশ্বাস : বাজার নিয়ন্ত্রণে সঠিক নীতি-কৌশল প্রয়োজন

|
১২:০৫ এ.এম | ২১ জুন ২০২১

করোনা অতিমারীর নেতিবাচক ছাপ স্বাস্থ্যকে ছাপিয়ে প্রাত্যহিক জীবনে পড়তে শুরু করেছে। এতে বহু মানুষ চাকরি হারিয়েছেন, অনেকেরই আয় কমেছে। একটি হিসেবে বলা হচ্ছে, গত দু’বছরে দেশে দারিদ্র্যের হার ২১.৬ শতাংশ থেকে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) জরিপ অনুযায়ী করোনার কারণে ৬২ শতাংশ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। বিভিন্ন হিসেবে বলা হচ্ছে, নতুনভাবে দুই থেকে আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। আবার এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প¬্যাটফরম বাংলাদেশ তাদের জরিপভিত্তিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কোভিড ১৯-এর জেরে দেশে ৮০ শতাংশ পরিবার খাবার গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে, করোনা জনজীবনে সত্যিকার অর্থেই বিপর্যয় নিয়ে এসেছে।
বাজেটে বিভিন্ন পণ্যের দাম না বাড়ালেও বাজারে ভোগ্যপণ্য তথা খাদ্যসামগ্রীর দাম বেড়েই চলেছে। বাজেটের প্রভাবে না হলেও করোনার কারণে বাজার কিন্তু চড়া। মোটা চাল থেকে শুরু করে তেল, ডাল, ডিম, সবজিসহ সব খাবারেরই দাম বাড়তি। সংসারে ক্যালরি গ্রহণের হার কমতে থাকলে সাধারণভাবে পুষ্টিমান হ্রাস পাবে। এমনিতেই আমাদের সাধারণ মানুষ অপুষ্টিতে ভোগেন। এখন এটা আরও বাড়বে যা জনস্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলবে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। বহু মানুষ রাজধানী ছেড়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন, যদিও সেখানে কর্মসংস্থানের কোনো নিশ্চয়তা নেই। বাস্তবতা হলো কৃষি খাতে উৎপাদনে যে বৈপ্লবিক উন্নয়ন ঘটেছে তার সুফল থেকে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অবস্থায় সরকারের প্রণোদনা ও সহায়তা নীতিতে পরিবর্তন আনার কথা ভাবতে হবে বলে মনে হয়।
বর্তমান সময়কে একটি আপৎকাল হিসেবে গণ্য করে সরকারকে অন্যান্য অনুৎপাদনশীল খাত থেকে বরাদ্দ কেটে মূল্যস্ফীতি কমানো ও বিনামূল্যে বা সস্তায় ভোগ্যপণ্য বিক্রির ব্যবস্থা নিতে হবে। কেবল টিসিবির মাধ্যমে বিক্রয়ের ব্যবস্থায় বর্তমান সঙ্কট মোকাবিলা করা যাবে না। আমাদের মনে হয় দরিদ্র, নতুন দরিদ্র বা বিপর্যস্ত মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী, পুলিশ-আনসারসহ রাষ্ট্রের অন্যান্য সংস্থাকেও কাজে লাগাতে হবে। তা ছাড়া করোনা প্রতিরোধে সামাজিক সহায়তা প্রকল্পে জনগণকে সঙ্গে নেওয়ার প্রস্তাবটিও দ্রুত কার্যকর করা উচিত। আমরা মনে করি, সরকার ও সমাজের সমন্বিত উদ্যোগেই বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তরণ সম্ভব।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ