খুলনা | বুধবার | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৭ কার্তিক ১৪৩১

অর্ধশতাধিক গুলি, খেলনা পিস্তল ও শর্টগান জব্দ : বিভিন্ন স্থানে অভিযান

ডুমুরিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান রবি হত্যাায় আ’লীগ নেতা তারা বিশ্বাস আটক!

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০৩:৫৭ পি.এম | ০৮ জুলাই ২০২৪


জেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে জেলা আ’লীগের সদস্য আজগর বিশ্বাস তারাকে আটকের গুঞ্জন ‘টক অব দ্যা খুলনা’। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর রায়েরমহল মোস্তফার মোড় এলাকার বিশ্বাস প্রোপার্টিজের কার্যালয় থেকে তাকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ আটক করে। আটকের পর তিন ঘন্টাব্যাপী তল­াশী অভিযানে তারা বিশ্বাসের মালিকানাধীন বিশ্বাস প্রোপার্টিজের কার্যালয় থেকে একটি শর্টগান, একটি খেলনা পিস্তল, একটি রিভলবার সদৃশ লাইটার, ৫৭ রাউন্ড কার্তজ ও ৯ রাউন্ড কার্তুজের খোসা জব্দ করা হয়। 
পুলিশের সূত্র জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান রবি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে সোমবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর রায়ের মহলের মোস্তফার মোড় এলাকায় বিশ্বাস প্রোপার্টিজের অফিসে অভিযান চালায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় জেলা আ’লীগের সদস্য আজগর আলী বিশ্বাস ওরফে তারা বিশ্বাসকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করে। আটকের পর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়। তবে সোমবার রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
তবে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ দীর্ঘ তিন ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বিশ্বাস প্রোপার্টিজের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে একটি শর্টগান, একটি খেলনা পিস্তল, একটি রিভলবার সদৃশ লাইটার, ৫৭ রাউন্ড কার্তজ ও ৯ রাউন্ড কার্তুজের খোসা জব্দ করে।
তারা বিশ্বাসের ছোট ভাই তারেক বিশ্বাস জানান, দুপুর ১২টার দিকে গাড়িতে করে কয়েকজন লোক আমাদের অফিসে আসে। ওই লোকেরা আমার ভাই তারা বিশ্বাসকে তাদের গাড়িতে করে নিয়ে যায়। তারা নিজেদেরকে জেলা ডিবি পুলিশ বলে পরিচয় দেয়।
তবে ডুমুরিয়া থানার ওসি সুকান্ত সাহা তাৎক্ষণিক ভাবে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, পরে সবকিছু জানানো হবে।
এর আগে গত রোববার দিবাগত রাতে নিহতের স্ত্রী শায়লা ইরিন বাদী হয়ে ডুমুরিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে মামলায় কতজনকে আসামি করা হয়েছে এবং হত্যার কারণ কী উলে­খ করা হয়েছে তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন ডুমুরিয়া থানার ওসি সুকান্ত সাহা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডুমুরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) শাহীনুর রহমান।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান বলেন, হত্যাকান্ডে ক্লু সম্পর্কিত কোনো তথ্য আমার জানা নেই। তবে তথ্য উদ্ঘাটনের জোর চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে পরে জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাত পৌঁনে ১০টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ওয়াপদার মোড় নামকস্থানে দুর্বৃত্তদের গুলিতে শরাফপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ রবিউল ইসলাম রবি (৪৬) নিহত হন। ওইদিন তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। সন্ধ্যায় তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা সদরের শহিদ জোবায়েদ আলী মিলনায়তনে উপজেলা আ’লীগের বর্ধিত সভা শেষে মোটরসাইকেলে একা খুলনার নিরালা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কের গুটুদিয়া ওয়াপদার মোড় নামক স্থানে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে পেছন দিক থেকে বেশ কয়েকটি গুলি করে পালিয়ে যায়। এ সময় তার পিঠে পাঁচটি গুলি বিদ্ধ হয়ে রাস্তার ওপর লুটিয়ে পড়েন। গুলির শব্দ শুনে পরে স্থানীয় লোকজন তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রাত সোয়া ১০টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।