খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

জরুরি চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করেন পরিচালক নিজেই

ঈদের ছুটির পর খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসার হ-য-ব-র-ল অবস্থা

বশির হোসেন |
০১:০৭ এ.এম | ২০ জুন ২০২৪


গত মঙ্গলবার রাতে একের পর এক রোগী আসে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। কেউ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালের বারান্দায় কাতরাচ্ছেন আবার কেউ এসেছেন অন্যান্য রোগ নিয়ে। জরুরি বিভাগের সামনে রোগীর লম্বা সিরিয়াল থাকলেও ভেতরে নেই চিকিৎসক। ওয়ার্ড বয় আর আয়া রোগীদের কোন বাজ বিচার ছাড়াই ভর্তি করতে থাকেন। ডাক্তার না পেয়ে যখন ক্ষুব্ধ রোগীরা। তখন হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ গৌতম কুমার পাল নিজেই এলেন জরুরি চিকিৎসক হিসাবে। নিজেই টানা দুই ঘন্টা সেবা দিলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক তখনও আসেনি জরুরি বিভাগে। পরিচালকের পক্ষ থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসককে ফোন করা হলে তিনি (দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক) জানান রোস্ট্রারে তার ডিউটি দেয়া হয়েছে, তা জানেনই না। এমন হযবরল অবস্থা ঈদের ছুটিতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে মঙ্গলবার ইভিনিং ডিউটি ছিলো ডাঃ সরুপ চন্দ্র পোদ্দার নামে এক চিকিৎসকের। নির্ধারিত সময় দায়িত্ব পালন শেষে চিকিৎসক ইনচার্জ ডাঃ আশরাফকে ফোন করে জানান নিজের ডিউটি শেষ, এখন কি করবেন জানতে চান। 
ডাঃ আশরাফ বলেন, আপনি চলে যান আমি দেখতেছি। এ অবস্থার মধ্যে পরবর্তী কর্তব্যরত চিকিৎসক না আসলে প্রায় ঘন্টাখানেক চিকিৎসক শুন্য থাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগ। একের পর এক রোগী জমতে থাকে হাসপাতালের সামনে। তখনই পরিচালক ডাঃ গৌতম কুমার পাল এসে এ অবস্থা দেখে নিজেই শুরু করেন চিকিৎসা। সাথে সাথে ফোন দিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে আসতে বললে তিনি বলেন তার ডিউটি তিনি জানেন না।
হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ গৌতম কুমার পাল বলেন ঈদের রাতে কিছুক্ষণ চিকিৎসক শূন্য ছিলো। আমি বাড়ি থেকে এসে নিয়মিত খোঁজ নেওয়ার জন্য জরুরি বিভাগে যাই। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় নিজেই টানা দুই ঘন্টা রোগীকে সেবা দেই। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রিত হলে চিকিৎসক আসায় আমি চলে আসি। আজ (বুধবার) কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে তিনজন চিকিৎসককে। তাদের জবাব সন্তোষজনক না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে হাসপাতালে বুধবার কর্মদিবস থাকলেও অব্যবস্থাপনার কারণে নিয়মিত অপারেশন হয়নি। তিন থেকে চার মাস পরে সিরিয়াল পাওয়া রোগীদের কোন অপারেশন হয়নি। বৃষ্টির পানিতে হাসপাতালের ওটির ভেতরের মালামাল ভিজে গেছে, পানি জমেছে অপারেশন থিয়েটারের মেঝেতে। জেনারেল সার্জারি, নিউরো সার্জারি এবং ইউরোলোজি বিভাগের অপারেশন বন্ধ রয়েছে।