খুলনা | শুক্রবার | ০৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

মাতৃমৃত্যুর হার রোধে মাতৃত্ব নিরাপদ ও পরিকল্পিত হোক

|
১২:০৯ এ.এম | ৩০ মে ২০২৩


স্বাধীনতা-পরবর্তী চার দশকে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই ঈর্ষণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার কমিয়ে আনা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, ইউএনএফপিএ, বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের একটি বৈশ্বিক প্রতিবেদনের তথ্য নিয়ে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সাল পর্যন্ত ২০ বছরে দেশে ৭২ শতাংশ মাতৃমৃত্যু কমেছে। 
বৈশ্বিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে বাংলাদেশে এক লাখ শিশুর জন্ম দিতে গিয়ে ১২৩ জন মা মারা যান। এর আগে ২০০০ সালে এক লাখ শিশু জন্ম দিতে গিয়ে ৪৪১ জন মা মারা যান। এর পর থেকে মাতৃমৃত্যুর হার কমে এসেছে। ২০০৫ সালে লাখে ৩৭৬, ২০১০ সালে ৩০১ এবং ২০১৫ সালে ২১২ জন মায়ের মৃত্যু হয়।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা হলো মাতৃমৃত্যুর হার লাখে ৭০ জনে নামিয়ে আনা।
প্রসবকালীন মাতৃমৃত্যুর কারণগুলোর অন্যতম হচ্ছে, বাড়িতে প্রসব-পরবর্তী রক্তপাতসহ বেশ কিছু জটিলতা। বাড়িতে প্রসব বন্ধ করতে পারলে ২০৩০ সালের মধ্যে লাখে মৃত্যু ৭০ জনের নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন। প্রসবকালীন মাতৃমৃত্যুর আরেকটি কারণ হচ্ছে বাল্যবিবাহ। পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ বলছে, মেয়েদের ২৫ শতাংশ বাল্যবিবাহের শিকার। মেয়েদের ২০ বছরের আগে গর্ভধারণ বন্ধ করা যাচ্ছে না। এই বয়সে গর্ভধারণ করলে প্রসবকালে রক্তক্ষরণটা বেশি হয় এবং মৃত্যুর ঝুঁঁকি বেশি থাকে।
বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশ। এ দেশের জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি, শিশু ও মাতৃমৃত্যু ছিল উন্নতির অন্তরায়। কিন্তু সরকারের কিছু আন্তরিক চেষ্টা এবং এ ক্ষেত্রে নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের ঐকান্তিক শ্রম এই সমস্যা সমাধানে ভালো ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, গর্ভবতী মায়েদের গর্ভকালীন ন্যূনতম চারটি চেকআপ নিতে হবে। প্রথম চেকআপ ১৬ সপ্তাহের মধ্যে। দ্বিতীয় চেকআপ ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে। তৃতীয় চেকআপ ৩২ সপ্তাহে। চতুর্থ চেকআপ ৩৬ থেকে ৩৮ সপ্তাহের মধ্যে। গর্ভাবস্থায় মায়েদের অ্যান্টিনেটাল চেকআপ খুব জরুরি। পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের দেশে ৪৭ শতাংশ মা চারটি অ্যান্টিনেটাল চেকআপ নেন। অন্যরা এ ব্যাপারে জানেন না।
পরিকল্পিত মাতৃত্ব নিরাপদ মাতৃত্বের অন্যতম শর্ত। নিরাপদ মাতৃত্ব একজন মায়ের অধিকার। এ অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে।

 

্রিন্ট

আরও সংবদ