খুলনা | বুধবার | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৭ কার্তিক ১৪৩১

ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথ : নিরাপত্তা বাড়াতে হবে

|
১২:১২ এ.এম | ০৬ জুন ২০২৪


সড়ক দুর্ঘটনার মতোই প্রতিনিয়ত অনেক নৌ-দুর্ঘটনাও ঘটছে। বড় কিছু দুর্ঘটনার পর এক বা একাধিক তদন্ত কমিটি হয়। অনেক সুপারিশ করা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। সে কারণেই বাংলাদেশে এখনো ৮৫ শতাংশ নৌযান রয়ে গেছে নিবন্ধনের বাইরে। এসব নৌযান কারা চালায়, তা দেখা হয় না। নৌযানগুলোর বেশির ভাগেরই ফিটনেস নেই। কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। অতিরিক্ত মালপত্র বা যাত্রী পরিবহন করা হয়। প্রতিযোগিতা করে চালাতে গিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অর্থাৎ নৌপথে শৃঙ্খলা বলে কোনো কিছুই নেই এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগও দৃশ্যমান নয়। এমন পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ‘নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহ ২০২৪’।
এটি কি শুধুই আনুষ্ঠানিকতা হবে, নাকি নৌ-নিরাপত্তা উন্নয়নে কিছু অবদান রাখবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। কয়েক বছরে দেশে বেশ কিছু নৌ-দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে উলে­খযোগ্য ছিল ২০২০ সালের ২৯ জুন বুড়িগঙ্গা নদীতে অর্ধশত যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবি। এতে প্রাণ হারায় ৩৪ জন। ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে আরেকটি লঞ্চডুবি। এখানে প্রাণ হারায় ৩৪ জন। ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে একটি লঞ্চে আগুন ধরে যায়। এ ঘটনায়ও ৪০ যাত্রী প্রাণ হারায়। এর আগে ও পরে এ রকম ঘটনা আরো অনেক ঘটেছে। অনেক তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো কি বাস্তবায়িত হয়েছে?
বুড়িগঙ্গা নদীতে ২০২০ সালে দুই লঞ্চের সংঘর্ষের পর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় যে তদন্ত কমিটি করেছিল, সেই কমিটি ২০ দফা সুপারিশ করেছিল। এর মধ্যে ছিল, ‘সাংকেন ডেক’ লঞ্চ পর্যায়ক্রমে উঠিয়ে দিতে হবে, প্রশস্ত ও ব্যস্ত নদীতে যথাযথ সনদধারী মাস্টার ও চালক ছাড়া নৌযান পরিচালনা করা যাবে না, বিআইডাব্লিউটিএ-কে কার্যকর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করতে হবে, নৌযানের ফিটনেস ও নৌ-কর্মীদের দক্ষতার সনদ প্রদান যথাযথ হতে হবে ইত্যাদি। কিন্তু সেসব সুপারিশ কতটুকু বাস্তবায়ন করা হয়েছে?
দেশের দক্ষিণাঞ্চল এবং হাওরাঞ্চলে এখনো নৌযানই মানুষের চলাচলের প্রধান বাহন। শুধু যাত্রী পরিবহন নয়, বালু, পাথর, কয়লা ও অন্যান্য মালপত্র পরিবহনেও নৌযান ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ট্রলার নামে যেসব নৌযান চলে, সেগুলোতে কাঠামোগত সমস্যাও রয়েছে। স্থানীয়ভাবে তৈরি করা এসব নৌযানে কোনো রকমে একটি ইঞ্জিন বসিয়ে দিলেই হলো। নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। ছোট লঞ্চসহ অনেক নৌযানের বয়স চার দশক পেরিয়ে গেলেও রং করে দিব্যি চালানো হচ্ছে। এমনই আরো অনেক অব্যবস্থা রয়েছে নৌ-পরিবহন ক্ষেত্রে।