খুলনা | বুধবার | ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১

১১ মাস পর ফের রাজনীতির মাঠে নামছেন মঞ্জু

মোহাম্মদ মিলন |
০১:৩১ এ.এম | ২০ অক্টোবর ২০২২


অবশেষে ১১ মাস পর প্রকাশ্য রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ফিরছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও নগর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনের মধ্যদিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণের কথা ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে। সর্বশেষ গত বছরের ১২ ডিসেম্বর খুলনা প্রেসসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। 
স¤প্রতি সারাদেশে গণসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে সমাবেশ শেষ হয়েছে। আগামী ২২ অক্টোবর খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আর এই কর্মসূচিকে ঘিরে আলোচনায় উঠে আসেন সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু। 
বুধবার দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, নজরুল ইসলাম মঞ্জু কখনোই নিস্ক্রিয় নয়, সে সবসময়ই সক্রিয়। সে তার দলবল নিয়ে এই সমাবেশে থাকবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। সমাবেশে সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের অংশ গ্রহণের আহবান জানানো হয়েছে। 
এ বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, বিএনপি’র জাতীয় কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। দলের মহাসচিব গত সোমবার পার্টির কর্মসূচি সফলের জন্য আহবান জানিয়েছেন। দলের নেতা-কর্মী এবং জনগনকে নিয়ে যেন এই কর্মসূচি সফল হয় তার জন্য কাজ করতে বলেছেন। মহাসচিবের এই আহবান নিয়েই আমরা গত দুইদিন বৈঠক করেছি। এই বৈঠকগুলোর যে প্রস্তাবনা সেগুলো আমরা মহাসচিবকে জানিয়েছি। এটা জাতীয় সমাবেশ এবং কেন্দ্রীয় কর্মসূচি। খুলনার নেতা-কর্মীরা এই কর্মসূচির বাইরে থাকবে না। কমিটি গঠনসহ নেতা-কর্মীরা যে সকল দাবি জানিয়েছে সেই দাবিগুলোই চলমান। শুধুমাত্র জাতীয় ও দলীয় ছাড়াও জনগনের স্বার্থে বৈঠকে আমাদের নেতা-কর্মীরা গণসমাবেশের কর্মসূচিতে যোগদানের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) প্রেস ব্রিফিং আহবান করেছি, সেখানেই আমরা মহাসমাবেশসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো। আমি নিজেও প্রেস ব্রিফিংয়ে থাকবো ইনশাআল­াহ।  
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের গত ৯ ডিসেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপি’র ৩ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে কমিটি থেকে বাদ পড়েন নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও তার অনুসারীরা। গত ১২ ডিসেম্বর দলের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এর প্রেক্ষিতে ১৪ ডিসেম্বর শোকজ করা হয় মঞ্জুকে। ২৫ ডিসেম্বর তাকে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নজরুল ইসলাম মঞ্জুর প্রায় ৪৩ বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের এমন পরিণতি মানতে পারেননি খুলনার বিএনপি নেতারা।
নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে অব্যাহতির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে খুলনা মহানগর বিএনপি’র সহ-সভাপতি, যুগ্ম-সম্পাদক, ৫ থানার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং ওয়ার্ড কমিটির প্রায় ৫ শতাধিক নেতা পদত্যাগ করেন। দলের কর্মকান্ডে এখনও তারা নিস্ক্রিয়। বর্তমান মহানগর বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটিতে তাদের কারোরই জায়গা হয়নি। ওয়ার্ডের নতুন কমিটি থেকেও বাদ পড়েছেন তারা। দলের বিপুল সংখ্যক নেতাদের বাইরে রেখেই কর্মকান্ড পরিচালনা করছে বিএনপি। 
এদিকে সারাদেশে গণসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে সমাবেশ শেষ হয়েছে। আগামী ২২ অক্টোবর খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দলের বড় একটি অংশকে বাইরে রেখে এতো বড় সমাবেশ আয়োজন নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে দলের মধ্যে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদেরও জানানো হয়েছে। তারা কথা বলেছেন স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে। সেখান থেকেও সবুজ সংকেত পাওয়া গেছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা। এদিকে গত ১১ মাসে প্রকাশ্যে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে দেখা না গেলেও সামাজিক বিভিন্ন কর্মসূচি তিনি পালন করেছেন। তবে তার অনুসারীরা রমজানে ইফতার মাহফিলসহ বিভিন্ন সময়ে কর্মসূচি পালন করেছে। 
এতোদিন কেন দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেননি এমন প্রশ্নে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, কমিটি গঠনের পর ওই কমিটি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছিলাম। আর তখন বর্তমান কমিটির পাল্টা কোন কর্মসূচি না করার ঘোষণাও দিয়েছিলাম। যে কারণে রাজনৈতিক পাল্টা কোন কর্মসূচি পালন করিনি। এখন দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি সফল করতে হবে। প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।  

্রিন্ট

আরও সংবদ