খুলনা | শনিবার | ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩০

পাঠদানে ব্যাহত, সাত দিনের মধ্যে কাজ শুরুর প্রতিশ্রুতি

থমকে আছে রূপসার বাগমারা আল-আক্সা দাখিল মাদ্রাসা চার তলা ভবনের নির্মাণ কাজ

আল মাহমুদ প্রিন্স |
০১:০৯ এ.এম | ২৭ অক্টোবর ২০২২


থমকে আছে রূপসা উপজেলাধীন বাগমারা আল-আক্সা দাখিল মাদ্রাসার চার তলা ভবনের নির্মাণ কাজ। তফসিল অনুযায়ী আঠারো মাসের মধ্যে ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। অথচ চলি­শ মাসের অধিক অতিবাহিত হলেও ভবনটি নির্মাণ কাজে কোনো আশার আলো দেখা যাচ্ছে না এমন মন্তব্য মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের। নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ না হওয়ায় একদিকে যেমন ভবনের রডসহ অন্যান্য অংশে ক্ষতি হচ্ছে। অপর দিকে, পাঠদান মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এমনই মন্তব্য করেছেন প্রতিষ্ঠানের সুপারসহ শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রূপসা উপজেলার নৈহাটী ইউনিয়নের বাগমারা আল-আকসা দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের সুন্দর পরিবেশে পাঠদানের লক্ষ্যে চারতলা বিশিষ্ট ভবন বরাদ্দ হয়েছে। যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ৩৭ লাখ টাকা। তফসিলের কার্যবিবরণীতে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের চারতলা ভীতসহ চার তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ এবং তাতে বিশুদ্ধ পানি এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা করতে হবে। ‘সাহাবাতাজ-সুমি’ নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি চারতলা ভবন নির্মাণ কাজের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।  
খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বাগমারা আল-আকসা মাদ্রাসার চার তলা একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর নির্বাচিত মাদ্রাসা সমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পধীন ‘বাগমারা আল-আকসা দাখিল মাদ্রাসা’ নামক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চারতলা ভবন নির্মাণ কাজ নির্মাণ করা শুরু হয়। তফসিল অনুযায়ী ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার আঠারো মাসের মধ্যে কাজ শেষ সমাপ্তি করতে হবে। অথচ সেখানে চলি­শ মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে।  
অভিযোগ রয়েছে, ভবনের দ্বিতল ভবন পর্যন্ত কাজ হওয়ার পর কাজ থমকে যাওয়ায়  মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ‘সাহাবাতাজ-সুমি’ নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলে শুধু আশ্বাস আর প্রতিশ্রুতি। অতিবাহিত হয়েছে চলি­শ মাসেরও বেশি। 
পাইকগাছার কপিলমুনি গ্রামের বাসিন্দা সহকারী ঠিকাদার মোঃ শাহাদাৎ হোসেন ডাবলু বলেন, ‘মহামারী করোনার কারণে কাজ বন্ধ ছিলো। দ্রুত কাগজপত্র ম্যানেজ করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির চারতলা ভবনের অসমাপ্ত কাজ শুরু করা হবে।’   
প্রতিষ্ঠানের সুপার মাওলানা এইচ এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘ভবনের নির্মাণ কাজ দুইতলা পর্যন্ত করার পর কাজ থমকে আছে। তফসিল অনুযায়ী কাজ শুরু হওয়ার ১৮ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। অথচ গড়িমসি করতে করতে ৪০ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনো তাদের কোনো খোঁজ-খবর নেই। যোগাযোগ করলে ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর শুধু আশ্বাস আর প্রতিশ্র“তি। ভবনের কাজ শেষ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। ভবনের অসমাপ্ত কাজ যাতে দ্রুত শুরু হয় এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।’ 
শিক্ষা অধিদপ্তর খুলনা’র সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল হক বলেন, ‘সাহাবাতাজ-সুমি’ নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী পলাশ মহামারী করোনায় মারা যাওয়ায় নির্মাণ কাজ থমকে আছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। ঠিকাদার পলাশ মারা যাওয়ার পর আদালতের নির্দেশে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে পলাশের স্ত্রী দায়িত্ব পায়। তিনি বলেন, চারতলা ভবন নির্মাণ কাজের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার ব্যাপারে মঙ্গলবার পলাশের স্ত্রীর সাথে তার কথা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ভবনের অসমাপ্ত কাজ শুরু করা হবে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।’ 
প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও রূপসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুবাইয়া তাছনিম বলেন, ‘চারতলা ভবন নির্মাণের অসমাপ্ত কাজ যাতে খুব শিগগিরই শুরু করা যায় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

প্রিন্ট

আরও সংবাদ