খুলনা | শনিবার | ১২ জুলাই ২০২৫ | ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

সরকারের ১১ দফা নির্দেশনা : ভাড়া নিয়ে ভোগান্তি আর নয়

|
১২:৩২ এ.এম | ১৪ জানুয়ারী ২০২২


গণপরিবহনে নৈরাজ্য নিয়ে লেখালেখি কম হয়নি। এখনো হচ্ছে। কোনো পরিবর্তন হয়েছে। হয়নি। বরং ক্ষেত্র বিশেষে বেড়েছে। এখন করোনাকাল চলছে। করোনাকে পুুঁজি করে ভাড়া নৈরাজ্য চরমে উঠে। এবারো ব্যতিক্রম নয়। করোনার সংক্রমণ রোধে গত রবিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ যে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছে, সে অনুযায়ী ১৩ জানুয়ারি থেকে গণপরিবহনে অর্ধেকের বেশিসংখ্যক যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। কিন্তু কীভাবে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে, তা বোধগম্য নয়। আগেও এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, ব্যবসায়িক কার্যক্রম- সব খোলা রেখে গণপরিবহনে আসনের অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী পরিবহন নিয়ে আবার নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে। বাস ও লঞ্চ মালিকরা আগের মতোই ভাড়া বৃদ্ধি চান। ফলে বাড়তি ভাড়ার জন্য কৃত্রিম সঙ্কটের শঙ্কা রয়েছে। পৃথিবীর সব দেশের মধ্যে বাংলাদেশে সড়কে নৈরাজ্য, হয়রানি এবং ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। জীবনের অধিকার সবচেয়ে বড় অধিকার। এ অধিকার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। করোনাকালীন দুঃসময়ে সাধারণ মানুষের এই নির্ভরশীলতাকে পুঁজি করে পরিবহন মালিকরা বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন। এতে সকাল বেলা ঘর থেকে বেরিয়ে অফিসমুখী বাস ধরতে গিয়ে প্রতিদিনই অনাকাক্সিক্ষত বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন কর্মজীবী মানুষ। পরিবহন খাতে এই নৈরাজ্য দিনের পর দিন চলতে পারে না। মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। কোথাও যাত্রীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজারও দেয়া হয় না। এ অবস্থায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গণপরিবহন চলাচলে বিধি-নিষেধ সহ বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এর আগেও ২০২০ সালের ২৬ মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ রোধের ‘লকডাউনে’ প্রথম দফায় ৬৮ দিন বাসসহ সব ধরণের গণপরিবহন বন্ধ ছিল। ওই বছর ১ জুন থেকে আসনের অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বাস চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। মালিকদের প্রস্তাবে সেবার বাস ও লঞ্চের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। গত বছর দুই দফা ‘লকডাউন’-এর পরও একই হারে ভাড়া বাড়িয়ে অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলেছিল বাস-লঞ্চ। করোনা দুর্যোগের কারণে এ সময়ে গণপরিবহনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ স্বাস্থ্য সতর্কতা অবলম্বন। গণপরিবহনগুলোতে গাদাগাদি করে যাত্রী নেয়ার নিয়ম না থাকলেও তা কমই কার্যকর হতে দেখা যায়। অন্তত এ সময়ের জন্য হলেও নির্দিষ্ট আসনের অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার প্রবনতা বন্ধ করতেই হবে। পাশাপাশি সঙ্কটে গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়ার ভোগান্তিটা যাত্রীসাধারণকে যেন পোহাতে না হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে। যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে তা পুষিয়ে নেন পরিবহন মালিকরা। সরকারকে সংঘবদ্ধ এই চক্রকে প্রতিহত করতে এগিয়ে আসতে হবে। যাত্রীসাধারণের বৃহত্তর স্বার্থেই অবিলম্বে এই অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধ করা উচিত বলে আমরা মনে করি। কেবল সরকারের সতর্কতাই যথেষ্ট নয় বরং আমরা মনে করি, বাস মালিক সমিতিসহ চালক ও যাত্রী সবারই সচেতন হওয়া জরুরি।

্রিন্ট

আরও সংবদ