খুলনা | বুধবার | ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১

এনায়েতপুর থানার ১৩ পুলিশ সদস্যের নাম পদবি, যেভাবে হত্যা করা হয় তাঁদের

খবর প্রতিবেদন |
০২:১০ এ.এম | ০৬ অগাস্ট ২০২৪


সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় নিহত ১৩ পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আটজনের লাশ পাশের মসজিদের সামনে স্তূপাকারে রাখা হয়েছিল। তিনজনের লাশ পাওয়া  গেছে পাশের পুকুরে। একজনের লাশ পড়ে ছিল পাশের রাস্তায়। অন্য একজনের লাশ গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন সরকার পতনের আন্দোলনকারীরা। 
সরকার পতনের আন্দোলনকারীরা যে হামলা চালিয়েছেন তাতে রক্ষা পাননি থানাটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাকও। থানা থেকে বেরিয়ে এলে হামলাকারীরা তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। নিহত অন্য ১২ জনের মধ্যে ৪ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), একজন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ও সাতজন কনস্টেবল রয়েছেন। 
সোমবার সকালে নাম-পদবিসহ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এ্যান্ড অপস) জিয়াউর রহমান। রোববার রাতে নিহত পুলিশ সদস্যদের লাশ উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। 
নিহত পুলিশ সদস্যরা হলেন এসআই আনিসুর রহমান,  তৌহেদুজ্জামান, প্রণবেশ ও রহিত; এএসআই ওবায়দুর রহমান এবং কনস্টেবল আবু তালেব, হাফিজুর রহমান, রবিউল ইসলাম, হানিফ, আরিফুল ইসলাম, শাহীন ও রিয়াজুল ইসলাম। 
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘থানায় ৩৬ জনের মতো পুলিশ সদস্য ছিলেন। বাকিরা কোনো রকমে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন। তখনো বেশির ভাগই মারধরে গুরুতর আহত হয়েছেন।’ 
এনায়েতপুর থানার পাশেই স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর বাড়ি। তিনি রোববার দুপুরের এই হামলার প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি জানান, রোববার সকালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। দুপুর ১টার দিকে তারা এনায়েতপুর থানার সামনে আসেন এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ তখন রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে। আন্দোলনকারীরা তখন থানার সীমানা প্রাচীরের ওপরের কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। এরপর তাঁরা থানার বিভিন্ন স্থানে আগুন ধরিয়ে দেন। প্রাণরক্ষায় তখন পুলিশ সদস্যরা থানা থেকে বের হয়ে এলে তাঁদের ধরে ধরে পেটানো হয়। পিটুনিতে একে একে যখন পুলিশ সদস্যরা মারা যান, তখন লাশ স্তূপাকারে রাখা হয়। 
এছাড়া পুকুরপাড়ে ধরে যে তিনজনকে মারধর করা হয়, মৃত্যুর পর তাঁদের লাশ পুকুরেই ফেলা হয়। থানার পাশে অন্য একজনের লাশ গলায় ফাঁস দিয়ে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। আন্দোলনকারীরা রাস্তার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেওয়ার কারণে অতিরিক্ত পুলিশ এ থানায় পৌঁছাতে পারেনি। এমনকি সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীকেও থানায় পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়। 
পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) বিজয় কুমার বসাক বলেন, ‘এনায়েতপুর থানার আর কেউ নিখোঁজ নেই। কয়েকজন আহত আছেন, তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বর্বর এই ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’