খুলনা | রবিবার | ১১ মে ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

সংসদ নির্বাচন নিয়ে ‘শেষ মুহূর্তে’ সিদ্ধান্ত নেবে জাতীয় পার্টি

খবর প্রতিবেদন |
০১:১১ এ.এম | ২০ মে ২০২৩


আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেনি জিএম কাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। আসন্ন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশেষত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র ‘চলমান বিরোধিতা’ কোন দিকে গড়াবে, এ নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারকেরা। শুক্রবার জাপার উচ্চ পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানা গেছে।
জাপার প্রেসিডিয়ামের একাধিক সদস্য জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি’র সভাপতিত্বে দলের প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় আগামী নির্বাচন, নির্বাচন কৌশল, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সিটি নির্বাচন এবং সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তারা বলেন, ‘বৃহস্পতিবারের বৈঠকে আমরা ৩০০ আসনেই জাপার প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে মতামত দিয়েছি। দলেও সেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এছাড়া কোনও কারণে জোট করতে হলেও সেই প্রস্তুতিও যেন হাইকমান্ডের থাকে, এমন প্রস্তাবও এসেছে বৈঠকে।’
জাপার একাধিক কো-চেয়ারম্যান উলে­খ করেন, দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি খানিকটা ঘোলাটে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক শক্তির অবস্থান নিয়ে খানিকটা সন্দিহান জাপা। আর এ কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ কোন প্রক্রিয়ায় হবে, এ নিয়ে নীতিনির্ধারকরা এখনই সিদ্ধান্তে আসতে নারাজ। এছাড়া জাপার চিফ প্যাট্রন রওশন এরশাদের অবস্থান শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়ায় সেদিকটিও আমলে রেখেছেন জাপার সিনিয়র নেতারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাপার চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে কীভাবে যাবো, কোন প্রক্রিয়ায় যাবো; সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বৃহস্পতিবার প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের বৈঠক হয়েছে। আমরা মনে করি, পরিস্থিতি টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। শেষ অবস্থায় কী হয়, সেটিও বিবেচ্য।’
জি এম কাদের মনে করছেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র মধ্যে কোনপক্ষ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টেকে (সিদ্ধান্তে), তা এখনও পরিষ্কার নয়। কারণ, এই দফায় যে হারবে, তারা শেষ। তাই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দেখতে হবে।’
জাপার একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য নিজেদের নাম উদ্ধৃত না করার শর্তে জানিয়েছেন, বিগত কয়েক মাস ধরে দেশের অভ্যন্তরে বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতা, পরাশক্তিগুলোর পরস্পর বিরোধী অবস্থান ও ক্ষমতাসীন সরকারের আচরণ পর্যালোচনা করে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তার সন্দিগ্ধ হয়ে পড়েছেন।
‘বিশেষ করে হঠাৎ করেই কয়েকটি দেশের দূতাবাসে পুলিশের নিরাপত্তা বাতিলের বিষয়টিতে দল হিসেবে চমকে গেছে জাতীয় পার্টি, এমনটি বলছিলেন প্রভাবশালী একজন কো-চেয়ারম্যান। তিনি মনে করেন, ‘কার্যত সরকার এখন আন্তর্জাতিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে নেই।’
জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, ‘কূটনীতিকদের নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি ঠিক হয়নি বলে আমরা মনে করি। তাদের শক্ত নিরাপত্তা দেওয়া উচিত। আর যে যুক্তি দেখিয়ে বাদ দেওয়া হয়েছে, তা শক্ত না।’ ‘সেক্ষেত্রে জাপার সিদ্ধান্ত কোন দিকে যেতে পারে’, এমন প্রশ্নে দলটির সিনিয়র একজন নেতা দাবি করেন, ‘প্রতিবেশী হিসেবে যাদের সঙ্গে জাপার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের বোঝাপড়া ইতিবাচক আছে, তাদের ইঙ্গিত পেলেই দল হিসেবে জাপার অবস্থান স্পষ্ট হবে।’
জাপার একজন অতিরিক্ত মহাসচিব দাবি করেন, যাই হোক বিএনপি’র সঙ্গে কোনও ঐক্য বা জোট হবে না জাপার।
বৃহস্পতিবার জাপার বৈঠক শেষে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থেকেও জাতীয় পার্টি রাজনীতির মাঠে বিকল্প শক্তি হিসেবে আছে। অনেকেই বলেছিলেন, এরশাদের মৃত্যুর পরে জাতীয় পার্টি বিলীন হয়ে যাবে, কিন্তু জাতীয় পার্টি এখনও অনেক শক্তিশালী। ইন্ধন আছে, কিন্তু সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন।

্রিন্ট

আরও সংবদ