খুলনা | রবিবার | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

গ্রেফতার আতঙ্কে ঘর ছাড়া নেতা-কর্মীরা : অস্বীকার রামপাল থানা ওসির, তান্ডব বন্ধের আহবান ড. ফরিদের

‘তোদের নেতা তারেক জিয়া যখন দেশে আসবে, আমি তখন লন্ডন থাকবো’

বিশেষ প্রতিনিধি |
০১:২২ এ.এম | ০২ অক্টোবর ২০২৩


বাগেরহাটের রামপালে পুলিশের বিএনপি দমন অভিযান চলছে। এতে বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। পুলিশের এ ধরনের হীন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে নেতা-কর্মীদের উপর অহেতুক দমন-পীড়ন বন্ধের আহবান জানিয়েছেন জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। 
ভুক্তভোগী রামপাল বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা জানান, পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে কোন ধরনের মামলা ও ওয়ারেন্ট ছাড়াই স্থানীয় বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের উপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছেন। রামপালের নেতা-কর্মী ও সমর্থকের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকলেও পুলিশ তাদেরকে মারধরসহ নানা ভাবে হয়রানী ও আটক করছেন। সেই সাথে ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় এলাকার অনেক নেতা-কর্মী এখন তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। 
পুলিশের হয়রানী ও মারপিটের শিকার এবং আটক নেতা-কর্মীদের পরিবার জানান, রামপাল থানা পুলিশ গত ২২ সেপ্টেম্বর কেন্দ্র ঘোষিত বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া করতে দেয়নি বিএনপিকে। এছাড়া ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপি’র মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ সাইদুর রহমানকে ফয়লাহাট বাজার থেকে আটক করে পরের দিন পুরনো একটি মিথ্যা নাশকতার মামলায় আদালতে প্রেরণ করেন। আর ২৬ সেপ্টেম্বর খুলনা বিভাগীয় রোডমার্চ শেষ করে দলীয় নেতা-কর্মীরা বাসে করে যখন ফয়লাহাট বাসস্ট্যান্ড এসে নামেন তখন রামপাল থানার ওসি এস এম আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম তাদেরকে বেধড়ক মারপিট করেন। 
পুলিশের নির্যাতন, হয়রানী ও গ্রেফতারের ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, ওসি এস এম আশরাফুল আলম তাদের নেতা-কর্মীদের মারপিটকালে বলতে থাকেন ‘তোদের নেতা তারেক জিয়া যখন দেশে আসবে আমি তখন লন্ডন থাকবো’ সুতরাং আমি এখানে থাকাকালে তোরা এখানে কোন কর্মসূচি ও আন্দোলন করতে পারবি না’। এছাড়া ওই সময় পুলিশ রামপাল সদর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন আকো, রামপাল সদর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোল­া সাবরাহান হোসেন তানজীদকে আটক করে পুরনো নাশকতার মামলায় আদালতে প্রেরণ করেন। ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে পুলিশ উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক মোস্তফা কামাল পাটোয়ারী হালিম, উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মোল­া তরিকুল ইসলাম শোভন, উজলকুড় ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মিলন আকুঞ্জী, বিএনপি নেতা মঞ্জু পাটোয়ারী, রামপাল সদর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক টিটু মোল­ার বাড়িতে ও রামপাল উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক পিয়ালের অফিসে অভিযান চালিয়ে ভীতি প্রদর্শন করেন। ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে রামপাল থানা যুবদলের সদস্য সচিব বাচ্চু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক কাজী অজিয়ারে বাড়িসহ গৌরম্ভা, গোবিন্দপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালান এবং পরিবারের লোকজনের সাথে খারাপ ব্যবহার করে পুলিশ। ২৯ সেপ্টেম্বর রামপাল থানা ছাত্রদলের আহবায়ক তরিকুল ইসলাম শোভনকে ফয়লা মোড় থেকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৩০ সেপ্টেম্বর রামপাল থানা বিএনপি’র সদস্য মাহতাব আলী মোড়লকে তার ফয়লার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার নামে থানায় কোন মামলাই নেই। এর ফলে রামপালের বিএনপি’র সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা আতঙ্কে বাড়ি ঘরে থাকতে পারছেন না।
বাগেরহাট জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশের এ ধরনের অবৈধ কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ ছাড়াও আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনকে বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের দমন-পীড়ন বন্ধ করতে আহŸান জানান। 
রামপাল থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম আশরাফুল আলম এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপি’র কোন নেতার বাড়িতে পু্িলশ যাচ্ছে না বা কোন হয়রানী করছেন না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই কেবল মাত্র আটক বা গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। 
সূত্র : বাংলার চোখ অনলাইন।

্রিন্ট

আরও সংবদ