খুলনা | বুধবার | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৭ কার্তিক ১৪৩১

৮ দিন বন্ধ থাকবে আমদানি

ঈদে আবারও কাঁচা মরিচের দাম নিয়ে দুশ্চিন্তা

খবর প্রতিবেদন |
১২:৫৬ এ.এম | ১৫ জুন ২০২৪


পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে টানা আট দিন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। গত বছর একই সময়ে আমদানি বন্ধ থাকার সুযোগে দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের কেজি ৩০০ টাকায় উঠেছিল। এবারও আমদানি বন্ধের খবরে দাম বাড়তে শুরু করেছে। সামনে আরও বাড়তে পারে এবং ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা। 
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে অন্যান্য দিনের মতো পেঁয়াজ, আলু ও কাঁচা মরিচ আমদানি অব্যাহত আছে। ১৪ জুন পর্যন্ত আমদানি হবে। গত শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩৯৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ, ৩০৩ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ, ২১০ মেট্রিক টন আলু আমদানি হয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ১১ ট্রাকে ১০১ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ, দুই ট্রাকে ৩৮ মেট্রিক টন আলু আমদানি হয়েছে। তবে এদিন কোনও পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। এর আগের দিন বুধবার ১৭৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
বন্দরে  শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ৬৮-৭০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার ৬৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মঙ্গলবার কাঁচা মরিচের কেজি ৯০ টাকায় বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার ১২৫-১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আলুর কেজি সোমবার ও মঙ্গলবার ৪১ টাকায় বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। 
বৃহস্পতিবার বিকেলে হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। আমদানিকৃতটা বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকায়। তবে আমদানিকৃত কাঁচা মরিচ বাজারে না থাকায় দেশিটা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। আমদানিকৃত আলু বিক্রি হতে দেখা যায়নি। তবে দেশি কার্ডিনাল আলু ৫০ আর গুটি জাতেরটা ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের কাঁচা মরিচ আমদানিকারক আনোয়ার হোসেন বলেন, তীব্র গরমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কাঁচা মরিচের গাছ ও ফুল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এতে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমায় দাম বাড়তে শুরু করে। এ অবস্থায় দাম নিয়ন্ত্রণে ভারত থেকে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। অনুমতি পেয়ে গত ২৩ মে থেকে আমদানি শুরু হয়। ফলে বাজারে দাম কমে যায়। কিছুদিন ধরেই ১০০ টাকার মধ্যেই ছিল। কিন্তু আগামী ১৪ জুন থেকে আট দিন হিলি দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকবে। একই ভাবে দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়েও বন্ধ থাকবে। এ খবরে বাজারে পণ্যটির চাহিদা আগের তুলনায় বেড়েছে। আড়তদাররা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাঁচা মরিচের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে সররবাহ স্বাভাবিক রাখতে আমদানির পরিমাণ বাড়িয়েছেন আমদানিকারকরা। আমদানি বাড়ায় ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। যে মরিচ এক সপ্তাহ আগে ভারত থেকে কেনাসহ সবকিছু মিলিয়ে ৮০-৮৫ টাকার মতো দাম পড়তো। আমরা ৯০ টাকায় বিক্রি করতাম। এখন কেনা, পরিবহন ও শ্রমিক খরচসহ দাম পড়ছে ১১৫ টাকার মতো। আমরা ১২০ টাকায় বিক্রি করছি। বাজারে সর্বোচ্চ ১৩০ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু অনেকে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরও বেশি দামে বিক্রি করছেন।
আট দিন আমদানি বন্ধ থাকলে বাজারে কতটা প্রভাব পড়তে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে এই আমদানিকারক বলেন, এই সময়ে বাজারে সরবরাহ কমবে। দামও বাড়বে। পচনশীল পণ্য হওয়ায় এটি বেশি দিন ধরে রাখা যায় না। বর্তমানে বাজারে ১২০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আমদানি বন্ধের পরদিন থেকে দাম আরও বাড়তে পারে। যা সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে। আমদানি শুরু হলে দাম আবার কমে যাবে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্র“পের সিনিয়র সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম আলু ও পেঁয়াজের বড় আমদানিকারক। তিনি বলেন, আলু-পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত আছে। তবে বাড়তি দামের কারণে পড়তা না পড়ায় বাজারে তেমন একটা চাহিদা না থাকায় পণ্য দুটির আমদানি তেমন একটা হচ্ছে না। বন্দর দিয়ে আলু সীমিত পরিমাণে আসছে। অর্থাৎ দিনে এক থেকে দুই ট্রাক আমদানি হচ্ছে।
বন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৪ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত আট দিন হিলি দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছেন আমদানি-রপ্তানিকারকরা। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত বন্দরের ভেতরের সব কার্যক্রম চালু থাকবে। এ সময়ে আমদানিকারকরা কাস্টমস প্রক্রিয়া শেষে বন্দরে থাকা পণ্য খালাস করে নিতে পারবেন।