খুলনা | রবিবার | ১১ মে ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

রমজান মাসে কোন দোয়া বেশী পড়বো

মুফতি রবিউল ইসলাম রাফে |
০১:৩৫ এ.এম | ০৭ এপ্রিল ২০২৩


আজ ১৫ রমজান। চলছে মাগফিরাতের দশক। মাগফিরাত অর্থ ক্ষমা। এই মাস মহান আল­াহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার মাস। হাদিসের বর্ণনা মতে মানুষের মাঝে যখন জুলুম, সুদ ও অশ্লীল কাজের ব্যাপক প্রসার হয় তখন আজাব স্বরূপ এমন এমন নতুন রোগের উদ্ভব হয় যার নাম মানুষ কখনও পূর্বে শুনেনি। বর্তমানে সারা বিশ্বে যে করোনা মহামারী দেখা দিয়েছে তা মানুষের গোনাহের ফল। এ কারণে আমাদেরকে মহান আল­াহর কাছে ক্ষমা চেতে হবে। তার করুণা হলেই কেবল করোনা থেকে বাঁচতে পারবো। আমাদের উচিত আল­াহর কাছে দিলো থেকে  গোনাহ মাফের দোয়া করা। তাহলে মহান আল­াহ রব্বুল আ’লামীন আমাদের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দিবেন। এই পুণ্যময় মাসে আল­াহপাক বান্দাদের মাফ করে থাকেন এবং দোয়া কবুল করেন। এক হাদিসে প্রিয় নবী এরশাদ করেন, রমজানের প্রতি দিবা-রাতে জাহান্নামের কয়েদীদেরকে মুক্তি দেয়া হয় এবং প্রতি দিবা-রাতে মুসলমানের একটি দোয়া অবশ্যই কবুল করা হয় (তারগীব)। রমজানে এই দোয়া আমরা বেশি করতে পারি: লা ইলাহা ইল­াল­হ, আসতাগফিরুল­াহ, নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া না’উযুবিকা মিনান্নার। অর্থাৎ, আল­াহ ছাড়া কোন মা’বুদ নাই। হে আল­াহ, আপনার কাছে আমরা মাগফিরাত ও জান্নাত চাচ্ছি এবং জাহান্নামের আগুন থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আরও একটি দোয়ার কথা হাদিসে এসেছে। তা হলো, ইয়া ওয়াছি’আল ফাদলি, ইগফিরলী। অর্থ, হে প্রশস্ত রহমতের মালিক, আমাকে মাফ করে দাও। রমজান মাসে সব সময়ই দোয়া কবুল হয়, তবে দোয়া কবুলের  সবচেয়ে উপযুক্ত সময় ইফতারির ঠিক আগ মুহূর্ত বলে হুজুর (সাঃ) উলে­খ করেছেন। কারণ, এক হাদিসে রাসুলে কারীম (সাঃ) এরশাদ করেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ব্যর্থ হয় না। এক. ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া। দুই. ন্যায় বিচারক বাদশাহের দোয়া। তিন. মজলুমের দোয়া (আহমদ)। দুরারোগ্য করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য আমরা হাদিসে বর্ণিত এই দোয়া পড়তে পারি, আল­াহুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা মিনাল বারাসি ওয়াল জুনূনী ওয়াল জুযামি ওয়া মিন সাইয়্যেইল আসক্ব-মী (আবু দাউদ:১৫৫৪)। অর্থাৎ হে আল­াহ  আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই  শ্বেত, উন্মাদনা, কুষ্ঠ এবং সমস্ত দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে। আরো একটি দোয়া হাদিসে এসেছে, বিসমিল­াহিল­াজি লা-ইয়াদুররূহূ মা’য়াচমিহি শাইয়্যুন ফিল আরদি ওয়া-লা ফিস-সামা-ই; ওয়া হুয়াস-সামীউল আলীম। অর্থ: মহান আল­াহর নামে শুরু করছি যার নামের বরকতে আসমান ও জমিনের কোন ক্ষতিই পৌঁছাতে পারে না। এছাড়া সকাল-বিকাল সূরা এখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস তিন বার করে পড়ে সমস্ত শরীরে দম বা মাসাহ করতে পারি। দোয়া ইউনুস, লা-ইলাহা ইল­া আনতা, সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনাজ্জলিমীন ও বিপদ-আপদ ও আকস্মিক বিপর্যয়ের মোকাবিলায় অত্যন্ত কার্যকারী। তাই আসুন, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য আমরা বেশী বেশী আল­াহ রব্বুল আলামীনের কাছে দোয়া করি।  
লেখক : আরবী সাহিত্যিক ও মুহাদ্দিস, জামি’য়া ইসলামিয়া মারকাযুল উলূম, বাগমারা, খুলনা।

্রিন্ট