খুলনা | শুক্রবার | ০৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কার করুন ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিন

|
১২:১৫ এ.এম | ০২ অক্টোবর ২০২৩


প্রাকৃতিক রুদ্ররোসে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনপদে সড়ক সংস্কারের অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়, বরাদ্দ হয় বিপুল টাকা। কিন্তু সেসব প্রকল্প কি ঠিকঠাক বাস্তবায়িত হয়? অনেক সময় কাজ শেষ না করেই উধাও হয়ে যান ঠিকাদার। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এমনকি সেসব ঠিকাদার পরে আবারও কাজ পান। এমন সব কর্মকান্ড চলে আসছে বলেই খুলনার কয়রা উপজেলা সদরের একটি সড়কের আজ করুণ দশা। সড়কটি ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
উপজেলা সদরের মদিনাবাদ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোড় থেকে ৪ নম্বর কয়রা গ্রামের দিকের সড়কটি ২০২১ সালে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। নতুন করে কার্পেটিংয়ের জন্য বরাদ্দ হয় ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের কাজ পায় মেসার্স রাকা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাদের কাজ শেষ করার কথা। স্থানীয় লোকজন জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তা খুঁড়ে ইটের খোয়া বিছিয়ে উধাও হয়ে যায়। বছরের বেশি সময় কাজ বন্ধ থাকায় খোয়াগুলো এখন সরে গিয়ে গর্ত বেরিয়ে পড়েছে। বর্ষায় রাস্তায় পানি জমেছে। যানবাহনগুলো চলছে ঝুঁকি নিয়ে। এই পথ সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী ব্যবহার করে, উপজেলা সদরে যাওয়ার পথও এটি। ফলে মানুষের দুর্ভোগও এখন চরমে।
এলজিইডি বলছে, তারা নতুন করে দরপত্র আহŸান করবে। কারণ, মুঠোফোনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কোটি টাকার কাজ ফেলে যে ঠিকাদার লাপাত্তা হয়ে যান, তাঁকে খোঁজার জন্য ফোন করাকেই যথেষ্ট মনে করছে তারা। প্রশ্ন উঠছে, এলজিইডি কি যথেষ্ট খোঁজখবর করে রাকা এন্টারপ্রাইজকে কাজ দিয়েছিল, নাকি গোড়াতেই গলদ ছিল?
দেশের প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি রীতি দেখা যায়, অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাঝপথে গিয়ে কাজের গতি কমিয়ে দিয়ে বরাদ্দ বাড়ানোর তদবির শুরু করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরির পাশাপাশি বরাদ্দও বাড়ে। ফলে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হয়েও শেষ পর্যন্ত লাভের অঙ্ক হয় বিশাল, মান যেমনই হোক। আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতার যথেষ্ট অভাব আছে, তা অনেক গবেষণাতেই দেখা যায়। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ঠিকাদারদের যোগসাজশে এখানে একটি চক্র গড়ে ওঠে। যার ফল ভোগ করতে হয় জনগণকেই।
এলজিইডির কর্মকর্তারাও জনগণের অংশ। করের টাকা জলে গেলে কিংবা জনগণের ভোগান্তি হলেও কেন কর্মকর্তারা গা করেন না, তা বোধগম্য নয়। আমরা মনে করি, কয়রায় সড়ক নির্মাণকাজের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। অনিয়মে যদি কেউ দোষী হয়ে থাকেন, তাঁর শাস্তিপ্রাপ্য।

্রিন্ট

আরও সংবদ