খুলনা | শনিবার | ১০ জুন ২০২৩ | ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার পর্ব-২

শামীমা আহমেদ, নিউট্রিশনিস্ট এন্ড ডায়েট কনসাল্টেন্ট |
০১:১৫ এ.এম | ২৪ মার্চ ২০২৩


পবিত্র মাহে রমজান প্রতিটি মুসলমানের কাছে সিয়াম সাধনার মাস। পাশাপাশি রমজান মাসে ইফতারকে ঘিরে থাকে অনেক আয়োজন। পরিবারের ছোট-বড় সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে পুষ্টিকর ইফতার আয়োজনে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। প্রথমেই ইফতারিতে প্রচলিত কিছু পরিচিত খাবার নিয়ে আজকের এ আয়োজন। আমরা খুব সহজেই স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে গ্রহণ করতে পারি।
সারাদিন রোজা শেষে আমাদের তৃষ্ণা মেটায় এবং সতেজ করে দেয় শরীরকে যে পানীয় সেটা হলো শরবত যা ইফতারের মূল আকর্ষন। কিন্তু অনেকেই এটাকে বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে বিভিন্ন ধরনের রঞ্জক পদার্থ  ব্যবহার করে থাকেন, যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
শরবত : নিরাপদ পানি, লেবু, আখের গুড় দিয়ে তৈরি অতি সাধারণ এই পানীয় আপনার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত। বেল, ইসুফগুলের ভুষি, ডাবের পানি আপনার শরবতের তালিকায় এগুলো রাখতে পারেন।
ছোলা : প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেলস সমৃদ্ধ একটি খাবার। এটি না হলে ইফতারি পরিপূর্ণ নয় অনেকের কাছে। অবশ্যই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইফতার। কিন্তু অতিরিক্ত তেল-মসলা দিয়ে রান্না করে আপনার ক্ষতির কারন হচ্ছে না তো। সিদ্ধ ছোলা, টমেটো, শশা, পেঁয়াজ, মরিচ, ধনেপাতা, গাজর মিক্সড করে সুন্দর কালারফুল একটি মেনু রাখতে পারেন আপনার ইফতারিতে। 
সবজি খিচুড়ি : কয়েক প্রকার ডাল, বিভিন্ন ধরনের সবজি যেমনঃ লাউ, পেঁপে, মিষ্টিকুমড়া, গাজর,  ফুলকপি, বাঁধাকপি, পটল ইত্যাদি এবং সাথে চিকেন মিক্সড করে একটি মজাদার ইফতার আপনার মেনুতে রাখতে পারেন। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলস, ফাইবার সব ধরনের খাদ্য উপদানই আপনি পাবেন।
দই চিড়ার স্মুদি : দই, চিড়া, কলা, খেজুর, আপেল এর মিশ্রণে তৈরি স্মুদি এটি একটি  স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার। আপনি এখান থেকে ভালো প্রোয়োবায়োটিক পাবেন যা আপনার পাকস্থলীকে হেলদি রাখতে সহায়তা করবে। প্রয়োজনীয় ভিটামিন,  মিনারেলস পাবেন যা আপনার শক্তি বর্ধনে সহায়তা করবে ও সতেজ রাখবে। ক্যালসিয়াম, আয়রন ও পটাসিয়াম এর চাহিদা পূরণ করবে। 
মিষ্টি জাতীয় খাবার : ফিরনি, পায়েস, জিলাপি, বুন্দিয়া ইত্যাদি এই খাবার তৈরি বা ক্রয়ের সময় সুগন্ধি বা রঞ্জক পদার্থ দেয়া বা ক্রয় করা থেকে বিরত থাকুন।
ভাজাপোড়া : চপ, পিয়াজু, বেগুনি, কাবাব, টিকিয়া, বরা যা ইফতারির কিছু লোভনীয় মেনু। কিন্তু সারাদিন রোজা শেষে আপনার পাকস্থলী কতটা গ্রহণ করতে পারবে সেটা আপনাকেই ভাবতে হবে। আপনি হালকা তেলে ভাজা যেকোনো একটি মেনু বেছে নিতে পারেন মাঝে মাঝে। তবে সেটা যেন একই তেলে বার বার গরম করে ভাজা না হয়। তেল বার বার গরম করলে সেটাতে ট্রান্স ফ্যাট তৈরি হয় যা অস্বাস্থ্যকর ও মারাত্মক  ক্ষতিকর। 
এছাড়াও আপনার ইফতারির মেনুতে রাখতে পারেন বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফল (তরমুজ, বাঙ্গি, কলা.......ইত্যাদি ) যা খনিজ উপাদানের চাহিদা পূরণ করে আপনাকে সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখতে সহায়তা করবে।
সতর্কতা :    
১. একইসাথে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
২.পছন্দের মেনুগুলো একই দিনে না খেয়ে প্রতিদিন একটি করে মেনু সিলেক্ট করুন।
৩. ইফতারির শুরুতে এক গ্লাসের বেশি পানি পান করবেন না। কিছু সময় পর পর পানি পান করুন। খাবারের সাথে সাথে অতিরিক্ত পানি পান করলে অস্বস্তি অনুভব হবে তাছাড়া হজমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। 
৪. একই তেল বার বার গরম করা থেকে বিরত থাকুন।
লেখক : কর্মরত, ডলফিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কুষ্টিয়া। 

প্রিন্ট

আরও সংবাদ