খুলনা | রবিবার | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

খুলনার যুব রাজনীতি থেকে দুই নেতার আবেগঘন বিদায় : তারপরও খুশি

আল মাহমুদ প্রিন্স |
০১:৩৩ এ.এম | ২২ জানুয়ারী ২০২৩


যুব রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছেন খুলনা জেলা যুবলীগের দুই শীর্ষ নেতা। দুইজনই দলের পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতা। একজন হলেন বর্তমান খুলনা জেলা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান জামাল ও অন্যজন হলেন খুলনা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু এমপি। দীর্ঘ বিশ বছর ধরে খুলনা জেলা যুবলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন এ দুই নেতা। দলের দুঃসময়ে জীবনবাজী রেখে রাজপথে আন্দোলন করেছেন। শত বাধা ও হামলা-মামলার পর কখনো পিছু হটেননি এ দুই নেতা। ছাত্রলীগের তৃণমূল থেকে উঠে আসেন তারা। জেলা যুবলীগের রাজনীতিতে আসার আগে তারা জেলা ছাত্রলীগের রাজনীতি আসেন। জাঁকজমক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে বিদায় নেন এ দুই নেতা। যুবলীগের রাজনীতিতে বেঁধে দেওয়ার বয়স, শারীরিক সক্ষমতা ও সাংগঠনিক দক্ষতা থাকা সত্তে¡ও যুব রাজনীতি থেকে তাদের আবেগঘন বিদায় নিতে হচ্ছে। 
তবে এ বিদায় কোনো বেদনার নয়, এ বিদায় হচ্ছে গৌরবের ও বর্ণাঢ্য রাজনীতির পদোন্নতি ও বর্ণাঢ্য সম্মেলনের মধ্য দিয়ে। যে কারণে তারা বিদায় নিলেও রাজনীতির মধ্য গগনে এসে তারা খুশি মনে চলে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে এই দুই রাজনীতিক তাদের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের স্বীকৃতি পেয়েছেন। এর মধ্যে ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা কামরুজ্জামান জামাল বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হয়ে গোটা জেলায় সরব উপস্থিতি রেখে চলেছেন। দলের তৃণমূল নেতাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। দলের অপর নেতা সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবু জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ছাড়ার অল্প কিছু দিনের মধ্যে তিনি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। অতি অল্প সময়ে তিনি গোটা জেলায় বিচরণ করেন। জয় করেন দলের নেতা-কর্মীদের মন। বিশেষ করে অনগ্রসর জনপদ হিসেবে পরিচিত খুলনার কয়রা ও পাইকগাছার সর্বস্তরের নেতাদের হৃদয় জয় করেন। যার প্রাপ্য হিসেবে তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান এবং এমপি নির্বাচিত হন। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মানিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মোঃ কামরুজ্জামান জামালের প্রতিক্রিয়া : দীর্ঘদিন পর বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে খুলনা জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আমরা খুবই আনন্দিত কারণ দীর্ঘ বিশ বছর ধরে সম্মানের সঙ্গে জেলা যুবলীগের রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে পারছি। ২০১৫ সালে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছি। এরপর ২০১৯ সালে আমি খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছি। আমারও খারাপ লাগতো যথাসময়ে জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়নি, নতুন নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাতে পারিনি। এর জন্য আমরা দায়ী না। বিভিন্ন সময়ে বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও- পোড়াও আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য দল সার্বক্ষণিক ব্যস্ত ছিলো। যার জন্য নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন হয়নি। কোভিড-১৯ মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা তিন বছর পিছিয়ে গেছি। সবকিছুর মূলে আমাদের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যুবলীগের অভিভাবক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সোহেল উদ্দিনের উদ্যোগেই আজ বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে তার সার্বিক সহযোগিতা ও আপ্রাণ চেষ্টায় যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হতে যাচ্ছে। যুবলীগের নেতৃবৃন্দ নতুন একটি কমিটি, নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে ২৪ জানুয়ারি হস্তান্তর করবো ইনশাআল­াহ। 
সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু : ২০১৫ সালে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হই। জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার পর আমি মানসিকভাবে খুলনা জেলা যুবলীগ থেকে বিদায় নিয়েছি। এরপরও যেহেতু যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আমাকে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে রেখেছিলেন। আমি আমার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে পালন করতে না পারলেও আমি চেষ্টা করেছি জেলা যুবলীগকে শক্তিশালী করার। আমি জেলা ছাত্রলীগ থেকেও সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিদায় নিয়েছিলাম। আগামী ২৪ জানুয়ারি বর্ণাঢ্য আয়োজনে যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে বিদায় নিচ্ছি। আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে, আমি এই সময় জাতীয় সংসদের সদস্য। এছাড়া এই যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা ফজলুল হক মনির সন্তান যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ’র হাত থেকেই আমাদের বিদায় এটা আমার সম্মান আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। যুবলীগের নতুন নেত্বত্বে যারা আসবে তাদের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

্রিন্ট

আরও সংবদ