সাতক্ষীরার আশাশুনিতে বিক্ষুব্ধ জনতা কুপিয়ে প্রতাপনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শেখ জাকির হোসেনকে হত্যা করেছে। এর আগে জাকির হোসেনের ছোঁড়া গুলিতে তিনজন নিহত ও কমপক্ষে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়। সোমবার বিকেল পৌনে পাঁচটা থেকে রাত পৌনে ৮টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।
নিহত শেখ জাকির হোসেন (৫৩) আশাশুনি উপজেলার নাকনা গ্রামের মৃত আমিনুর রহমানের ছেলে। জাকির হোসেন আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও প্রতাপনগর ইউনিয়নের দুই বারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান। 
গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত অপর তিনজন হলেন আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাউনিয়া গ্রামের ওয়ারেজ আলী মোড়লের ছেলে হাফেজ আনাজ বিল­াহ (২১) ও একই ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের নুর হাকিম ঘোরামীর ছেলে আদম আলী ও হিজলিয়া গ্রামের ছাত্তার সরদারের ছেলে আলমগীর হোসেন (১৬)। আহতদের কয়েকজনকে সাতক্ষীরা সদর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা শহরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, ট্রাফিক অফিসসহ বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর শোনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা এসব ঘটনা ঘটায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জেলা কারাগারে প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন সেলের তালা ভাঙচুর করে আসামিদের বের করে নিয়ে গেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় জেলা কারাগার এলাকায় বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে, সোমবার বিকেলে বিক্ষুব্ধ জনগণ প্রথমে শহরের পাকা পোলের মোড় সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে কমপ্লেক্সসহ বেশ কয়েকটি দোকান আগুনে ভস্মীভূত হয়। পরে বিক্ষুব্ধ জনগণ সুলতানপুরে সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম সৈয়দ কামাল বখত ছাকীর বাসভবন ভাঙচুর করে। এরপর জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তালার আওয়ামী লীগ নেতা বিশ্বজিৎ সাধু ও তালা উপজেলা চেয়ারম্যান সনদ ঘোষের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং পাটকেলঘাটার ব্যবসায়ী আব্দুর রব পলাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট করেছে। বিক্ষুব্ধ জনতা সাতক্ষীরা পুলিশের  ট্রাফিক অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর সদর থানা গেটসহ বাইরের স্থাপনায় ভাঙচুর করে। এ ছাড়া, জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবু আহমেদ ও কলারোয়ায় সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ফিরোজ আহমেদ স্বপনের বাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জনগণ।