খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিন

|
১২:২৪ এ.এম | ১৬ অগাস্ট ২০২১

করোনাভাইরাস সত্বর চলে যাবে, এর পর অন্য কোন ভাইরাস বাংলাদেশে আসবে না, এমন কোন গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবেন কি? তাহলে বড় বড় ব্যবসা-বাণিজ্য সবই চলছে, কেবল ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ থাকবে কেন? ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ ইতোমধ্যে সকলকে হুঁশিয়ার করেছে যে, করোনাভাইরাসের সাথে খাপ খাইয়ে যথাযথ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েই সবাইকে চলতে হবে। কবে পৃথিবী এই ভাইরাস থেকে পরিত্রাণ পাবে, সেটার সুচিন্তিত টাইমলাইন কারো জানা নেই। এই হুঁশিয়ারি এমনই ইঙ্গিত দেয় যে, আমাদের বেঁচে থাকার তাকিদে যাবতীয় মৌলিক বিষয় মহামারীর ভিতরেই বিকল্প বেছে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তা না হলে মানব সভ্যতা যে নিশ্চিত হুমকির মুখে পড়বে, সেটা সহজে অনুমেয়। তাই নীতি নির্ধারকদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শূন্যের কোঠায় নেমে আসার পরেই কেবল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে, এরূপ সাধু চিন্তা পুরোপুরি যৌক্তিক নয়।
আমরা মনে করি, অফিসে, কল-কারখানায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও মসজিদ-ঈদগাহে পরস্পরে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা এবং মাস্ক পরিধান অব্যাহত রাখা সম্ভব। একইভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতি বেঞ্চে দুই মাথায় দু’জন শিক্ষার্থী বসা এবং এভাবে সব শিক্ষার্থীর স্বশরীরে ক্লাস নেওয়া খুবই সম্ভব ও সঙ্গত। মোবাইলে বা অনলাইনে ক্লাস নেওয়া স্রেফ পন্ডশ্রম মাত্র। এতে শিক্ষার্থীদের কোন মনোযোগ আসে না। শিক্ষকদের কোন প্রভাবও তাদের উপর পড়ে না। তাই অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম কোনভাবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বশরীরে পাঠদানের বিকল্প হতে পারে না।
ইউনেস্কোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, পুরোপুরি ও আংশিকভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিশ্বব্যাপী ৮৮ কোটি ৮০ লাখের বেশি শিশুর পড়াশোনা অব্যাহতভাবে বাধার মুখে পড়েছে। তন্মধ্যে গত বছর মার্চ থেকে বন্ধ রাখা বিশ্বের ১৪টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে পানামা, এল সালভাদর, বাংলাদেশ ও বলিভিয়া। ফলে গত ১২ জুলাই ইউনিসেফ ও ইউনেস্কো যৌথ বিবৃতিতে বিশ্বের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। এটি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, সংক্রমনের প্রধান কারণগুলির মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি নেই। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বয়স্ক ও সচেতন। তারা নিজেরাই সাবধান থাকবে। সেই সাথে শিক্ষক ও বিভাগীয় কর্মচারীগণ নিজেরা শ্রেণিকক্ষে বা দরজায় শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ার করবেন। সাথে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখবেন। প্রয়োজনে সেগুলি দরদের সাথে শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করবেন। এভাবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রশমন কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি সামাল দেওয়া সম্ভব। সাথে সাথে শিক্ষার্থীসহ সকল নাগরিকের জন্য ব্যাপকভাবে টিকা প্রদান কর্মসূচিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। অনেক কিছু ছাড় দিয়ে হলেও সরকারকে গুরুত্বের সাথে সর্বাগ্রে এটি বাস্তবায়ন করতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ