খুলনা | শুক্রবার | ০৪ জুলাই ২০২৫ | ২০ আষাঢ় ১৪৩২

১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে সংশয় সিইসি’র’

খবর প্রতিবেদন |
০২:৩১ পি.এম | ০৪ অক্টোবর ২০২২


দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তা নিয়ে সংশয় রয়েছে খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের। ইভিএম কেনার নতুন প্রকল্প নিয়ে সংশয়ের কথা জানিয়ে সিইসি বলেন, আমাদের লক্ষ্য সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও নিশ্চয়তা নেই। সরকারের কাছে এ প্রকল্পের আর্থিক সংশ্লিষ্টতা যথার্থ মনে না হলে অ্যালাউ নাও করতে পারে।

ব্যালট বা ইভিএমের চেয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বর্তমান কমিশনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আজ মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সকালে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি জানান সংক্ষিপ্ত একটি মতবিনিময় ছিল। যারা এসেছিলেন তারা বিশিষ্ট ব্যক্তি। সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।

সিইসি বলেন, ইভিএম নিয়ে (জনমনে) যেসব পারসেপশন আছে, সেই সম্পর্কে কিছু জানতে চেয়েছেন তারা। উনারা বলেছেন ইভিএম নিয়েও তারা কাজ করেন। ইভিএম নিয়ে যে নেগেটিভ পারসেপশন বিরাজ করছে সেটাকে দূরীভূত করার জন্য উনারা সচেষ্ট আছেন। এজন্য উনাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি।

তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও নিশ্চয়তা নেই। কারণ এটা ডিপেন্ড করবে যদি সরকার এ প্রকল্প অনুমোদন করেন। এর আর্থিক সংশ্লিষ্টতা যেটা আছে সেটা যদি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিতে যথার্থ মনে না হয় তাহলে সরকার এ ধরনের প্রজেক্ট অ্যালাউ নাও করতে পারে।

ইভিএম দিয়ে হ্যাকিং সম্ভব নয়

বর্তমান কমিশন বিচার বিশ্লেষণ ও মতামত নিয়ে ইভিএম সম্পর্কে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা এসেই কিন্তু ইভিএমকে সমর্থন করিনি। আমাদের তরফ থেকে ইভিএম নিয়ে যে বিচার বিশ্লেষণগুলো করেছি, আমাদের ছয় মাস হয়েছে। আমরা দীর্ঘ সময় নিয়ে বিভিন্ন স্তরে, বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিতে আমরা যন্ত্রটাকে বোঝার চেষ্টা করেছি এবং ব্যাপক আলোচনা করেছি। ব্যাপক অংশগ্রহণও হয়েছে ইভিএম সস্পর্কে। এর মাধ্যমে ম্যানিপুলেশন হয় এমন কেউ দেখাতে পারেনি। বলাতে পারিনি। এখন প্রকাশ্যে সবাই বলছেন অ্যাটলিস্ট ইভিএম দিয়ে হ্যাকিং সম্ভব নয়। এই ধারণাও আগে ছিল না যে এটা একটা স্টান্ড অ্যালোন মেশিন। হ্যাকিং যে সম্ভব নয় এই ধারণাও আগে ছিল না, এখন হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা উনাদের বলেছি আপনারা আপনাদের কাজ করে যান। আমরা আপনাদের কোনও কাজে অংশ নিতে পারবো না। এটা সম্ভব নয়। উনারাও আমাদের বলেছেন আপনারা ইভিএম নিয়ে কোনও প্রচারণা করছেন না। আমরা বলেছি এটা আমরা দেখবো। আমরা ইভিএম ব্যবহার করবো। যদি ইভিএম ব্যবহার করি তার জন্য ভোটার এডুকেশনের একটা প্ল্যান আমাদের আছে। আমরা এখনও শুরু করিনি। হয়তো শুরু করবো।

কূটনীতিকরা নির্বাচন প্রভাবিত করার মতো কথা বলবেন না

সিইসি আরও বলেন, উনারা একটা বিষয়ে বলতে চেয়েছেন আমাদের এখানে হয়তো বিদেশি ডিপ্লোম্যাটরা আসেন। উনারা জানতে চেয়েছেন ডিপ্লোম্যাটরা আমাদের প্রভাবিত করেন কিনা। আমি বলেছি উনারা ডিপ্লোম্যাট। উনারা অত্যন্ত প্রশিক্ষিত। নির্বাচন নিয়ে প্রভাবিত করার মতো কোনও কথা কখনও বলেননি এবং বলবেনও না। আমাদের সঙ্গে অন্তত বলবেন না। উনারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, বাংলাদেশের আগামী ইলেকশনটা সুন্দর হবে। অংশগ্রহণমূলক হবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বিদেশি কূটনীতিকরা শুধু আমাদের সঙ্গেই নয়, এর আগে যারা ইলেকশন কমিশন ছিল তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এটা এক ধরনের সৌজন্যে সাক্ষাৎকার। এজন্য উনারা আমাদের সঙ্গে সাক্ষাতে আসেন। এ বিষয়টি আমরা পরিষ্কার করেছি।

তিনি বলেন, বিদেশি কূটনীতিকরা অনেক সময় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। কোনও অ্যাসিস্টেন্ট লাগবে কিনা জানতে চান। তবে আমরা এখনও তাদের এ ধরনের কোনও প্রস্তাব দেইনি যে আপনাদের অ্যাসিস্ট্যান্ট আমাদের প্রয়োজন হবে।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মনোযোগ

ব্যালট বাক্সে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বর্তমান কমিশনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এমনটি জানিয়ে কাজী হাবিবুল আওয়াল বলেন, আমরা যেটা চাচ্ছি ইভিএম বা ব্যালট মূল কথা নয়। মূল কথা হলো সবাইকে চেষ্টা করতে হবে একটা সুন্দর, সুষ্ঠু অবাধ, নির্বিঘ্ন ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। ওই নির্বাচনে ইভিএম থাকলো কী ব্যালট থাকলো সেটা বড় কথা নয়। নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক না হয় এবং ইফেক্টিভ প্রতিদ্বন্দ্বিতা যদি না হয়, তাহলে ইভিএম কীভাবে বিহ্যাভ করবে-ব্যালট কীভাবে বিহ্যাভ করবে সেটা নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। বা ইভিএম-ব্যালটের আদৌ প্রয়োজন হবে কিনা সেটাও নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।

তিনি সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আবারও বলেন, আমরা সব সময় বলছি আপনারা নির্বাচনে আসুন, অংশগ্রহণ করুন। অংশগ্রহণ করে নির্বাচনটাকে ফলপ্রসূ করুন। যাতে নির্বাচনটা সুন্দর হয় জনমানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।

্রিন্ট

আরও সংবদ