খুলনা | শনিবার | ১০ জুন ২০২৩ | ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

খাদেম হয়ে এলাকাবাসীর পাশে থাকতে চান ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাফিজ

‘আমাকে কেউ কেউ কাউয়া বা হাইব্রিড বলতেই পারে তবে আ’লীগের প্রকৃত নেতা-কর্মীরা আমাকে ভালোবাসে’

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:২০ এ.এম | ১৭ এপ্রিল ২০২৩


জনপ্রিয়তার কারণে টানা তিন যুগ ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ। দল-মত নির্বিশেষে সকলের কাছে সমাদৃত তিনি। রাজনীতির নতুন মেরুকরণের পর এবার আ’লীগের প্রার্থী হচ্ছেন প্রবীণ এ রাজনীতিক। সময়ের খবরের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, আ’লীগ করতে এসে আমি যে সম্মান পেয়েছি, মহানগরের একজন সদস্য হয়েছি মাত্র। অথচ খুলনা মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম-সম্পাদক পদে থেকেও সে সম্মান আমি পাইনি। কিছু মানুষ তো আমাকে কাউয়া, হাইব্রিড বলতেই পারে। সে বলে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ, কিন্তু সাধারণ জনগণ ও আ’লীগের কর্মীরা আমাকে মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন। তাই খাদেম হয়েই ওয়ার্ডবাসীর পাশে থাকতে চাই আমৃত্যু।
হাফিজ কাউন্সিলর বলেন, আমি টানা ছয়বার এই এলাকার কাউন্সিলর। আমার কাছে সব সময় মনে হয়েছে, আমি এই এলাকার সেবক, আমি খাদেম। আমি কারো কিছু দিতে পারি আর না-ই পারি সকলের সুখে-দুঃখে পাশে থাকি, সকলের সাথে ভালো ব্যবহার করার চেষ্টা করি। এ কারণেই ওয়ার্ডের অধিকাংশ মানুষ আমাকে ভালোবাসে। আমার ওয়ার্ডে তিনটি সরকারি আবাসিক এলাকা, দুইশ’র মতো ছোট-বড় রাস্তা আছে, ড্রেন আছে, ৩৩টি মসজিদ, দুইটা গির্জা, তিনটি মন্দির আছে, প্রায় ২৪শ’ লাইটপোস্ট আছে। ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকাটির ধর্ম-বর্ণ সকলের পাশে থাকি- সে কারণের সকলেই আমাকেই ভোট দেয়, দেবে। আমি ভুল করলে অকপটে স্বীকার করতে পারি। ভোটটা হলো পবিত্র আমানত, ভোটটা বিশ^াস করে যোগ্য প্রার্থীর কাছে আমানত রাখে।
দল-বদল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ছাত্রাবস্থায় আমাদের দর্শনটাই ভুল ছিল, আমরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারিনি। তখন জাতীয় সঙ্গীতও শোনা যেতো না। পরে আমার ভঙ্গিপতি বড় ভাই এস এম এ রব আ’লীগে যোগদান করলে আমিও তার সাথে যোগ দেই। পরে তিনি নিহত হলে আ’লীগ ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলাম। তিনি বলেন, পদ্মার এপারে চিরদিন অবহেলিত। আমার ৬২ বছর বয়সে শেখ হাসিনার সরকারের মতো এতো উন্নয়ন আমি জীবনে দেখিনি। শুনেছি খান এ সবুর সাহেব নামের একজন ভদ্রলোক ছিলেন, তার আমলে আর শেখ হাসিনার আমলে খুলনাঞ্চলে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। 
সাবেক প্যানেল মেয়র শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনার আমলে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা আমি আমার ৩৬ বছরের জনপ্রতিনিধিকালে দেখিনি। আমি প্যানেল মেয়র ছিলাম। কেডিএ সদস্য ছিলাম পাঁচবার। একজন প্রতিনিধি হিসেবে যে উন্নয়ন বতর্মান সরকারের আমলে করেছি বা দেখেছি তা শুধু এই বঙ্গবন্ধু কন্যার পক্ষেই সম্ভব। যিনি স্বপ্ন দেখান এবং বাস্তবে সেটি করেও দেখান। নগরীর ১৭নং ওয়ার্ডে গত বছরে ৭০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। এই জীবনে অনেক কিছুই তো দেখলাম। ২০০১-২০০৬ সালে খুলনা-২ আসনে খালেদা জিয়া নিজে এমপি ছিলেন। তখনও এতো উন্নয়ন হয়নি। এই ওয়ার্ড সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে যত উন্নয়ন হয়েছে তা ছাপিয়ে গেছে শেখ হাসিনার উন্নয়নে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রতি জননেত্রী শেখ হাসিনার আলাদা দরদ রয়েছে। বিশেষ করে খুলনার মানুষের জন্য যখন যে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে তখনই তিনি সেই সহযোগিতা দিয়েছে। এক কথায় খুলনার যত উন্নয়ন হয়েছে তা শেখ হাসিনার হাতেই হয়েছে। অন্য কেউ এর দাবিদার না। হয়তো সময়ের প্রেক্ষাপটে অন্যরা উদ্বোধন করেছেন মাত্র। এসব উন্নয়নে মেয়র সাহেবেরও আন্তরিকতা রয়েছে। এই ওয়ার্ডে এখনো বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। সেই কাজগুলো শেষ হলে আমি নিজেই তৃপ্তি পাবো। করোনার কারণে আমরা অনেকটা পিছিয়ে গেছে। তারপরও আমি  ক্লিন ও স্মার্ট সিটির স্বপ্ন দেখি। এলাকাবাসীকে একটা কথাই বলতে চাই, আবেগের বশিভূত হয়ে নয় নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে সৃষ্টিকর্তাকে হাজির নাজির মনে করলে আমাকে তারা আবারও সুযোগ দেবে। আমি এলাকাবাসীর খাদেম, ছোট খাদেম। সেই খাদেম হিসেবেই তাদের পাশে থাকতে চাই।
প্রসঙ্গত, আরও সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন ১৭নং ওয়ার্ড আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম খান, সহ-সভাপতি ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতি খুলনার সেক্রেটারী এস এম কবির উদ্দিন বাবলু, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউসুফ আলী খান, তরুণ আ’লীগ নেতা মোঃ মাসুদ হাসান তালুকদার এবং ইসলামী যুব আন্দোলন মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মোঃ আব্দুর রশিদ।
 

প্রিন্ট

আরও সংবাদ