খুলনা | শুক্রবার | ১১ জুলাই ২০২৫ | ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

মেয়াদ আছে ৮ মাস, ভৌত অগ্রগতি মাত্র ২৩ শতাংশ

নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না কাজ, খুলনা জেনারেল হাসপাতালের ভবন নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধির শঙ্কা

এস এম আমিনুল ইসলাম |
১২:৪১ এ.এম | ২৬ অক্টোবর ২০২১

কাগজে-কলমে মেয়াদ রয়েছে ৮ মাস, অথচ বাস্তবে ভৌত অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২৩ শতাংশ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়ার ৩ বছর পর এমন পরিস্থিতি ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণ প্রকল্পে। ফলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে বাস্তবায়নকারী সংস্থা বলছে, করোনা ও পাইল ড্রাইভ অনেকদিন বন্ধ থাকায় অগ্রগতির হার কম।

সূত্রে জানা গেছে, বৃটিশ আমলে নির্মিত খুলনা জেনারেল হাসপাতালটি সময়ের পরিক্রমায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। অন্যদিকে চিকিৎসা সেবা স¤প্রসারণে ১৫০ শয্যার ওই হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তাই বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে জেনারেল হাসপাতালের স্থলে একটি আধুনিক ভবন নির্মানের দাবি ওঠে। যার প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী খুলনা সফরে আসলে হাসপাতালের উন্নয়নে ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে অর্থবরাদ্দ পাওয়ার পর হাসপাতালের পুরাতন ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মানে উদ্যোগ নেয়া হয়।

গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্প অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর ১২ তলা ফাউন্ডেশনের ওপরে ৬ তলা ভবন নির্মানের জন্য দরপত্র আহŸান করা হয়। এজন্য ব্যয় ধরা হয় ৩২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহাবুব ব্রাদার্স। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৮ সালের ২৬ আগস্ট নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ভবন নির্মাণ কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। নতুন এ ভবনে বেজমেন্টে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা ছাড়াও মেডিসিন, স্টোর, আসবাবপত্র এবং স্টোর কিপারের কক্ষ থাকবে। নিচতলায় থাকবে জরুরি বিভাগ। পাশাপাশি থাকবে ১০ জন পুরুষ ও ১০ জন নারী রোগী রাখার জন্য ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ড। এছাড়া জরুরি অস্ত্রোপচার কক্ষ, অভ্যর্থনা কক্ষ, অফিস কাম রেস্ট রুম এবং নার্সিং রুম, বহির্বিভাগ, রেডিওলজি বিভাগ থাকবে। দ্বিতীয় তলায় থাকবে অফিস ব্যবস্থাপনা। তৃতীয় তলায় থাকবে রোগী ভর্তির বিভিন্ন ব্যবস্থা ও কিছু শয্যা, ৪র্থ তলায় সার্জারি ওয়ার্ড, অপারেশন থিয়েটার ও আইসিইউ এবং ৫ম তলায় থাকবে গাইনী ওয়ার্ড। ৬ষ্ঠ তলায় শিশু ওয়ার্ড। 

তবে অভিযোগ উঠেছে ১২ তলা ভিতের ওপর ৬ তলা হাসপাতাল ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু থেকেই ধীরগতিতে এগোচ্ছে। ফলে ২০২২ সালে জুন অর্থাৎ নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হতে মাত্র ৮মাস বাকি থাকলেও কাজে বাস্তবে অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২৩ শতাংশ। 

এদিকে সংশোধিত ওপিতে ৬ তলার উপরে ৭ম ও ৮ম তলা পর্যন্ত উর্ধ্বমুখী স¤প্রসারণ ও বাউন্ডারী ওয়াল, ভূমি উন্নয়ন, রান্না ঘর, রাস্তা, ডিপটিউবওয়েল, মেডিকেল গ্যাস পাইপ লাইন, সাব স্টেশন ভবন, সাব স্টেশন যন্ত্রপাতি, জেনারেটর ও ৪টি লিফট ধরা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৬৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
স্থানীয়রা জানান, তদারকির অভাব ও গাফিলতির কারনে নির্মাণ কাজ অত্যন্ত মন্থর গতিতে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে সময় ও ব্যয় বাড়বে। ফলে এ সুফল থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।  তাই প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরনে কাজের গতি বাড়ানো দরকার।

এ ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার বিশ্বাস বলেন, করোনাকালীন সময়ে কাজ করা যায়নি। এছাড়া পাইল ড্রাইভ অনেকদিন বন্ধ থাকায় অগ্রগতির হার কম। তবে এক্ষেত্রে প্রকল্পের সময় বাড়লেও ব্যয় বাড়বে না। চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ শেষ করতে হবে। 

তিনি বলেন, সংশোধিত ওপিতে ৬ তলার উপরে ৭ম ও ৮ম তলা পর্যন্ত উর্ধ্বমুখী স¤প্রসারণ হবে। সেক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সেক্ষেত্রে লিফটের দরপত্র আহŸান করা হয়েছে। অন্য অঙ্গগুলোর দরপত্রও প্রক্রিয়াধীন। শিগগিরই কাজে গতি ফিরে আসবে। 

্রিন্ট

আরও সংবদ