খুলনা | রবিবার | ০৬ জুলাই ২০২৫ | ২১ আষাঢ় ১৪৩২

মহেশ্বরপাশায় ৩৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে গম সংরক্ষণে সাইলো নির্মাণ করবে সরকার

খবর প্রতিবেদন |
০৬:৫১ পি.এম | ১৫ নভেম্বর ২০২১

খুলনার মহেশ্বরপাশায় ৭৬ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি সাইলো নির্মাণ করবে সরকার। এটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৩৫৫ কোটি ৯১ লাখ ৭ হাজার ৩৮৯ টাকা। দেশের খাদ্য মজুদের ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে খুলনা ও চট্টগ্রাম এ দু'টি গমের সাইলো নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই দু'টি সাইলোর মোট ধারণ ক্ষমতা হবে এক লাখ ৯০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৯৩ কোটি ৪৮ লাখ ৭১ হাজার ১২৩ টাকা। আজ সোমবার (১৫ নভেম্বর) খাদ্য মন্ত্রলালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংক এ খাতে আর্থিক সহায়তা দেবে।

সূত্র জানায়, খুলনার মহেশ্বর পাশায় ৭৬ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ক্ষমতা সম্পন্ন গমের সাইলো নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দরপত্র আহবান করা হলে পাঁচটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এরমধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে যৌথভাবে বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রকচার লিমিটেড এবং তুরস্কের অ্যালটুনটাস, অ্যালটুনটাস হ্যাভাল্যানডিরমা ট্যুরিজম সান.টিক এস।

সূত্র জানায়, খুলনা ও চট্টগ্রাম সাইলো নির্মাণ কাজ ডিপিপি’তে ডব্লিউ-১ প্যাকেজের অন্তর্ভূক্ত ছিল। এই প্যাকেজটির জন্য ২০১৭ সালে দরপত্র আহবান করা হয়। তবে প্রকল্পের এ খাতে অর্থ বরাদ্দ না থাকায় ওই সময় প্যাকেজটির মূল্যায়ন করে কার্যাদেশ দেয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে অতিরিক্ত অর্থায়নের চুক্তি স্বাক্ষর ও ডিপিপি সংশোধনের পর গত ২০২০ সালের ১৬ জুন তারিখে দরদাতাদের কাছে দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়ে।

সর্বনিম্ন দরদাতা টিসিসিএল-ফ্রেম জেভি প্রতিষ্ঠানটি প্রাইজ অ্যাডজাস্টমেন্ট দাবি করে। কিন্তু দরপত্রের শর্তানুযায়ী প্রাইজ অ্যাডজাস্টমেন্টের কোনো সুযোগ না থাকায় বিশ্বব্যাংকের নির্দেশনায় খাদ্য অধিদপ্তর ডব্লিউ-১ প্যাকেজের সব দরপত্র বাতিল করে। অতিরিক্ত অর্থায়ন চুক্তি ও ডিপিপি সংশোধনের পর বিশ্বব্যাংকের সম্মতিতে ডব্লিউ-১ প্যাকেজ ভেঙে ডব্লিউ-২৪(চট্টগ্রাম) ও ডব্লিউ-২৫ (মহেশ্বর পাশা, খুলনা) নামে দুটি প্যাকেজে বিভক্ত করা হয়। যা হালনাগাদ প্রকিউরমেন্ট প্লানে রয়েছে।

অন্যদিকে, চট্টগ্রামের সাইলোটির ধারণ ক্ষমতা হবে এক লাখ ১৪ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। এটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৫৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৬৩ হাজার ৭৩৪ টাকা আর খুলনার সাইলোটির ধারণ ক্ষমতা হবে ৭৬ হাজার ২০০ মেট্রিক টন। এটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৩৫৫ কোটি ৯১ লাখ ৭ হাজার ৩৮৯ টাকা।

চট্টগ্রামের ১ লাখ ১৪ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার আধুনিক গমের সাইলো নির্মাণের লক্ষ্যে প্রকল্পের ডিজাইন অ্যান্ড সুপারভিশন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রণীত ডব্লিউ-২৪ প্যাকেজের প্রাক্কলন, প্রকল্পের দাপ্তরিক প্রাক্কলন কমিটি পর্যালোচনা করে পাঁচ কোটি ৩৮ লাখ ৪৪ হাজার ১৮০ মার্কিন ডলারের সমতুল্য ৪৫৬ কোটি ৫৯ লাখ ৮৬ হাজার ৪৬৪ টাকার প্রাক্কলন চূড়ান্ত করে।

দরপত্র কারিগরি মূল্যায়নের ভিত্তিতে দেখা যায় টিসিসিএল-এজিআই জেভি (তমা কন্সট্রাকশন অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড এবং এজি গ্রোথ ইন্টারন্যাশনাল ইনকরপোরেশন) এর দাখিল করা দরপত্রে স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী সাইলোর বিভিন্ন স্টিল কম্পোনেন্টের ৬০০ গ্রাম/বর্গমিটার গ্যালভানাইজেশনের পরিবর্তে ২৭৫ গ্রাম/বর্গমিটার, কনভেইং বেল্টের স্পিড ৩০০ মেট্রিক টন/ঘণ্টার পরিবর্তে ২০০ মেট্রিক টন/ঘণ্টাসহ এ ধরনের ৫০টি ম্যাটারিয়লের ডেভিয়েশন পাওয়া গেছে।

পারটেক-পিডিএল জেভি-এর দাখিলকরা দরপত্রে স্পেসিফিকেশন এক্সপেরিয়েন্সের ঘাটতিসহ দরপত্রের চাহিদা অনুযায়ী ২৮টি মেজর আইটেমের মধ্যে ২০টির জন্য ম্যানুফ্যাকচারার্স অথারাইজাশন লেটার দাখিল করা হয়নি। এছাড়া কেপিআই-এর দাখিল করা দরপত্রে অথারাইজড রিপ্রেজেন্টিটিভ-এর অথারাইজেশন লেটার সংযুক্ত করা হয়নি।

অন্যদিকে ফেরাম-এনএসএল জেভি (ফেরাম এস এ অ্যান্ড নেক্সট স্পেসেস লিমিটেড) এর দাখিলকরা দরপত্রে টেন্ডার ডকুমেন্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ম্যানফ্যাকচারার অথারাইজেশন লেটার (এমএএল), বিড সিকিউরিটি এবং কারিগরি জনবলের তথ্য যথাযথভাবে সংযুক্ত হয়নি।

এ প্রেক্ষিতে কারিগরি মূল্যায়নে শুধুমাত্র সিআইএল-জিএসআই জেভি (কনফিডেন্স ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেড অ্যান্ড দি জিএসআই গ্রুপ এলএলসি) গ্রহণযোগ্য দরদাতা হিসেবে সাইলোটি নির্মাণ করবে।

দেশে আটটির মধ্যে পাঁচটি সাইলো নির্মাণের চুক্তি ইতোমধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে। যার মোট চুক্তি মূল্য ১৬১১ কোটি ১২ লাখ টাকা অর্থাৎ বর্তমানে সাইলো নির্মাণ খাতে ডিপিপিতে সংস্থান রয়েছে ১০৭৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

এ সংক্রান্ত আলাদা দু'টি প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ