খুলনা | মঙ্গলবার | ১৩ মে ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

আহলান ও সাহলান হে মাহে রমজান

মুফতি রবিউল ইসলাম রাফে |
০১:১৯ এ.এম | ২৪ মার্চ ২০২৩


সীমাহীন রহমত ও বরকতের পসরা সাজিয়ে আর নাজাতের বার্তা নিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রোজার মাস। সারাবিশ্বের  তৌহিদী জনতাও প্রস্তুত এ মাসকে সাদর অভ্যর্থনা জানানোর জন্য। আহ্লান, সাহ্লান হে রমজানুল মোবারক। আমাদের অভিধানে রোজা শব্দটি মূলতঃ ফারসী ও উর্দু ভাষা থেকে এসেছে। এ কারণে আমরা এটাকে রোজার মাস হিসেবেই চিনি। বাংলাতে রোজা বলা হলেও মূলতঃ এর আরবি নাম হলো শাহরু রমাদন বা রমজান মাস। আর রোজার আরবি প্রতিশব্দ হলো সিয়াম। অশেষ কল্যাণের ফল্গুধারায় সিক্ত সিয়াম সাধনের এই মাসে আল­াহর রহমত বৃষ্টি ধারার ন্যায় ঝরতে থাকে এবং প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়। এ মাসে একটি নফল আদায় করলে অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করার সমান ছওয়াব পাওয়া যায়; আর প্রতিটি ফরজের ছওয়াব অন্য মাসের ৭০টি ফরজের ছওয়াবের সমান দেওয়া হয়। মহান আল­াহ তা’য়ালার কি অপরিসীম দয়া ও মেহেরবাণী! এ কারণে রোজার মাসকে পুণ্যের বসন্ত বা নেকির মওসুম বলা হয়। দুনিয়ার প্রত্যেকটি জিনিষের একটি উপযুক্ত সময় আছে; ব্যবসায়ীদের লাভের একটি মওসুম আছে, প্রতিটি ফসলের একটি নির্দিষ্ট ঋতু আছে। এমনিভাবে সর্বাধিক নেকী কামায়েরও একটি সময় আছে। আর এটা হলো এই রোজার মাস। আমরা যাতে এই মাসে বেশী বেশী নেকী অর্জন করতে পারি তার জন্য আজ থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে এবং আমাদের দুনিয়াবি কাজ কিছুটা কমিয়ে নেক আমলে বাড়তি সময় দিতে হবে। বুদ্ধিমানের কাজ হলো, পবিত্র এই মাসটি কোরান তেলওয়াত, জিকির-আজকার, দান-খয়রাত ও অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে কাটানো।  এই মাসে দুর্বৃত্ত শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় যাতে আল­াহর প্রিয় বান্দাদের নেক কর্মগুলো নষ্ট করতে না পারে। এই মাস আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের মাস। এই মাসের প্রথম দশকে রয়েছে রহমত, দিত্বীয় দশকে মাগফিরাত এবং তৃতীয় দশকে জাহান্নাম থেকে নাজাত। রমজানের রোজা আমাদের উপর ফরজ। মহান আল­াহ জাল­াশানুুহ্ এরশাদ করেন, হে ইমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপরও ফরজ করা হয়েছিল যাতে তোমরা তাকওয়া বা  আল­াহ ভীতি অর্জন করতে পার (বাকারা: ১৮৩)। এই মাসের ফজিলতের অন্যতম কারণ হলো এই মাসেই মহাপবিত্র গ্রন্থ কুরআন নাজিল হয়েছিল। মহান আল­াহ রব্বুল আ’লামীন ঘোষণা করেন, রমজান মাসই হল সে মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য স্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে এই মাসটি পাবে সে এ মাসের রোজা রাখবে (বাকারাঃ ১৮৫)। (লেখক: আরবী সাহিত্যিক ও মুহাদ্দিস, জামি’য়া ইসলামিয়া মারকাযুল উলূম, বাগমারা, খুলনা)

্রিন্ট