খুলনা | শনিবার | ১২ জুলাই ২০২৫ | ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

নারী শ্রমিকের মজুরি বৈষম্য দূর করতে হবে

|
১২:১৮ এ.এম | ২৫ নভেম্বর ২০২১


পুরুষ ও নারী শ্রমিকের মজুরি বৈষম্যের বিষয়টি আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় একেবারেই নতুন নয়। সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য অনেকটা দূর করা গেলেও নারী শ্রমিকরা এখনো মজুরি বৈষম্যের শিকার। মজুরি বৈষম্যের কারণে নারী ও পুরুষ শ্রমিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। নারী শ্রমিকরা পুরুষ শ্রমিকদের পাশাপাশি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন। টেকসই কৃষি ব্যবস্থায় নারীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলেই বিবেচিত হয়। 
বাংলাদেশে কৃষি খাতের সাফল্যের পেছনেও নারীদের বিশাল অবদান রয়েছে। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত নারী-পুরুষের মজুরির হার অনুযায়ী নারীদের মজুরি নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ‘কৃষিতে মজুরির হার’ শীর্ষক যে জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে উঠে এসেছে নারীদের মজুরি বৈষম্যের চিত্র। অথচ নারী কিংবা পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই কর্মঘণ্টা কিংবা কাজ একই, কিন্তু মজুরি মিলছে দুই রকম। শুধু নারী হওয়ায় পুরুষের চেয়ে কৃষি কাজে কম মজুরি মিলছে তাঁদের। এটি মেনে নিয়েই জীবিকার তাগিদে কাজ করছেন নারী কৃষি শ্রমিকরা। ২০১৮ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৭১.৫ শতাংশ নারী কৃষিকাজে নিয়োজিত। নারী কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা কোটি ছাড়িয়েছে। কৃষিকাজে জড়িত নারীদের প্রায় অর্ধেক ৪৫.৬ শতাংশ নারী বিনা মূল্যে শ্রম দেন। সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিসের সা¤প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, কৃষিতে নারীরা যে শ্রম দেন তার ৪৫.৬ শতাংশের ক্ষেত্রে তাঁরা কোনো পারিশ্রমিক পান না। আর বাকি ৫৪.৪ শতাংশের ক্ষেত্রে তাঁরা যে পারিশ্রমিক পান, তা বাজার মূল্যের চেয়ে কম। কৃষিপণ্য বাজারজাতের আগে প্রক্রিয়াকরণের যে ২২টি ধাপ রয়েছে, তার প্রায় ১৭টি ধাপে নারীর অংশগ্রহণ রয়েছে।
নারীর মজুরি বৈষম্য দূর করতে হলে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে। সমমজুরি সম্পর্কিত যেসব আইন কাগজে-কলমে রয়েছে, সেগুলো মাঠ পর্যায়ে যেন যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের দেশের নারীদের শুধু কৃষি নয়, বরং দেশের আপামর অর্থনৈতিক খাতেই তাঁদের অনবদ্য অবদান রয়েছে। নারীরা এখন সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছেন। তাই যেকোনো মূল্যে তাঁদের মজুরি বৈষম্য দূর করতে হবে। একজন নারী শ্রমিক পুরুষ শ্রমিকের মতোই সমান তালে কাজ করতে পারছেন। তাই সমাজের সাধারণ মানুষের মধ্যে নারী শ্রমিককে দুর্বল ভেবে কম মজুরি দেওয়ার যে প্রবণতা রয়েছে, তা দূর করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি।

্রিন্ট

আরও সংবদ