খুলনা | শুক্রবার | ০৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা জরুরি

|
১২:১৬ এ.এম | ২৮ মে ২০২৩


উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা জেলা হাসপাতালে রোগীদের এত দীর্ঘ লাইন থাকে যে অনেক রোগী চিকিৎসক দেখাতে পারে না। আগে বাধ্য হয়ে তারা যেত প্রাইভেট ক্লিনিকে। ভিজিট দিতে হতো ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। এখন সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক সেবা চালু হওয়ায় রোগীরা যেন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে।
যে চিকিৎসককে প্রাইভেট ক্লিনিকে ৫০০ টাকায় দেখাত, সেই একই চিকিৎসককে এখন সরকারি হাসপাতালের বৈকালিক সেবা ব্যবস্থায় মাত্র ২০০ টাকায় দেখাতে পারছে। বিভিন্ন খবরের কাগজের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই ব্যবস্থায় রোগীরাও অনেক খুশি। কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক দেখিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন ভ্যানচালক আবদুল মালেক। তাঁর মতে, বিকেলে রোগী কম থাকায় চিকিৎসক অনেক সময় নিয়ে তাঁকে দেখেছেন। তিনিও সব কথা চিকিৎসককে বলতে পেরেছেন। ভ্যানচালক মালেকের মতোই একই রকম সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে দেশের অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা বৈকালিক রোগীরাও।
দেশে রোগীর তুলনায় সরকারি হাসপাতালের সেবা খুবই সীমিত। ফলে সাধ্য না থাকলেও অনেক দরিদ্র রোগীকে যেতে হয় প্রাইভেট ক্লিনিকে। চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বস্ব খোয়াতে হয়। অথচ কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণত দুপুর একটা-দেড়টা পর্যন্ত রোগী দেখা হয়। কোটি কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকে। এসব হাসপাতালে দুই বা তিন শিফটে রোগী দেখা গেলে একই স্থাপনা থেকে তিনগুণ সেবা দেওয়া সম্ভব হতো। এমন চিন্তা থেকেই সরকার গত ৩০ মার্চ থেকে জেলা পর্যায়ের ১২টি এবং উপজেলা পর্যায়ের ৩৯টি হাসপাতালে পরীক্ষামূলকভাবে বৈকালিক চেম্বার কার্যক্রম শুরু করে। বিষয়টি সুধী মহলেও ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন যে এ বছরের মধ্যেই দেশের সব জেলা ও উপজেলায় এই কার্যক্রম চালু করা যাবে।
স্বাস্থ্যসেবা খাতে সরকারি অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। যেটুকু অবকাঠামো রয়েছে তারও ব্যবহার অত্যন্ত সীমিত। এটি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও মনে করেন, সরকারের গৃহীত এই উদ্যোগটি খুবই ভালো। তবে এর জন্য আর কিছু ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। দেশের প্রায় সব জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে লোকবলের অভাব রয়েছে। চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ানের বহু পদ খালি পড়ে আছে। বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির সুফল পেতে হলে লোকবল নিয়োগ দ্রুততর করতে হবে। একই সঙ্গে রোগ নির্ণয় কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য উপাদানের সরবরাহ বাড়াতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের যদি প্রাইভেট স্থাপনায় যেতে হয়, তাহলে এই সেবার সুফল পুরোপুরি পাওয়া যাবে না।
আমরা আশা করি, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এ বছরের মধ্যে সব জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু হবে। পাশাপাশি এই উদ্যোগ সফল করার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

 

্রিন্ট

আরও সংবদ