খুলনা | সোমবার | ১২ মে ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

সহকারী পরিচালকের অভিযানে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ

খুমেক হাসপাতালে জরুরি অপারেশন থিয়েটারে রোগীদের ওষুধ চুরির মহোৎসব

বশির হোসেন |
০১:০৩ এ.এম | ০১ নভেম্বর ২০২২


সাধারণ রোগীদের ওষুধ চুরির মহোৎসব চলছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি অপারেশন থিয়েটারে। নানান কৌশলে কয়েক দফায় জরুরি অপারেশনের নামে রোগীদের কাছ থেকে ওষুধ কিনিয়ে তা বাইরে বিক্রি করছে দেদারছে। বিভিন্ন সময় এসব ঘটনা সামনে আসলেও দৃশ্যমান কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেয়ায় রীতিমত ওষুধ চুরির মহোৎসব চলছে। গতকাল সোমবার হাসপাতালের সহকারী পরিচালকের অভিযানেও ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ে।
সংশ্লি¬ষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিজার, দুর্ঘটনাসহ জরুরি অপারেশনের প্রয়োজন এমন রোগীদের জন্য খুমেক হাসপাতালের তৃতীয় তলায় পূর্ব পাশে জরুরি অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করা হয় ২০১৮ সালের শেষের দিকে। এতে অপারেশনের জন্য ঝুলে থাকা রোগীদের একটা সুরাহা হলেও সরকারিভাবে সরবরাহকৃত ওষুধ ব্যবহার করে একই ওষুধ রোগীদের কাছ থেকে একাধিকবার কেনার অভিযোগ নিত্যদিনের। গত বছর ২১ নভেম্বর রোগীদের ওষুধ পাচারের সময় এক কর্মচারী হাতেনাতে আটকের পর তাকে নিয়ে বিপুল পরিমাণ ওষুধ জব্দ করে হাসপাতাল প্রশাসন। সে সময় দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ওষুধ চুরির মহোৎসব চলছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সোমবার সার্জারি বিভাগ এবং অপারেশন থিয়েটারের ইনডেন্ট (মালামাল সরবরাহ)-এর নির্ধারিত দিন ছিলো। এক সপ্তাহের জন্য ৫শ’ ক্যানলা, গলভস, ফলিস ক্যাথেটারসহ অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় অধিকাংশ মালামাল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু এটা অপারেশনের থিয়েটারের নার্সিং ইনচার্জ নিয়ে গেলেও তাদের সাথে কোন ধরনের সমন্বয় না করে সংশ্লি¬ষ্ট সার্জনরা রোগীদের অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ওষুধ ও সার্জিক্যাল সামগ্রী একটা বড় প্রিন্টেড স্লি¬পের মাধ্যমে কিনতে বলে। প্রত্যেকটি অপারেশন এর জন্য ন্যূনতম তিন হাজার থেকে ৮ হাজার টাকার ওষুধ কিনতে বাধ্য হচ্ছে রোগীরা। গতকাল কালাম (ছদ্মনাম) অপারেশনের জন্য গ¬ভস সিরিঞ্জ, স্যালাইনসহ ৫ হাজারের বেশি টাকার ওষুধ কিনেছে। কিন্তু অপারেশনের সময় একাধিকার শর্ট স্লিপ দিয়ে তাদের আবারও দেড় হাজার টাকার ওষুধ কিনে আনতে বলেছে। অপারেশনের জন্য অপেক্ষমান অন্তত ৫ জন রোগীর সাথে কথা বলে একই ধরনের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উছেছে। এদিকে গতকাল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী অভিযান চালায় এই অপারেশন থিয়েটারে এখানে রোগীদের সাথে কথা বলে হাসপাতালের সার্জিক্যাল মালামালের খাতা মিলালে সেখানে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পরে। তিনি সরবরাহকৃত সকল ওষুধ এর আপডেট হিসাব সম্বলিত তালিকা টানানোর জন্য একদিনের সময় বেঁধে দেন। এছাড়া সরবরাহকৃত সকল ওষুধ সংশ্লি¬ষ্ট সার্জারি ওয়ার্ডের সাথে সমন্বয় করার জন্য ২৪ ঘন্টা সময় বেঁধে দেন। 
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী বলেন, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসাবে জরুরি অপারেশন থিয়েটারে অভিযান চালাই। সেখানে কিছু অনিয়ম বা সমন্বয়হীনতা দেখতে পেয়েছি। নির্দেশনা দিয়েছি একদিনের মধ্যে দৃশ্যমান উন্নতি হবে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

্রিন্ট

আরও সংবদ