খুলনা | শুক্রবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

জিআই স্বীকৃতির তালিকায় যোগ করা হোক স্বীকৃতিযোগ্য অন্যান্য পণ্য

|
১২:৩৭ এ.এম | ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪


দেশের আরও তিনটি পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। নতুন জিআই স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এই পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে যশোরের খেজুরের গুড়, রাজশাহীর মিষ্টিপান ও জামালপুরের নকশিকাঁথা। এ নিয়ে দেশীয় জিআই পণ্যের সংখ্যা দাঁড়াল ৩১। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর এসব পণ্যের জিআই স্বীকৃতি দিয়ে জার্নাল প্রকাশ করে। চলতি মাসের ১২ তারিখে রংপুরের হাঁড়িভাঙা আম, মৌলভীবাজারের আগর-আতর ও মুক্তাগাছার মন্ডাকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর কিছুদিন আগে টাঙ্গাইলের শাড়ি, নরসিংদীর অমৃতসাগর কলা ও গোপালগঞ্জের রসগোল­াকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।
নতুন তিনটি পণ্যের জিআই স্বীকৃতি দেওয়ার খবরটি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। এটি প্রয়োজনীয়ও বটে। কেননা কিছুদিন থেকে দেখা যাচ্ছে, উৎসের বিচারে কিংবা বৈশিষ্ট্য ও গুণে একান্তভাবেই যা বাংলাদেশের নিজস্ব সেই পণ্যকে নিজেদের দাবি করে জিআই স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে। স¤প্রতি টাঙ্গাইলের শাড়ি নিয়ে এমনই ঘটনা ঘটেছে। টাঙ্গাইলের শাড়ি তার নামেই পরিচয় বহন করে, স্পষ্টই বোঝা যায় এর উৎস টাঙ্গাইল। সেজন্যই এমন নামকরণ। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ এটিকে নিজেদের দাবি করে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়াস পেলে বিষয়টি আলোচনায় আসে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সচেতন থাকতে হবে শুধু তাই নয়, নিজেদের পণ্যকে জিআই স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগও নিতে হবে। এটি কোনো প্রতিযোগিতার বিষয় নয়। বাংলাদেশ যেমন অন্য দেশের নিজস্ব পণ্যকে নিজের বলে দাবি করে না, তেমনি বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্যকেও অন্য দেশের নিজের বলে দাবি করা সঙ্গত নয়।
জিআই হচ্ছে সাদা কথায় এমন একটি চিহ্ন যা পণ্যের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে সেই পণ্যটির সুনির্দিষ্ট ভৌগোলিক উৎস ও প্রক্রিয়াগত মান এবং ওই উৎসের কারণে বিশেষ খ্যাতির জন্য। এখানে উৎসের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচ্য। যেহেতু পণ্যটির ভৌগোলিক অবস্থানের সঙ্গে সেটির গুণগত মান নির্ভর করে, তাই সেই পণ্য ও সেটির উৎসের মধ্যে সুস্পষ্ট সংযোগ থাকে। মোটামুটিভাবে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয় এরই ভিত্তিতে। আমরা মনে করি, কেবল ৩১টি নয়, বাংলাদেশে আরও অনেক পণ্য আছে যা জিআই স্বীকৃতি পেতে পারে। সেগুলো শনাক্ত করে দ্রুত জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করি।