খুলনা | মঙ্গলবার | ১৩ মে ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

র‌্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু

মেজর ও এএসপিসহ ১১ জন ‘ক্লোজড’, জিজ্ঞাসাবাদে তলব

খবর প্রতিবেদন |
১২:৫৮ এ.এম | ৩১ মার্চ ২০২৩


নওগাঁয় র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিন নামের এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাব-৫-এর মাঠপর্যায়ে কর্মরত ১১ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ জন্য তাদের রাজশাহী ব্যাটালিয়নের সদর দফতরে ডাকা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত ২২ মার্চ ওই অভিযানে যারা ছিলেন, তদন্তের প্রয়োজনে সদর দফতরে তাদের ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে সেনাবাহিনীর একজন মেজর, পুলিশের এএসপিসহ অন্যান্য সদস্য ও গাড়িচালক রয়েছেন।
সহকারী পরিচালক জানান, ওই ঘটনা তদন্তে র‌্যাব সদর দফতর গঠিত কমিটি এখন রাজশাহীতে অবস্থান করছে। কমিটি এই অভিযানে যুক্ত র‌্যাবের প্রত্যেক সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ঘটনার সত্যতা মিললে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে তদন্ত কমিটি।
ক্লোজড : নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনকে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদে জড়িত র‌্যাব সদস্যদের মাঠের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে।
গত সপ্তাহে আটকের পর র‌্যাবের হেফাজতে ওই নারীর মারা গেলে নির্যাতনের অভিযোগ তোলে পরিবার। এ নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি হাইকোর্টও বিষয়টি জানতে চেয়েছিল।
এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার জেসমিনকে আটকের সঙ্গে জড়িত র‌্যাব সদস্যদের ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বিষয়টি নিয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে বলেন, গত ২২ মার্চ ওই অভিযানে যারা ছিলেন, সেই ১১ জনকে তদন্তের প্রয়োজনে র‌্যাব-৫ এর ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে সংযুক্ত (ক্লোজড) করা হয়েছে। ওই ১১ জনের মধ্যে একজন মেজর, পুলিশের এএসপিসহ অন্যান্য সদস্য ও গাড়িচালকও রয়েছেন।
র‌্যাবের মুখপাত্র আরও জানান, ওই ঘটনা তদন্তে র‌্যাব সদর দফতর গঠিত কমিটি এখন রাজশাহীতে অবস্থান করছে। কমিটি এই অভিযানে যুক্ত প্রত্যেক র‌্যাব সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় এনামুলের ভূমিকা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। এনামুল হক নিজেই একটি মামলার আসামি। এক নারীর দায়ের করা মামলায় তার বিচার চলছে।
এর আগে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্ম-সচিব এনামুল হকের অভিযোগে গত ২২ মার্চ নওগাঁ থেকে র‌্যাব আটক করে ভূমি অফিসের কর্মী জেসমিনকে। আটকের চার ঘণ্টা পর তাকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় র‌্যাব। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শুক্রবার সেখানে তার মৃত্যু হয়। র‌্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যুর পর তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। পরিবারের অভিযোগ, র‌্যাবের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে। সেই অভিযোগ অস্বীকার করে র‌্যাব বলছে, ৪৫ বছর বয়সী ওই নারীকে আটকের পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
র‌্যাব হেফাজতে মৃত্যুর এই ঘটনায় হাইকোর্ট জেসমিনের লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তলব করেছে। র‌্যাবের কে কে জিজ্ঞাসাবাদে ছিল, তাও জানতে চেয়েছে।
জেসমিনকে আটকের পর তাকেসহ আরও এক যুবককে আসামি করে রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন যুগ্ম-সচিব এনামুল।
ওই নারীকে আটকের ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার হওয়ার অভিযোগ উঠার বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, যখন তাকে ধরা হয় তখন তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের আগে তার মৃত্যু হয়েছে। এখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কোনো দোষ দেখছি না।

্রিন্ট

আরও সংবদ