সিঙ্গাপুর থেকে জাপানী লাক্সারী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নতুন ও রিকন্ডিশন গাড়ি নিয়ে মোংলা বন্দরে নঙ্গর করেছে সর্বোচ্চ বৃহত্তম বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজ মালশিয়া পতাকাবাহী “এমভি মালশিয়া স্টার”। এক সাথে এক হাজার ৩৭৫টি গাড়ি নিয়ে গত ৪ এপ্রিল সিঙ্গাপুর বন্দর থেকে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে জাহাজটি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। মোংলা বন্দরে খালাসের জন্য এবারের চালানে ৯২৬টি গাড়ি নিয়ে এসেছে জাহাজটি। শনিবার দুপুর ২টার দিকে বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে এসে ভিড়ে। আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা বলছে, গাড়ি আমদানির মধ্য দিয়ে এ বন্দরে একটি বড় রাজস্ব আয় হয় সরকারের। 
বন্দর ও আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা জানায়, প্রথমে জাপানের নাগোয়া, ইউকোহামা ও ওসাকা বন্দর থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গাড়ি এনে সিঙ্গাপুরে রাখা হয়। বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের আমদানি করা এসব নামী-দামি  বিলাস বহুল গাড়ি সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে আনার জন্য শনিবার দুপুরে মোংলা বন্দরে নঙ্গর করেছে বাণিজ্যিক জাহাজ “এমভি মালশিয়া স্টার”। গত ৪ এপ্রিল জাপান থেকে আনা সিঙ্গাপুর বন্দর থেকে ১ হাজার ৩৭৬টি গাড়ি বোঝাই করে বিদেশী জাহাজটি সিঙ্গাপুর হয়ে মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। পথিমধ্যে ১৮ মে বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরে নঙ্গর করে এ থেকে ৪৫০টি গাড়ি সেখানে খালাস করা হয়। ১৯ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে আসা জাহাজটি শনিবার বন্দরের ৮নম্বর জেটিতে এসে ভিড়ার পর পরই (দ্বিতীয় সিপ্ট) বিকেলের পালা থেকে খালাস কাজ শুরু করে পণ্য খালাসকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা ট্রেডার্স লিঃ এর প্রতিনিধিরা। এখানে খালাস করা হবে ৯২৬টি বিলাশবহুল রিকন্ডিশন ও বিভিন্ন মডেলের নতুন গাড়ি। মোংলা বন্দর জেটিতে এগুলো খালাস করতে ২ দিন সময় লাগবে বলে জানায় জাহাজটির শিপিং এজেন্ট কর্তৃপক্ষ। গাড়িগুলো খালাস করে তা বন্দর জেটির ইয়ার্ড ও সেডে সারীবদ্ধ করে রাখা হবে। পরে দেশীয় আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের শো-রুমে তা নিয়ে বিক্রি করা হবে বলেও জানায় তারা।
দেশে গাড়ি আমদানি করার মাধ্যমে মোংলা বন্দরে একটি বড় আকারের রাজস্ব আয় করে কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত ৪ মে ৭০১টি গাড়ি নিয়ে মোংলা বন্দরে খালাস করেছিল “এমভি মালশিয়া স্টার” নামের এ বিদেশী বাণিজ্যিক এ জাহাজটি। 
স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এনশিয়েন্ট স্টিম শিপ কোম্পানি লিঃ এর ব্যবস্থাপক মোঃ ওহিদুজ্জামান বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়া আর সড়ক পথে অবকাঠামোগত দিক ঠিক হওয়ায় ঢাকার সাথে মোংলা বন্দরের দূরত্ব কমেছে আগের তুলনায় অর্ধেক। এছাড়া আগে মোংলা বন্দর থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগতো ১২/১৪ ঘন্টা। এখন সেখানে মাত্র ৩ ঘন্টায় ঢাকায় পৌঁছানো যায়। এছাড়া দেশের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় মোংলা বন্দর ব্যবসায়ীদের অনেক সুযোগ সুবিধা বেশী থাকায় দেশ-বিদেশী আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা এখন মোংলা বন্দরকেই বেছে নিয়েছে। তাই দেশের বড় বড় মেঘা প্রকল্পের মেশিনারিজ পণ্য এখন বেশীর ভাগই মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করা হচ্ছে। তাতে ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থ দু’টোই সাশ্রয় হচ্ছে বলে জানায় তিনি। 
২০০৯ সালের ৩ জুন হক্স-বে অটোমোবাইল কোম্পানি প্রথম ২৫৫টি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানির মধ্য দিয়ে মোংলা বন্দরে গাড়ি রাখার কার্যক্রম শুরু হয়।