খুলনা | শনিবার | ১০ জুন ২০২৩ | ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

খুমেক প্যাথলজির রক্তের নমুনা বেসরকারি মাইক্রো ল্যাবে, ব্যবসা জমজমাট!

বশির হোসেন |
১২:৫৬ এ.এম | ০৫ মে ২০২৩


হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে পরীক্ষা করার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগে যান ডুমুরিয়ার আব্দুর রহমান (২১)। সেখানে গেলে তাকে বলে আপনাকে দু’টি পরীক্ষা দেয়া হয়েছে, এর মধ্যে একটি আমাদের এখানে আছে অপরটি নেই কিন্তু আমরা বাইরে থেকে কম টাকা নিয়ে করে দেই। রোগী বিস্তারিত জানতে চাইলে বলেন, আপনি এখানেই যে রক্ত দিয়েছেন, সেই রক্ত দিয়েই হয়ে যাবে দুপুরে এসে এখান থেকেই রিপোর্ট পাবেন। রোগী কোন পরীক্ষার জন্য টাকার রশীদ না পেলেও দেড়টায় মেডিকেল কলেজ-এর রিপোর্ট কাউন্টার থেকেই দু’টি রিপোর্ট সংগ্রহ করেছে, যার একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার মাইক্রো ল্যাবের। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে অনুসন্ধান এক দিনেই একই ধরনের অন্তত চারজন রোগী পাওয়া গেছে যারা এই প্রতারণার শিকার হয়েছে। এভাবে খুলনা মেডিকেল কলেজের প্যাথলজিতে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার মাইক্রোল্যাব দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে প্রতিদিন অন্তত ১২ থেকে ১৫ রোগীর রক্তের নমুনা নিয়ে খুলনা শহরের বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ‘মাইক্রো ল্যাব’-এ নিয়ে পরীক্ষা করেন এখানকার (খুমেক) প্যাথলজি ও মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবে কর্মরত কর্মচারীরা। কর্মচারী ওয়াহিদ আনোয়ারসহ বেশ কয়েকজন কর্মচারী রোগীদের বিভ্রান্ত করে অধিক অর্থ নিয়ে বাইরে থেকে তাদের পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘মাইক্রো ল্যাব’-এর মালিক খুলনা মেডিকেল কলেজ-এর মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ লিমন নিজেই। বিভাগের চিকিৎসকদের সাথে মিলে মিশে দীর্ঘদিন ধরে এমন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন খুমেকের কর্মচারীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ লিমন বলেন আমি অত্যন্ত সুনামের সাথে মেডিকেল কলেজে শিক্ষকতা করি। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে সবই মিথ্যা।
খুলনা মেডিকেল কলেজ এর উপাধ্যক্ষ ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ বলেন, এমন কোন অভিযোগ আমরা আগে শুনিনি, আপনি বলেছেন সুনির্দিষ্ট ভাবে এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামীকাল অধ্যক্ষ স্যারের সাথে এ বিষয়ে কথা বলে খোঁজ নিয়ে দেখবো আসল ঘটনা। 
খুলনা মেডিকেল কলেজ-এর অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ দীন উল ইসলাম সময়ের খবরকে বলেন, আমি আসলেই একদমই প্রথম শুনেছি এই ঘটনাটা। আমি আগে শুনেছি হাসপাতাল থেকে যেখানে কালচার পরীক্ষা হয়, সেখান থেকে দুই-একটা পরীক্ষা বাইরে যায় কিন্তু কলেজ থেকে যায় আজ (বৃহস্পতিবার) আপনার কাছ থেকেই শুনলাম শনিবার যেয়ে অবশ্যই এটা খোঁজ নিয়ে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে আশ্বাস দেন কলেজের শীর্ষ এ কর্মকর্তা।

প্রিন্ট

আরও সংবাদ