খুলনা | রবিবার | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক আলম খান আর নেই

খবর বিনোদন |
০১:০৬ এ.এম | ০৯ জুলাই ২০২২


বাংলা গানের কিংবদন্তি সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক আলম খান আর নেই। তিনি শুক্রবার বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল­াহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন...আমরা তো আল­াহর এবং আমরা আল­াহর কাছেই ফিরে যাবো)। 
মরহুমের পুত্র-সঙ্গীত পরিচালক আরমান খান বলেন, ‘বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে বাবার মৃত্যু হয়েছে। বার্ধক্যজনিত কারণেই তিনি মারা গেছেন। গত এক-দেড় মাস থেকেই তার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। গত বৃহস্পতিবার তাকে লাইফ সাপোর্টেও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।’ 
আলম খানের জানাজা ও দাফনের বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন তার ছোট ছেলে আদনান খান। তিনি জানান, তার বাবার মরদেহ হাসপাতাল থেকে নেওয়া হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। সেখানেই বাদ আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে জানাজা। 
এদিকে বড় ছেলে আরমান খান জানান, তার বাবার মরদেহ সমাহিত করা হবে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে পারিবারিক কবরস্থানে। সেখানেই শায়িত আছেন আলম খানের স্ত্রী। তার পাশেই দাফন করা হবে আলম খানকে।
বাংলা সিনেমার গানে অবিস্মরণীয় নাম আলম খান। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি অসংখ্য কালজয়ী গান সৃষ্টি করেছেন। তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। আলম খানের জন্ম ১৯৪৪ সালের ২২ অক্টোবর সিরাজগঞ্জের বানিয়াগাতি গ্রামে। ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করেন তিনি। এই স্কুলে থাকা অবস্থায়ই গানের প্রতি আগ্রহী হন এবং মায়ের উৎসাহে তিনি গানের চর্চা শুরু করেন। এরপর বাবাও সমর্থন দেন। তার ছোট ভাই ছিলেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি পপ শিল্পী আজম খান। গানের ভুবনে আলম খানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৩ সালে। সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক রবিন ঘোষের সহকারী হিসেবে তিনি ‘তালাশ’ সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনা করেন। সাত বছর সহকারী হিসেবে কাজের পর ১৯৭০ সালে আলম খান একক সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে সাফল্য পেতে অনেকটা দেরি হয় তার। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘সারেং বৌ’ সিনেমার জন্য তিনি তৈরি করেন ‘ও রে নীল দরিয়া’ গানটি। দেশজুড়ে এটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। এখনো সমান জনপ্রিয় গানটি।
এরপর আলম খান আরও বহু কালজয়ী গান সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে উলে­খযোগ্য হচ্ছে-‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস দম ফুরাইলে ঠুস’, ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো গন্ধ বিলিয়ে যাই’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘কি জাদু করিলা পিরিতি শিখাইলা’, ‘তুমি যেখানে আমি সেখানে’, ‘সবাই তো ভালবাসা চায়’, ‘ভালবেসে গেলাম শুধু’, ‘চাঁদের সাথে আমি দেবো না তোমার তুলনা’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া’, ‘আমি তোমার বধূ তুমি আমার স্বামী’, ‘জীবনের গল্প বাকি আছে অল্প’, ‘মনে বড় আশা ছিল’, ‘সাথীরে যেও না কখনো দূরে’, ‘বেলি ফুলের মালা পরে’, ‘কাল তো ছিলাম ভাল’, ‘চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘ভালবাসিয়া গেলাম ফাঁসিয়া’, ‘তুমি তো এখন আমারই কথা ভাবছো’, ‘আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটারে’ ইত্যাদি। আলম খান তার ক্যারিয়ারে ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচবার পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে এবং একবার শ্রেষ্ঠ সুরকার হিসেবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ