খুলনা | মঙ্গলবার | ০৩ জুন ২০২৫ | ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গভীর সমুদ্রবন্দর : অর্থনীতির নতুন দুয়ার উন্মোচিত

|
১২:০৬ এ.এম | ১২ নভেম্বর ২০২৩


আগামী অর্থনীতির নতুন দিগন্ত গভীর সমুদ্রবন্দর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল শনিবার কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেল উদ্বোধন করেছেন। একই সঙ্গে তিনি গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রস্তাবিত দু’টি টার্মিনালের প্রথমটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ টার্মিনালের কাজ ২০২৬ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বছর দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে। চট্টগ্রাম বন্দরের অন্যতম প্রকল্প ‘মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর’ চালু হলে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গভীর সমুদ্রবন্দরের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এখন দৃশ্যমান। পরিসংখ্যান বলছে, গভীর সমুদ্রবন্দর জাতীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে ২-৩ শতাংশ অবদান রাখবে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেলটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সিপিজিসিবিএল এরই মধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের অংশ হিসেবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এই চ্যানেলের মাধ্যমে ১২০টি জাহাজ চলাচল করতে চ্যানেল ও দু’টি জেটি নির্মাণ করেছে। মাতারবাড়ীতে স্থাপিত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কৃত্রিম চ্যানেলটি তৈরি করা হয়। পরবর্তী সময়ে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের লক্ষে চ্যানেলটি অধিগ্রহণ করা হয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুক‚লে অধিগ্রহণ করা চ্যানেলটি দিয়ে ১৬ মিটার থেকে ১৮ মিটার ড্রাফটের (গভীরতা) এবং ২০০ মিটারের বেশি লম্বা জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব। এটিতে সমুদ্রগামী বড় আকারের মাদার ভেসেল ভিড়তে পারবে। গভীরতা বেশি হওয়ায় মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার কনটেইনার বা ১ লাখ টনের বেশি পণ্য নিয়ে জাহাজ ভিড়তে পারবে, যা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে মাইলস্টোন হিসেবে কাজ করবে। এখানে বড় ধরণের ফিডার ভেসেল আসবে। অর্থ ও সময় বাঁচবে। অর্থনীতিতে সুপ্রভাব ফেলবে। 
জানা গেছে, দেশের প্রথম ও একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনের জন্য ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের লক্ষে ৩৫০ মিটার প্রশস্ত ও ১৬ মিটার গভীরতা সম্পন্ন ১৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের উত্তর পাশে ২ হাজার ১৫০ মিটার দীর্ঘ ও দক্ষিণ পাশে ৬৭০ মিটার দীর্ঘ ব্রেক ওয়াটার (ঢেউ নিরোধক বাঁধ) নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। বর্তমানে ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কনটেইনার জেটি ও ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি নির্মাণ এবং কনটেইনার ইয়ার্ডসহ বন্দর সুবিধাদি নির্মাণের কাজ চলমান। ২০২৬ সালের মধ্যে আনুমানিক ০.৬ থেকে ১.১ মিলিয়ন টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনার) এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আনুমানিক ২.২ থেকে ২.৬ মিলিয়ন টিইইউস কনটেইনার কার্গো হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশে প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর হতে যাচ্ছে। সমুদ্রবন্দর ঘিরে এ এলাকায় হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া এ অঞ্চলে শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ