খুলনা | মঙ্গলবার | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সার আত্মসাতের মামলায় সাবেক এমপিসহ ৫ জন কারাগারে

খবর প্রতিবেদন |
০৩:৪৩ পি.এম | ১৫ মে ২০২৪


সার আত্মসাতের অভিযোগে নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য পোটন ট্রেডার্সের মালিক কামরুল আশরাফ খানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ৭২ হাজার টন সার আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলায় তিনিসহ পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আজ বুধবার (১৫ মে) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

অন্য আসামিরা হলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্সের মহাব্যবস্থাপক মো. শাহাদত হোসেন নিপু ও মো. নাজমুল আলম বাদল, পোটন ট্রেডার্সের উত্তরবঙ্গ প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন এবং খুলনা ও নওয়াপাড়ার প্রতিনিধি মো. আতাউর রহমান।

ঢাকার আদালতের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রসিকিউশন দপ্তরের সহকারী পরিদর্শক আক্কাস আলী কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আসামিরা অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। আজ জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা জামিন বর্ধিত করার আবেদন করলে আদালত ওই আবেদন নামঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে গত বছর ৬ ডিসেম্বর মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে অবকাশকালীন বেঞ্চ তাদেরকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। প্রায় ৫৮২ কোটি টাকার সরকারি সার আত্মসাৎ করার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দশ দিনের মাথায় জামিন পাওয়ায় বিষয়টি বেশ আলোচিত হয়।

গত বছর ২৬ নভেম্বর কামরুল আশরাফ সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত কার্যালয়-১ এ প্রায় ৫৮২ কোটি টাকার সরকারি সার (৭২ হাজার টন) সরবরাহ না করে আত্মসাতের অভিযোগে সংস্থাটির উপপরিচালক মো. রফিকুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০২১-২২ অর্থ বছরের বিদেশ হতে ইউরিয়া সার সরবরাহের জন্য আমদানি করলেও চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে চুক্তিকৃত বাফার গুদামে না দিয়ে ৫৮১ কোটি ৫৮ লাখ ৯ হাজার ৬৪ টাকার ৭১ হাজার ৮০১ টন ৩১ কেজি সার আত্মসাৎ করেছেন। কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্স ৫০ দিনের মধ্যে সার গুদামে পৌঁছে দেওয়া কথা ছিল। সেটা না করে সার ট্রানজিটে রয়েছে বলে বিসিআইসিকে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, দুদক অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছে ২০২১-২২ অর্থবছরে জিটুজি চুক্তির আওতায় মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ সৌদি আরব, দুবাই ও কাতার থেকে আমদানি করা ইউরিয়া সার পরিবহনের জন্য বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের সঙ্গে স্থানীয় প্রতিনিধি মেসার্স পোটন ট্রেডার্স এবং প্রিন্সিপাল ড্রাই বাঙ্ক শিপিং (প্রা.) লিমিটেডের মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৫.৫৩০ টন ইউরিয়া সার বিভিন্ন গুদামে সরবরাহ দেওয়ার জন্য মোট ১৩টি স্থানীয় পরিবহন চুক্তি সই হয়। যার মধ্যে ৩৭টি চুক্তির অধীনে আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্স ২ লাখ ১৫ হাজার ৩৭৭.৫৬৬ টন ইউরিয়া সার বুঝে নিয়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৬.২৫৮ টন ইউরিয়া সার সরবরাহ করা হলেও ৭১ হাজার ৮০১ টাকা ৩১ টন ইউরিয়া সার সরবরাহ না করে আত্মসাৎ করেন। ট্রানজিটে থাকা অসরবরাহ করা ইউরিয়া সার দ্রুত সরবরাহ দেওয়ার জন্য মেসার্স পোটন ট্রেডার্সকে ধারাবাহিকভাবে পত্র এবং তাগিদ পত্রসহ মোট ৪৩টি পত্র দেওয়া হয়েছিল। বিসিআইসি গঠন করা তদন্ত কমিটিতেও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। ২০২১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুলাইয়ের ওই আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।