খুলনা | মঙ্গলবার | ১৫ জুলাই ২০২৫ | ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

দালাল বিরোধী ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলবে প্রতিদিন : পরিচালক

অর্ধেকের কম জনবল নিয়ে চিকিৎসা সেবায় আবারও দেশ সেরা খুমেক হাসপাতাল

বশির হোসেন |
১২:৪৫ এ.এম | ২৮ অক্টোবর ২০২১

চিকিৎসা সেবা ও রোগীর সন্তুষ্টিতে আবারও সমগ্র দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসে দেশের সকল হাসপাতালের তুলনায় চিকিৎসা ও অন্যান্য সেবায় ফের এক নম্বর অবস্থানে এ সেবা প্রতিষ্ঠানটি। 

স¤প্রতি হাই পারফরমেন্স গ্রিন ফ্যাসিলিটিজ হাসপাতালের তালিকায় খুমেক হাসপাতালকে যোগ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধের্কের কম জনবল নিয়ে এভাবে সেবা দিতে পেরে খুশি হাসপাতালের পরিচালক, চিকিৎসক ও কর্মচারীরা। 
একদিকে চিকিৎসক নার্স সংকট, অন্যদিকে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ রোগী নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল প্রশাসন। এর ওপর বাড়তি চাপ সামলাতে হচ্ছে করোনা রোগী।
তবে বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগে এখনও দালালদের দৌরাত্ম থাকায় এর বিরুদ্ধে প্রতিদিনই স্বশরীরে অভিযান চালাচ্ছেন পরিচালক। গঠন করেছেন ভিজিলেন্স টিম। হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা ও দালাল বিরোধী অভিযান নিয়মিত চলবে বলেও জানান তিনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, খাতা কলমে পাঁচশ’ শয্যার হাসপাতাল হলেও চিকিৎসক রয়েছে সৃষ্ট পদের অর্ধেক। আর প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকছেন ১৪শ’ এর বেশি। বর্হিবিভাগেও প্রতিদিন অন্তত ১২শ’ রোগী সেবা নিচ্ছেন। সীট পেরিয়ে বারান্দা, প্যাসেস, চলাচলের রাস্তা এমনকি পরিচালক এর কার্যালয়ের সামনেও রোগীরা ফ্লোরে সেবা নিচ্ছেন। একদিকে চিকিৎসক নার্স সংকট অন্যদিকে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ রোগী নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল প্রশাসন। 
হাসপাতালের প্রশাসনিক দফতর থেকে পাওয়া তথ্যমতে, খুমেক হাসপাতালে পরিচালক, উপ-পরিচালকসহ সৃজিত পদ সংখ্যা ২৮৫। পূরণ হয়েছে ১৩৫টি পদ। ফাঁকা রয়েছে ১৫৮টি পদ। এর মধ্যে রেজিস্ট্রার ৪২টি পদের মধ্যে ১৭টি, মেডিকেল অফিসার ৮৮টি পদের মধ্যে ৫১টি, সহকারী রেজিস্ট্রার ৯১টি পদের ৪৮টি, এনেস্থেসিওলিস্ট ১৬টি পদের মধ্যে ১৪টি উলে­খযোগ্য পদ শূন্য। এ বিশাল শূন্য পদ নিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করা কঠিন বলে মন্তব্য করেছে কর্তৃপক্ষ।

সূত্রটি আরও জানিয়েছে, আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে কর্মচারী সংকট অনেকাংশে সমাধান হলেও এখনো চিকিৎসক সংকট প্রকট। তবে ধারণ ক্ষমতার প্রায় তিনগুণ রোগী ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। চিকিৎসা পাওয়ার আশায় হাসপাতালের বারান্দা, চিকিৎসকের চেম্বার, লিফটের সামনে থেকে শুরু করে বাথরুমের দরজা পর্যন্ত সর্বত্র রোগী। মহানগরসহ খুলনা জেলার নয়টি উপজেলার পাশাপাশি বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নড়াইল, যশোরের রোগীরাও এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। যে কারণে রোগীর চাপ বাড়ছে প্রতিনিয়ত।

হাসপাতালের বহির্বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায় প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২শ’ রোগী বর্হিবিভাগে প্রতিদিন সেবা নিতে আসে। খুলনাসহ আশে পাশের জেলা থেকে আসা রোগীরা সেবা নিয়ে চলে যায়।

হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ রবিউল হাসান বলেন, চিকিৎসক পদায়নের বিষয়টি আমাদের হাতে নেই। আমরা প্রতি মাসেই মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র  প্রেরণ করি। ওপর মহলও সেটা দেখেন। আমরা চেষ্টা করছি রোগীরা যাতে নির্বিঘœ সেবা পায় সেটা নিশ্চিত করতে। সারাদেশের হাসপাতালগুলোর মধ্যে আমরা এখন পর্যন্ত নিজেদের সেরা অবস্থানটা ধরে রাখতে পেরেছি। তবে চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি না পেলে সেটা ধরে রাখা আর কত দিন সম্ভব হবে সেটা ভেবে অস্থির কর্তৃপক্ষ। তিনি সারাদেশের তুলনায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে এক নম্বর অবস্থানে তুলে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।

্রিন্ট

আরও সংবদ