খুলনা | মঙ্গলবার | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১ পৌষ ১৪৩২

আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ

খুমেক হাসপাতালের সামনে দু’টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই শতাধিক দালাল!

বশির হোসেন |
১২:৫৫ এ.এম | ২৯ অগাস্ট ২০২১

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক। রয়েছে ১৮টি প্রতিষ্ঠান, তার মধ্যে হাতে গোনা দুই থেকে তিনটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া কোনটিরই নেই বৈধ কাগজপত্র। সম্পূর্ণ দালাল নির্ভর এসব প্রতিষ্ঠানের দালালরা হাসপাতালের গেট থেকে ডাক্তারের চেম্বার পর্যন্ত। এর মধ্যে শুধু উদয়ন ও সুগন্ধা ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই রয়েছে শতাধিক দালাল। মাঝে মধ্যে অভিযানে গ্রেফতার হলেও জেল ও জরিমানার পর আবারও একই কাজে জড়িয়ে পড়ছে তারা।
অন্যদিকে হাসপাতালে নিয়োগ হওয়া আনসার সদস্যদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠায় বহির্বিভাগসহ বিভিন্ন ভবনে অবাধে বিচরণ করছে দালালরা। বিশেষ করে অশিক্ষিত বা অল্প অশিক্ষিত নারীরাই এ কাজে জড়িত রয়েছে। অন্যদিকে নানা প্ররোচনায় প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে গ্রাম থেকে আসা গরীব রোগী ও তার স্বজনরা।
উলে­খ্য, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রবেশ পথসহ বিভিন্ন ভবনের সামনে ফেস্টুন ও মাইকের মাধ্যমে দিক নির্দেশনা ও সর্তক বার্তা প্রচার করলেও বাস্তবে তা উল্টো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের মেইন গেট থেকে ডাক্তারের চেম্বার পর্যন্ত দুই শতাধিক দালাল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এর বেশির ভাগ দালালই উদয়ন ও সুগন্ধা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের। মাত্র ১শ’ টাকায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানোর নামে সাধারণ রোগীদের ধরতে তিন  স্তরের ফাঁদ পেতে আছে এসব দালালরা। গ্রাম ও মফস্বল এলাকা থেকে আসা সহজ-সরল রোগী ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের টার্গেট করে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে দালালরা।
উদয়ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ পর্যন্ত অন্তত দশবার অভিযান চালিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মালিকসহ ৫০ জনের বেশি দালাল বিভিন্ন সময় আটক ছাড়াও জেল ও জরিমানা হয়েছে। তবে কয়েক দিনের মধ্যে ছাড়া পেয়ে আবারও একই পেশায় এসব দালালরা। তবুও বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা সিভিল সার্জন কার্যালয় টনক নড়ছে না। 
২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ১২ বোতল ফেন্সিডিল ৬টি খালি বোতলসহ ম্যানেজার আব্দুর রহমান ও মালিকের চাচাতো ভাই আব্বাস উদ্দিনকে আটক করে নগর ডিবি পুলিশ। মালিক সৈয়দ আলী পালিয়ে বাচে তখন। কিন্তু এর কয়েক দিন আগে নগর ডিবি পুলিশের এক অভিযানে অবৈধ ও দালাল ভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানের মালিক সৈয়দ আলীসহ ১৩ দালালকে আটক করা হয়। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। বারবার অভিযানের পরও তাদের প্রতারণা থেমে থাকেনি। 
জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানে বসেন ডাঃ হাসিব নামে সর্ব রোগে বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসক। তার ভিজিট একশ টাকা, তবে নানা পরীক্ষার নামে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। 
একই ধরনের সব অভিযোগে অভিযুক্ত ডাক্তারপাড়া গলির সুগন্ধা ডায়াগনস্টিক সেন্টার। শতাধিক দালাল এবং একজন ডাক্তার নিয়ে বসে আছেন মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার জন্য। কোন চিকিৎসকই সেখানে রিপোর্ট করেন না। তাহলে কি রিপোর্ট দেন এখান থেকে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা এখানে রোগী তেমন পাঠান না। সব রোগী গেটের বাইরে থেকে বাগিয়ে নেয়া। 
সূত্রটি আরও জানায়, কোন মান না থাকায় কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই সেখানে পরীক্ষা করতে যায় না। ফলে সেখান থেকে করা সকল পরীক্ষার রিপোর্টই ভুয়া। তারপরেও হাসপাতালের কতিপয় চিকিৎসকের রুমের সামনে থাকা দালালরা নানা কৌশলে সেখানে রোগী পাঠায়। এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ না হলে হাসপাতালের উপর রোগীদের আস্থা উঠে যাবে মানুষ প্রতারিত হবে।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, এসব অবৈধ চিকিৎসক ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। একটি তথ্য পাওয়ার পরই আমরা যাচাই বাছাই করে কার্যক্রম শুরু করে দেই। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অপতৎরতা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। 

্রিন্ট

আরও সংবদ