খুলনা | শুক্রবার | ০৪ জুলাই ২০২৫ | ২০ আষাঢ় ১৪৩২

‘নৌকা মার্কায় জনগণ ভোট দিয়েছে বলেই আজকে মানুষের পরিবর্তন এসেছে’

মানুষের কষ্ট লাঘবে প্রাণপণ চেষ্টা চলছে : শেখ হাসিনা

খবর প্রতিবেদন |
১২:৫৬ এ.এম | ২৪ জুন ২০২৩


আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কাজ করে যাচ্ছে উলে­খ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা কাজ করে যাচ্ছি, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। জানি একটু দুঃসময় যাচ্ছে। মানুষের যে কষ্ট, সেই কষ্ট লাঘবে প্রাণপণ চেষ্টা হচ্ছে।’ এ সময় দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশের বিত্তশালীদের প্রতি আহŸানও জানান প্রধানমন্ত্রী।
আ’লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভার সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দেশের মানুষের জন্য আ’লীগ একটা বিরাট পরিবর্তন নিয়ে এসেছে উলে­খ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণ লাভবান হয়, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন সেটা প্রমাণিত সত্য। নৌকা মার্কায় জনগণ ভোট দিয়েছে বলেই আজকে মানুষের পরিবর্তন এসেছে। আওয়ামী লীগ থাকলে ভাগ্যের পরিবর্তন হবে।’
বাংলাদেশ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র রয়েছে উলে­খ করে সরকার প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘জানি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র আছে। বাংলাদেশটাকে নিয়ে আর যেন কেউ আর ছিনিমিনি খেলতে না পারে।’
আওয়ামী লীগের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে দলটির সভাপতি বলেন, ‘১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ঘুরে যা দেখেছি তার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এই পরিবর্তনটা আ’লীগ ক্ষমতা না এলে কোনোদিনই হতো না। আ’লীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছে জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্য এবং সেবা করার জন্য। এটাই আ’লীগের কাজ। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। ২০২৬ সালে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাবো। আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হবে। সাক্ষরতা বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে আমাদের আরও সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।’
সা¤প্রতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করে আমরা কাজ করে যাচ্ছি, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। জানি একটু দুঃসময় যাচ্ছে। মানুষের যে কষ্ট সেই কষ্ট লাঘবে প্রাণপণ চেষ্টা হচ্ছে।’ দেশের বিত্তশালীদের প্রতিবেশী দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানোরও আহŸান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘কোনও মানুষ অস্বাস্থ্যকরভাবে থাকবে না। সবাইকে ঘরবাড়ি করে সুন্দরভাবে বাঁচার ব্যবস্থা আমরা করে দেবো। এটাই আজকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আওয়ামী লীগের প্রতিজ্ঞা।’
১৯৮১ সালে দেশে ফেরার প্রসঙ্গ টেনে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আমি ছোট ছোট বাচ্চাদের মাতৃস্নেহ বঞ্চিত করে বাংলাদেশে ফিরে আসি। দেশে ফিরে কাউকে পাইনি। পেয়েছি শুধু সারি সারি লাশ। একটা প্রতিজ্ঞা করে এসেছিলাম যে এই হত্যা করে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার বঞ্চিত করবে সেটা যেন না পারে। মুক্তিযুদ্ধের অর্জন করে যে সম্মান পেয়েছিল সেই সম্মান আবার ফিরিয়ে দিতে। শোষিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে উন্নত জীবন দেওয়ার জন্য। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণ করতেই হবে সেই প্রতিজ্ঞা নিয়েই ফিরে এসেছি।’
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজেকে জনগণের সেবক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন বলেও তিনি উলে­খ করেন।
২০০১ সালের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার ওপর প্রচণ্ড চাপ ছিল গ্যাস বিক্রি করতে হবে। আমি বলেছিলাম, এই গ্যাস জনগণের। আমার পক্ষে বাংলাদেশের সম্পদ ক্ষমতার লোভে বিক্রি করে ক্ষমতায় থাকবো, সেই বাপের মেয়ে আমি নই। আমরা চাইনি কিন্তু মুচলেকা দিয়েছিল খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া মুচলেকা দিলো, গ্যাস দেবে।’
বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বাংলাভাই সৃষ্টি করে, দুর্নীতি সন্ত্রাস করে ওই বিএনপি সন্ত্রাসের দল ভেবেছিল ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করবে। কিন্তু বাংলার মানুষকে তারা চেনেনি। জনগণের সম্পদ বেচবে। আর জনগণের অর্থসম্পদ কেড়ে নিয়ে লুটপাট করবে। লুটের টাকার জোরে ক্ষমতায় থাকে, এটা দেশের মানুষ মেনে নেয়নি।’
সরকারের সেক্টরভিত্তিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিএনপি’র আমলের মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছিলাম। করোনা ও ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে কিছুটা বেড়েছে। এখন ৮ শতাংশের উপরে। আমরা মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিচ্ছি। আমরা বাজেটকে বিএনপি’র আমলের তুলনায় ১০ গুণ বৃদ্ধি করেছি। জিডিপি ১২ গুণ বৃদ্ধি করতে পেরেছি। এডিবি ১৩ গুণ, রপ্তানি আয় ৫ গুণ, রেমিট্যান্স ৬ গুণ বাড়িয়েছি। রাজস্ব আয় ৩৭ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ কোটি টাকার ওপরে বাড়াতে সক্ষম হয়েছি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৫ মাসের বেশি আমদানির সক্ষমতা রয়েছে। কিছু জিনিসের দাম বেড়েছে। কিছু মানুষ মজুত করে। এই মজুতের স্বভাবটা সবাইকে বদলাতে হবে।’
দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কারও এক ইঞ্চি জমিও যেন খালি না থাকে। যে যেখানে যা পারেন উৎপাদন করেন, ফসল ফলান। নিজেরা খাবেন, বিক্রি করবেন; অর্থ পাবেন। বিদেশে আমরা রপ্তানি করতে পারবো। আমি বলার আগে নিজেরটা শুরু করে দিয়েছি। আমার গণভবন এখন মোটামুটি একটা কৃষিপণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্র হিসেবে.. গণভবনেও করছি গ্রামের জমিও পরিষ্কার করে চাষ করছি। আমাদের সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও যার যার এলাকায় কাজ শুরু করেছে। এখন আর কোরবানির জন্য ভারতের গরু আনতে হয় না। আমাদের দেশেই গরু উৎপাদিত হচ্ছে, এতে চাহিদাও মিটে যাচ্ছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ