খুলনা | শুক্রবার | ০৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

শহিদ কৃষকদের স্মরণে কৃষক লীগের সমাবেশে কাদের

অনুমতি না নিয়ে কর্মসূচি করলে পালানোর পথ পাবে না বিএনপি

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৯ এ.এম | ০১ অক্টোবর ২০২৩


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি বলছে- আন্দোলনের কর্মসূচি পালনে তারা না-কি ‘অবৈধ সরকারের’ কাছ থেকে আর অনুমতি নেবে না। কিন্তু সভা-সমাবেশ করতে গেলে এই সরকারের কাছ থেকেই অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি না নিলে খবর আছে, পালাবার পথ পাবেন না।
শনিবার রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে ১৯৯৫ ও ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় নিহত শহিদ কৃষকদের স্মরণে কৃষক লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বিএনপি’র একদফা ও সরকার পতনের আন্দোলন কর্মসূচি প্রতিহতের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ ঘোষিত আটদিনের কর্মসূচির শেষ দিনে এই কৃষক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কৃষক মহাসমাবেশে ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশের জেলা-উপজেলা থেকে কৃষক লীগ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হন। তারা রঙ-বেরঙের টিশার্ট ও কৃষকদের মাথাল (টুপি) পরেন এবং ব্যানার-ফেস্টুনসহ মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসেন। বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নেচে গেয়ে ও শ্লোগানে সমাবেশস্থল মুখর রাখেন তারা। বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে সমাবেশস্থলে ছিল উপচে পড়া ভিড়।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার আবেদনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা (বিএনপি) বলে আর না-কি অনুমতি নেবে না। অবৈধ সরকার থেকে অনুমতি নেবে না। তাহলে সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদন কেন করে? এই সরকার যদি অবৈধ হয়, এখানে কেন আবেদন?’
তিনি বলেন, বিএনপিকে জিজ্ঞাসা করতে চাই-তাদের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম কই? বিএনপি’র আল্টিমেটাম ভুয়া, একদফা ভুয়া, আন্দোলন ভুয়া, ৩২ দল ভুয়া, ক্ষমতা দখল ভুয়া। বিএনপি হচ্ছে ভুয়া দল।
আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগকে না-কি তারা কবরস্থানে পাঠাবেন। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, বিএনপি’র রাজনীতিই কবরস্থানে যাবে। তাদের কবরস্থানে যাওয়ার সময় এসেছে।
তিনি আরও বলেন, রাজপথ দখল করার অধিকার বিএনপি’র নেই। যারা রাস্তা দখল করতে আসবে, তাদের খবর আছে। যারা আগুন নিয়ে আসবে, তাদের হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে। যারা ভাঙচুর করতে আসবে, তাদের হাত আমরা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবো।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসী, হত্যাকারী, খুনি, অর্থপাচারকারী, দুর্নীতিবাজ ও লুটপাটকারী দল বিএনপি’র হাতে বাংলাদেশ ও দেশের গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। তাদের কাছে জনগণের স্বচ্ছ ভোট নিরাপদ নয়। বাংলাদেশের নিরাপত্তা, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার আদর্শ নিরাপদ নয়। এরা একাত্তরের বাংলাদেশ চায় না। এরা চায় খুন আর সন্ত্রাসের বাংলাদেশ। এরা চায় দুর্নীতি আর স্বৈরাচারের বাংলাদেশ। ‘চোর চোট্টার’ দল বিএনপিতে ভালো মানুষ নেই।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশ আজ আলোকিত এক দেশ। এই আলো নিভে যাবে বিএনপি ক্ষমতায় এলে। বাংলাদেশকে আমরা আর কোনো কালো হাতে ছেড়ে দেবো না, অন্ধকারে ফিরে যেতে দেবো না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই বাংলাদেশকে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার অভিমুখে নিয়ে যাবো। আবারও নৌকার পালে হাওয়া লাগবে। শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবে।
নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহŸান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে, জোরদার খেলা। সামনে নভেম্বর, তারপরে ডিসেম্বর, তারপরে জানুয়ারি। ফাইনাল খেলা হবে। কৃষক ভাইয়ের খেলা হবে। প্রস্তুত হয়ে যান। নেত্রী (শেখ হাসিনা) আসছেন, তিনি এসে ডাক দেবেন। তিনি যখন ডাক দেবেন, সবাই রাস্তায় নেমে আসবেন।
সমাবেশে আ’লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমাজের অন্যান্য পেশাজীবীদের মতো কৃষকরাও আজকে সমান ভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন। তারা চাহিদা অনুযায়ী তাদের বীজ-সারসহ সকল উপকরণ পাচ্ছেন। একই সঙ্গে কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্যও পাচ্ছেন।
আ’লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি মেসেজ দিচ্ছে, অক্টোবরে তারা না-কি সারাদেশ অচল করে দেবে। সন্ত্রাস ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচাল করবে। কিন্তু বাংলার কৃষক সমাজই এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে, বিএনপিকে প্রতিহত করবে। বিএনপি যে কবরে আছে, সেই কবরেই থাকবে।
কৃষক লীগ সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এড. উম্মে কুলসুম স্মৃতির সঞ্চালনায় মহাসমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন আ’লীগের দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম ও অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ প্রমুখ।

্রিন্ট

আরও সংবদ