খুলনা | রবিবার | ১১ মে ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

‘নোবেল জয়ী’ রোজা

মুফতি রবিউল ইসলাম রাফে |
০১:৫৪ এ.এম | ০৬ এপ্রিল ২০২৩


আজ ১৪ রমজান। অশেষ পুণ্যময় বৈশিষ্টের আধার মাহে রমজানের মাগফিরাতের দশকের আজ চতুর্থ দিন। রোজার মধ্যে রয়েছে নানাবিধ উপকার। যেমন আছে আত্মিক উপকারিতা, ঠিক তেমনি রয়েছে বহুবিধ শারীরিক বা দৈহিক উপকারিতা। রোজার শাব্দিক অর্থ হলো না খেয়ে থাকা বা উপোস থাকা। এই উপোস থাকা আমাদের স্বাস্থের জন্য কল্যাণকর। উপোস থাকার উপকারিতা প্রমান করে ২০১৬ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন জাপানি জীব বিজ্ঞানী ইয়োশিনরি ওসুমি। তিনি প্রমাণ করেন উপোস থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। মানব দেহের কোষের মধ্যে দূষিত বর্জ্য পদার্থ একটি নির্দিষ্ট অংশে জমা হয়। বলা যায় অনেকটা ডাস্টবিনের মতো। উপোস থাকা এই ডাস্টবিন পরিস্কার করতে এবং মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া-ভাইরাসকে রিসাইক্লিলিং বা পুনঃপ্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে অটোফ্যাজি বা আত্ম-ভক্ষিকরণ প্রক্রিয়ায় ধ্বংস করে কোষে শক্তি যোগাতে চরম সহায়ক। এছাড়া আমাদের মধ্যে রয়েছে অনেক ধ্বংসাত্মক কু-প্রবৃত্তি যেমন, কাম-ক্রোধ, গর্ব-অহঙ্কার, হিংসা-দ্বেষ, লোভ-লালসা ইত্যাদি। এই প্রবৃত্তিগুলোই সমাজে ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, দলাদলি, রেষারেষি, ফেতনা-ফাসাদ ও যিনা-ব্যাভিচারের মত মারাত্মক ব্যাধির সৃষ্টি করে। প্রকৃতপক্ষে রোজার মাধ্যমে এই সমস্ত পশুবৃত্তি ও কু-প্রবৃত্তিকে দমন করা সহজ হয়। ফলে ব্যক্তিগত ও  সামাজিক জীবন হয় রোগমুক্ত। কথিত আছে, উদরপূর্তি মূল রোগ, পরহেজ করা মূল ওষুধ। পেটের উদাহরণ কারখানার বয়লারের মত। বয়লারের মধ্যে যেমন কোন জিনিষ সিদ্ধ বা রান্না করা করা হয়, ঠিক তেমনি পেটের ভিতরেও খাদ্যে দ্রব্যের পরিপাক হয়ে থাকে। বয়লারকে ভাল ও কর্মক্ষম রাখার জন্য মাঝে মাঝে বিরতি দেয়া হয় এবং খালি করে পরিষ্কার করা হয়। ঠিক তেমনি পেটকেও রোজার মাধ্যমে পরিষ্কার করা সম্ভব হয় এবং কার্যক্ষম রাখা যায়। রোজার মাধ্যমে বিনয় ও বশ্যতা অর্জিত হয়; ধৈর্যধারণের অভ্যাস পয়দা হয়; দর্প ও অহঙ্কার দূর হয় এবং মহান আল­াহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা সহজ হয়। এই কারণেই হুজুর (সাঃ) প্রায়ই রোজা রাখতেন ও ক্ষুধার্ত থাকতেন। তাই আসুন আমরা রোজার মাধ্যমে রুহানি রোগের সাথে সাথে শারীরিক রোগ থেকে মুক্ত হই।  
লেখক: আরবী সাহিত্যিক ও মুহাদ্দিস, জামি’য়া ইসলামিয়া মারকাযুল উলূম, বাগমারা, খুলনা।
 

্রিন্ট