খুলনা | মঙ্গলবার | ১৩ মে ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

যৌতুক রোধে কার্যক্রম তৎপরতা বাড়াতে হবে

|
১২:৩৬ এ.এম | ২১ মার্চ ২০২৩


যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি। দেশের প্রচলিত আইনে যৌতুক নেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইন অনুযায়ী, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিয়ের আগে ও পরে বা বিয়ে চলাকালে যেকোনো সময় যেকোনো সম্পদ বা মূল্যবান জামানত হস্তান্তর করা বা করতে সম্মত হওয়া, যৌতুক গ্রহণ ও যৌতুক প্রদান অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এই অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর এবং সর্বনিম্ন এক বছর কারাদন্ড বা জরিমানা বা উভয় দন্ড হতে পারে।
বাস্তবতা হচ্ছে, আইন করেও এই ঘৃণ্য প্রথা থেকে বের হয়ে আসা যায়নি। যৌতুকের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারেনি সমাজ ও দেশ। যৌতুকের কারণে এখনো নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। ঘটছে বিবাহ বিচ্ছেদসহ আরো অনেক অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। হত্যারও শিকার হচ্ছেন অনেক নারী। যৌতুকের কারণে নারীর ওপর নির্যাতন এবং পারিবারিক সহিংসতাও ঘটছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ছয়জন, মারা গেছেন দু’জন। ২০২২ সালে যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন ৮১ জন। মোট নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৮৩ জন। মামলা হয়েছে ১৩১টি। এ ছাড়া গত বছর পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৫২০ জন নারী। এর মধ্যে স্বামীর হাতে হত্যার শিকার হয়েছেন ২২৪ জন। আর বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের হিসেবে গত জানুয়ারি ও ফেব্র“য়ারি মাসে যৌতুকের কারণে ১৩ জন নির্যাতন ও পাঁচজন হত্যার শিকার হয়েছেন।
২০২০ সালের নভেম্বরে ৩১ সদস্যের নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ এবং যৌতুকবিরোধী জাতীয় কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় কমিটি গঠনের পরিপত্র জারি করে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। কমিটির কার্যপরিধিতে রয়েছে সারা দেশে যৌতুকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ার যাবতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন। যৌতুক নির্যাতন বন্ধে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ, গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও মনিটর করবে এই কমিটি। কিন্তু এই কমিটি গঠনের পর থেকে মাত্র একবার মিটিং হয়েছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ এবং যৌতুক বিরোধী জাতীয় কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় কমিটিকে আরো সক্রিয় হতে হবে। সারা দেশে যৌতুকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ার যাবতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নের পাশাপাশি এই কমিটি যৌতুক নির্যাতন বন্ধে পরিকল্পনা করবে ও দিক নির্দেশনা দেবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

্রিন্ট

আরও সংবদ