খুলনা | শনিবার | ১০ জুন ২০২৩ | ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

রমজানের সাথে আসমানী গ্রন্থ নাজিলের সম্পর্ক

মুফতি রবিউল ইসলাম রাফে |
০১:২৪ এ.এম | ২৫ মার্চ ২০২৩


আজ ২ রমজান। রহমত দশকের দ্বিতীয় দিন। রমজান মাসের সাথে পবিত্র কুরআন এবং পূর্বেকার সমস্ত আসমানী গ্রন্থ নাজিলের এক খাছ সম্পর্ক রয়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) কে  ফেরেশতা জিব্রাইল (আঃ) রমজান মাসে সম্পূর্ণ কুরআন তেলওয়াত করে শুনাতেন এবং নিজেও আল­াহর রসুলের কাছ থেকে তা শুনতেন। এই কারণে সুন্নত হিসেবে সারা বিশ্বের মুসলিমগণ সম্পূর্ণ তারাবীতে গোটা কুরআন খতম করে থাকেন। তাছাড়া রমজান মাসের বিশেষত্ব ও ফজিলতের প্রধান কারণ হলো এই মাসেই মহা গ্রন্থ আল কুরআন নাজিল হয়। আল­াহ তায়ালার ঘোষণা, রমজান মাসই হল সে মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য  হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য স্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী (বাকারা: ১৮৫)। শুধু তাই নয়, অন্যান্য বড় বড় আসমানী কিতাবও এই মাসেই নাজিল হয়। হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর সহীফাসমূহ এই মাসের ১ অথবা ৩ তারিখে নাজিল হয়। হযরত দাউদ (আঃ) কে ১২ অথবা ১৮ রমজান যাবূর কিতাব দেওয়া হয়। হযরত মুসা (আঃ) কে ৬ রমজান তাওরাত কিতাব দেওয়া হয়। হযরত ঈসা (আঃ) কে ১২ অথবা ১৩ রমজান ইঞ্জিল কিতাব দেওয়া হয়। এতে বোঝা যায় যে, আল­াহপাকের কিতাবের সাথে এই মাসের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। এই কারণেই এই মাসে বেশী বেশী কুরআন তেলওয়াত করা দরকার। কুরআন হলো একটি জীবন্ত মো’জেজা। এটিই পৃথিবীর একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যা এখনও অবিকল অবস্থাই আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। এর তেলাওয়াতের মাধ্যমে আমাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আল­াহর নির্দেশনা সম্পর্কে জানা যায়। হাদিসে এসেছে, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যাক্তি সর্বোত্তম যে নিজে কুরআন শরীফ শিখে এবং অপরকে শিক্ষা দেয় (বুখারী, আবু দাউদ, তিরমিজী)। অন্য এক হাদিসে হুজুর (সাঃ) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কুরআনের একটি অক্ষর পড়বে সে এক নেকী লাভ করবে এক নেকী দশ নেকীর সমান হবে। আমি বলি না যে ’আলিফ-লাম-মীম’ একটি অক্ষর বরং  আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর এবং মীম একটি অক্ষর (তিরমিজী)। এই ছওয়াব রমজান ছাড়া অন্যান্য মাসের জন্য প্রযোজ্য। রমজান মাসে এই ছওয়াব কমছে কম আরও ৭০ গুণ বৃদ্ধি করা হয়। অপর হাদিসে রাসুলে কারীম (সাঃ) বলেন, তোমরা আল­াহর  নৈকট্য ঐ জিনিষ হতে অধিক আর কোন জিনিষ দ্বারা হাসিল করতে পারবে না, যা স্বয়ং আল­াহ তায়ালা হতে বের হয়েছে, অর্থাৎ কালামে পাক (আবু দাউদ, তিরমিজী)। আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর গোটা জীবনটাই ছিল কুরআনের কার্বন কপি। তাই আসুন, আমরা এই মহিমান্বিত মাসে বেশী বেশী কুরআন তেলওয়াত করি, তার অর্থ বুুঝার চেষ্টা করি। 
লেখক: আরবী সাহিত্যিক ও মুহাদ্দিস, জামি’য়া ইসলামিয়া মারকাযুল উলূম, বাগমারা, খুলনা।

প্রিন্ট

আরও সংবাদ